ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

শাম্মীর ১৬০০ টাকার ব্যবসার মূলধন এখন ৮ লাখ 

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১
শাম্মীর ১৬০০ টাকার ব্যবসার মূলধন এখন ৮ লাখ  শাম্মী নাজ

শাম্মী নাজ, একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছোট।

 রাজশাহীর মেয়ে শাম্মী সিএসই তে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেন।  
ডিপ্লোমা শেষ করার পর বাংলাদেশ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে তিন বছর কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেন। তারপর ব্র্যাকের আইটি সেক্টরে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেন। কিন্তু সন্তান জন্মের পর, তার যত্নের কথা চিন্তা করে একরকম বাধ্য হয়েই চাকরিটা ছাড়তে হয় তাকে। একজন মানুষের কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকলে তার জন্য চাকরি ছাড়াটা খুব সহজ কথা নয়।  

চাকরি ছাড়ার ৫ মাস পর শাম্মীর মনে হতে থাকে শুধু শুধু বসে না থেকে তার কিছু একটা করা দরকার। যেহেতু শাম্মী নিজের হাতে কাজ করা ড্রেস পরে অফিস করতেন এবং সেসব পোশাক সম্পর্কে তার ভালো ধারণা আছে তাই শাম্মীর সহকর্মীরাও তাকে খুব উৎসাহ দিতেন থাকে হাতের কাজের ড্রেস নিয়ে কাজ শুরু করার জন্য।  
কলিগদের সেই উৎসাহ, সামান্য অভিজ্ঞতা আর মাত্র ১৬০০ টাকা পুঁজি নিয়ে ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই  থেকে শুরু হয় শাম্মীর উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা। তখন ফেসবুক ভিত্তিক একটি বিজনেস পেজ দিয়ে শুরু করেন শাম্মীতবে বর্তমানে তিনি দু’টি পেজ এর মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। শাম্মীর উদ্যোগের নাম সাতরং এবং ব্ল্যাকডট।  


শাম্মীর উদ্যোগ শুরু হয় হাতের কাজের পোশাক,বেডশিট দিয়ে পরবর্তীতে হাতের কাজের পাশাপাশি ব্লক,বাটিকেরও ড্রেস নিয়েও কাজ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ড্রেসের পাশাপাশি হলুদ, মরিচ, ধনিয়া, জিরা গুঁড়া,  সরিষার তেল, নারিকেল তেল, কালোজিরার তেল, মধু, লাল গমের আটা, চালের গুঁড়া, মাসকালাই আটা ও ফ্রোজেন কালাইরুটি, রোল, সিঙ্গারা, নাগেটসসহ বিভিন্ন মসলা এবং হোমমেড খাবার নিয়ে কাজ করছেন।

শাম্মী মনে করেন, একজন উদ্যোক্তার বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তার প্রতিটা দিনই অনেক রকম চ্যালেঞ্জের সঙ্গে পার করতে হয়, একজন নারী বিজনেস করতে পারে সমাজের চোখে এটাই যেন অনেক বড় একটা অপরাধ, আশেপাশের মানুষগুলোর বাঁকা দৃষ্টি বেশিরভাগ নারী উদ্যোক্তাতেই দেখতে হয় সঙ্গে থাকে নানারকম অপ্রীতিকর উক্তি।  

ব্যবসা শুরুর সময় থেকে শাম্মীও একইভাবে সমাজের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন। তবে কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারেনি। বরং সমালোচকদের কটুক্তিই যেন তাকে আরও বেশি সাহস দিয়েছে। তাই তো আজ শাম্মী একজন সফল উদ্যোক্তা।  

ভালোমানের পণ্যের খোঁজ, কর্মী খোঁজা,তাদেরকে হাতে ধরে শেখানো সবই  চ্যালেঞ্জ ছিল শাম্মীর জন্য।   শাম্মী পোশাকের জন্য তাঁতে ঘুরে ঘুরে কাপড় সংগ্রহ করে নিজেই নকশা করে কাপড় তৈরি করেন। আর মশলাও কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে নিজে হাতে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে প্যাকেট করে গ্রাহককে পৌঁছে দেন। খাবারের মান ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সব সময়ই ভালোমানের পণ্য সংগ্রহ করেন তিনি।  
শাম্মী তার উদ্যোগ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা তৈরি হবে তার উদ্যোগের মাধ্যমে এবং নিজস্ব একটা ব্র্যান্ড তৈরি করার। অন্য কারো পরিচয়ে নয় বরং  নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে চান তিনি। এরই মধ্যে শাম্মী তার ব্যবসার লাভের টাকা দিয়ে রাজশাহী শহরে এক টুকরো জায়গা কিনেছেন। এছাড়া তার বুটিক এ কাজ করেন এমন কয়েক জন কর্মী নিয়ে একটা দোকান দিয়েছেন। এভাবেই এগিয়ে শাম্মী চলেছেন তার স্বপ্ন পূরণের পথে।

তাই আজ শাম্মীর ১৬০০ টাকার সেই ব্যবসার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৮ লক্ষ টাকায়।  


বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১ 
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।