ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

এমসির ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: ৮ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

সিনিয়র করেসপন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২০
এমসির ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: ৮ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

সিলেট: সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী-৩) সাইদুর রহমানের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য এ অভিযোগপত্র জমা দেন।

পাশাপাশি গণধর্ষণ কান্ডের পর এমসি ছাত্রবাস থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র মামলায় সাইফুর ও রনির বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগপত্র (নম্বর ১৯০) জমা দিয়েছেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অঞ্জন সিংহ।

সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) বি এম আশরাফ উল্যাহ তাহের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, গণধর্ষণ মামলায় ১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এরমধ্যে ছয়জনের ডিএনএ টেস্টে মিল পাওয়া গেছে।

এদিকে, অভিযোগপত্র দাখিলের পর দুপুর ১২টার দিকে অভিযোগপত্র দাখিল নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোহেল রেজা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা ছয়জনের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণ পেয়েছি। তারা হলেন- সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মেজবাউল ইসলাম রাজন। অপর দুজন রবিউল হাসান ও মাসুদুর রহমান মাহফুজ ধর্ষণকাণ্ডে সহায়তায় লিপ্ত ছিল।

পুলিশের প্রেসনোটে বলা হয়, গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে মাইদুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে সিলেট এমসি কলেজের হোস্টেলে ৭নম্বর ব্লকের ৫তলা ভবনের সামনে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে মারধর করে। এক পর্যায়ে মাইদুল ইসলামের স্ত্রীকে জোরপূর্ক গণধর্ষণ করে এবং তার স্ত্রীর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, কানের দুল, নগদ ২ হাজার টাকা নেয়। পরদিন মাইদুলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এজাহার নামীয় ৬ আসামির বিরুদ্ধে শাহপরান (র.) থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা (নং-২১(৯)২০২০) দায়ের করা হয়। ঘটনার রাতে শাহপরান থানা পুলিশ ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে একটি পাইপ গান, চারটি রাম দা, ২টি চাকু উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সাইফুরের বিরুদ্ধে শাহপরান থানায় পৃথক অস্ত্র মামলা (নং-২২(৯)২০২০) দায়ের করা হয়। এ মামলারও আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গণধর্ষণ মামলার আসামি ছয়জন ছিল। তদন্তকালে আরও দুজন জড়িত থাকার সাক্ষ্য পাওয়া যায়। ফলে মামলায় ৮ আসামিকে গ্রেফতার দেখানো হয়। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

তাছাড়া তদন্তে ক্রাইমসিন থেকে এভিডেন্সসহ সব সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সিআইডির ল্যাবে জব্দ করা আলামত পরীক্ষান্তে আসামিদের ডিএনএ প্রোফাইলের সঙ্গে সাদৃশ্যতা পাওয়া যায়। তদন্ত শেষে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে শাহপরান (র.) থানার (ওসি-তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য রাজন ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। একই ঘটনায় মামলার বাদীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে তাকে মারধর ও তার স্ত্রীর কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কার এবং টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অপরাধে ৮ আসামির বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী। অভিযুক্ত এসব কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
এনইউ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।