ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মার্কিন নাগরিক ফারাইজি হত্যা: মামলার তদন্তে পিবিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২
মার্কিন নাগরিক ফারাইজি হত্যা: মামলার তদন্তে পিবিআই

ঢাকা: রাজধানীতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক সাফায়েত মাহবুব ফারাইজিকে হত্যার অভিযোগে বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তয়াছের জাহানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।  

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রকিব তদন্ত করে আগামী ৯ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।

 

বুধবার দুপুরে ফারাইজির মা শামিমুন নাহার এ আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে মামলার আবেদনটি আদেশের জন্য রাখেন। সন্ধ্যায় আদালত পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।  

মামলায় আসামি করা হয়েছে ভাটারা থানার উপপরিদর্শক মশিউর, ভিকটিমের বান্ধবী সুজানা তাবাসসুম সালাম, আফতাব, শাখাওয়াত, আসওয়াদ, বাড়ির মালিক কামরুল হক ও কেয়ারটেকার রিপন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সারোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদীর ছেলে গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন। ফারাইজি দেশে আসার পর তার মায়ের সঙ্গে সুজানা, আফতাব, শাখাওয়াত ও আসওয়াদকে পরিচয় করিয়ে দেন। মাঝেমধ্যে সুজানা ফারাইজির সঙ্গে দেখা করতে বাসায় আসতেন। তারা বাসায় এসে নেশা করতেন। বিষয়টি জেনে শামিমুন নাহার সুজানাকে ফারাইজির সঙ্গে দেখা করতে ও বাসায় আসতে নিষেধ করেন।  

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বাসায় এসে মা-ছেলেকে গালিগালাজ ও আঘাত করেন। পরে ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ এসে বিষয়টা নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মীমাংসা করে দেয়।  

এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাদী শামিমুন নাহার এবং তার ছেলে গুলশানে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে আসামিরা তাদের ওপর আক্রমণ করে আহত করেন। তারা ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসি তয়াছের জাহান এবং এসআই মশিউর ভুক্তভোগীর বাসায় সুজানাকে নিয়ে যান। তারা সুজানার সঙ্গে ফারাইজিকে যোগাযোগ ও সম্পর্ক রাখতে বলেন। অন্যথায় ফারাইজি দেশে থাকতে পারবে না বলে হুমকি দেন।

এরপর ভুক্তভোগী গত ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের অনুষ্ঠান পালন করতে বাসা থেকে বের হন। রাত পৌনে ১২টায় বাসায় ফেরেন। এসময় তার সঙ্গে সুজানা, আফতাব, শাখাওয়াত ও আসওয়াদ ছিলেন। এতে বাদী রাগান্বিত হয়ে তাদের বাসা থেকে বের হতে বলেন। তখন সুজানা ভুক্তভোগীকে বলেন তাদের বাসায় পৌঁছে দিতে। ভুক্তভোগী তার অনুরোধে আসামিদের সঙ্গে যান। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ফারাইজি আর বাসায় ফেরেননি।  

ফারাইজির কোনো হদিস না পেয়ে বাদী ভাটারা থানায় যান। এসি তয়াছের জাহনের কাছে সুজানার ঠিকানা জানতে চান। তখন এসি জানান, আসামির বিষয় ও ঠিকানা তিনি জানেন না। এরপর ২৭ ডিসেম্বর বাদীর কাছে ভাটারা থানা থেকে ফোন আসে, তার ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি ময়নাতদন্ত শেষে বাদীকে তার ছেলের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

এরপর গত ২ জানুয়ারি বাদী যেখান থেকে ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ওই বাসায় যান। কিন্তু বাড়ির মালিক কামরুল হক (বাড়ির মালিক) ও কেয়ারটেকার রিপন তাকে বাসায় ঢুকতে না দিয়ে হত্যার হুমকি দেন। পরদিন ৩ জানুয়ারি বাদী ভাটারা থানায় মামলা করতে গেলে এসি তয়াছের জাহান ও এসআই মশিউর মামলা না নেওয়ার হুমকি দেন।

বাদীর অভিযোগ, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে হত্যা করেছেন। পরিকল্পিতভাবে হত্যার আলামত নষ্ট করে এবং তাকে হুমকি দিয়ে আসছেন। ৪৫ দিনেও থানা মামলা না নেওয়ায় মার্কিন দূতাবাসের পরামর্শে আদালতে মামলা করেন বলে জানান বাদী।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
কেআই/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।