ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

৫ কোটি টাকা না দিলে এমপি শওকতের জামিন বাতিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৭
৫ কোটি টাকা না দিলে এমপি শওকতের জামিন বাতিল

ঢাকা: দুই মাসের মধ্যে  ৫ কোটি টাকা না দিলে নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. শওকত চৌধুরীর জামিন বাতিল হবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। 

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো.আব্দুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।  

এর আগে এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি শেষে গত ২২ অক্টোবর ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা না দিলে এমপি মো. শওকত চৌধুরীর জামিন বাতিল হবে বলে আদেশ দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এমপি শওকতের আবেদনের শুনানি শেষে ২৯ অক্টোবর ওই আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

সম্প্রতি এ স্থগিতাদেশ তুলে দিতে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন। রোববার ওই আবেদনের শুনানি শেষে আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার‌্য করা হয়।

আদালতে শওকত চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন ,এ এম আমিনউদ্দিন ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি।   

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। কমার্স ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।

আদেশের পরে খুরশীদ আলম খান বাংলানিউজকে বলেন, হাইকোর্টের মূল রায় ঠিক রেখে শুধু টাকার অংক পরিবর্তন করে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ২৫ কোটি টাকার স্থলে দিতে হবে ৫ কোটি টাকা। দুই মাসের মধ্যে টাকা না দিলে তার জামিন বাতিল হবে।

বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে গত বছরের ৮ মে ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ টাকা এবং ১০ মে ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে শওকত চৌধুরীসহ ব্যাংকটির নয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় দু’টি মামলা করে দুদক।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ব্যাংকটির ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বংশাল শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গনি, চাকরিচ্যুত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার শিরিন নিজামী, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সফিকুল ইসলাম, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পানু রঞ্জন দাস, সাবেক ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইখতেখার হোসেন, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার দেবাশীষ বাউল, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার ও বর্তমানে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আসজাদুর রহমান।

এরপর আগস্ট মাসে শওকত চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর বিচারিক আদালতেও আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৭টি এলসি খুলে মেসার্স যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল, মেসার্স এগ্রো কেমিকেল লিমিটেড ও উদয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে শওকত চৌধুরী এ ঋণ জালিয়াতি করেন। পরে যা সুদে আসলে শত কোটি টাকার ওপরে চলে যায়।

এদিকে এই মামলার অন্য আসামিরা গত বছর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, প্রধান আসামি শওকত চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। তাই তারাও জামিন পেতে পারেন। এরপর গত বছরের ২৪ নভেম্বর জামিন বাতিলে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৭/আপডেট ১১০২ ঘণ্টা
ইএস/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।