ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

তিনতলা থেকে ফেলে শিশুকে হত্যা: প্রতিবেশীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
তিনতলা থেকে ফেলে শিশুকে হত্যা: প্রতিবেশীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

ঢাকা: চার বছর আগে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন এলাকায় দুই বছরের শিশুকে তিনতলার বারান্দা থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার একমাত্র আসামি জান্নাতুল ওয়াইশ ওরফে নাহিদকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় দেন।  

রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা আসামি নাহিদকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।  

সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী শিশুটির বাবা মো. ইদ্রিস। তিনি বলেন, আমার ছোট মেয়েটাকে তিনতলা থেকে ফেলে যে হত্যা করেছে, তার সাজা হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ড। আমরা তার ফাঁসি চাই। এ রায় আমরা মানি না। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো। আপিল করবো। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিশুটির মা।

প্রসঙ্গত, দীননাথ সেন রোডের ৫৩/১/ছ নম্বর চারতলা বাড়ির পাশে টিনশেড বস্তিতে মা-বাবা ও তিন বোনের সঙ্গে থাকত আড়াই বছরের শিশু আয়েশা। ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি বাসায় গ্যাস সংযোগ না থাকায় বিকেলে আয়েশার মা পাশের বাসায় রান্না করতে যান। তখন আয়েশা রুমেই ছিল। এক পর্যায়ে আয়েশার মা রুমে এসে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে অস্থির হয়ে পড়েন। সন্ধ্যার পর আশপাশের মানুষের চেঁচামেচি শুনে ছুটে যান বাসার পাশের গলিতে। সেখানে গিয়ে দেখেন ময়লার ট্রলির পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে তার মেয়ে। দ্রুত আয়েশাকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার দুদিন পর ৭ জানুয়ারি শিশুটির বাবা মো. ইদ্রিস বাদী হয়ে গেন্ডারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নাহিদ হোসেনের নামে শিশুটিকে ধর্ষণের পর চারতলা বাড়ির তিনতলা থেকে নিচে ফেলে হত্যার অভিযোগ করেন তিনি।

মামলা দায়েরের পর নাহিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে নাহিদ কারাগারেই আছেন। এদিকে নাহিদের মেয়ে ফাতিহা খান বুশরা বাবার নামে আদালতে জবানবন্দি দেয়।  

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর পিবিআই’র উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সাদেকুর রহমান নাহিদকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে বলা হয়, ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে দুই বছরের শিশু আয়েশা মনিকে পরিকল্পিতভাবে তিনতলার বারান্দা থেকে ফেলে হত্যা করে নাহিদ।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি আসামির নামে চার্জগঠন করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জন সাক্ষ্য দেন। আসামির পক্ষে ছয়জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
কেআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।