ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘মেজর আবদুল গণি কৃতী সন্তান হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৮
‘মেজর আবদুল গণি কৃতী সন্তান হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন’ বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মেজর আবদুল গণির উদ্যোগে ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের যাত্রা শুরু হয়। তিনি সারাদেশ ভ্রমণ করে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেওয়ার জন্য বাঙালি তরুণদের উদ্বুদ্ধ করেন। কৃতী সন্তান হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।

শনিবার (১০ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা, বঙ্গশার্দুল মেজর আবদুল গণির ৬২তম মৃত্যু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, তিনি (মেজর আবদুল গণি) কেবল বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার কৃতী সন্তান নয়- তিনি বাঙালি জাতির অকুতোভয় সৈনিক, যার হাতে গড়ে উঠেছে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট।

অকাল প্রয়াত মেজর আবদুল গণি ১৯১৫ সালের ১ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার ব্রা‏হ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, বাল্য ও কৈশোরে ক্রীড়া চর্চা ও মানবসেবায় অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে নেতৃত্বের সহজাত গুণাবলীর স্ফুরণ ঘটে তার। মানব সেবার আদর্শে উজ্জীবিত আবদুল গণি কৈশোরেই জাগতিক স্বার্থপরতার মোহ ত্যাগ করেছেন।  

‘‘১৯৩৩ সালে দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের সেবা এবং বিপথগামী তরুণ সম্প্রদায়কে সুপথে পরিচালনার্থে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রামে ‘সবুজ কোর্তা’ বাহিনী গঠন করেন। ’’

তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বার্মার রণাঙ্গনে তার অধীনে যুদ্ধরত বাঙালি সৈন্যদের বীরত্ব ও শৌর্যবীর্যের কারণে তিনি বাঙালিদের জন্যে পৃথক একটি রেজিমেন্ট গঠনের চিন্তা করেন। মেজর গণির উদ্যোগে ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের যাত্রা শুরু হয়।

মেজর গণির জীবনী থেকে উদ্ধৃত প্রধান বিচারপতি বলেন, ১৯৫৩ সালে অবসর গ্রহণের পর মেজর গণি রাজনীতিতে যোগ দেন এবং ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক আইন সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন।  

১৯৫৭ সালের নভেম্বর মাসে তিনি পশ্চিম জার্মানির ফ্রাঙ্কফ্রুটে বিশ্ব প্রাক্তন সৈনিক সংস্থার অধিবেশনে যোগ দেন এবং সেখানেই ১১ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আজ এই মহান ব্যক্তিত্বের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, শিক্ষানুরাগী আবদুল গণি ক্যাডেট কলেজ, সামরিক স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইন পরিষদে দাবি জানান। জীবদ্দশায় না হলেও তার প্রয়াসের ফলে পূর্ব পাকিস্তানে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ ও ময়মনসিংহ ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

‘তিনি শিক্ষা বিস্তার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি এবং শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের জন্য তৎকালীন প্রাদেশিক আইন পরিষদে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। বাংলাদেশ সরকার ১৯৮১ সালে মেজর আবদুল গণিকে মানবসেবায় অবদানের জন্য মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত করে। ’

‘প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মেজর আবদুল গণি বাঙালি জাতির কৃতী সন্তান হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। নতুন প্রজন্মকে আমি তার কীর্তিময় জীবন ও আদর্শ চর্চা করার জন্য অনুরোধ করবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৮
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।