ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিদেশে পাঠানোর কথা বলে অপহরণ ও হত্যা, পাবনায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৩
বিদেশে পাঠানোর কথা বলে অপহরণ ও হত্যা, পাবনায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

পাবনা: বিদেশে পাঠানোর কথা বলে পাবনার বেড়া থেকে কৌশলে এক ব্যক্তিকে ঝিনাইদহে নিয়ে অপহরণ ও হত্যার দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনার বিশেষ জজ আদালতের (জেলা জজ) বিচারক আহসান তারেক এ রায় দেন।  

যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার রঘনন্দনপুর গ্রামের নুরু জোয়ার্দারের ছেলে সবুজ ওরফে দাদা ভাই ওরফে বকুল, কুষ্টিয়া জেলার খোকশা থানার বনগ্রাম পূর্বপাড়ার মোবারক হোসেনের ছেলে আবুল কালাম, নিহাল বিশ্বাসের ছেলে আজাদ এবং একই এলাকার আব্দুল খলিল।  

রায় ঘোষণার সময় আজাদ ও আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক। তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ থেকে বেড়া উপজেলার রামনারায়ণপুরের রশিদ সিকদারের বাড়িতে দিনমজুর হিসেবে এসে সম্পর্ক তৈরি করেন সবুজ। সম্পর্কের একপর্যায়ে ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই রশিদকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যান সবুজ। পরের দিন রশিদের বাড়ির লোকজন তার খোঁজ নিলে সবুজ তাকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে এ বিষয়ে বেড়া থানায় একটি অভিযোগ দেন রশিদের শ্যালক বাহের মণ্ডল। অভিযোগের সূত্র ধরে সবুজকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন যে মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে হত্যা করে মরদেহ পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

তবে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করতে না পারায় আসামিদের নামে শুধু অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি ছয়জনের নামে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মঙ্গলবার চার আসামিকে এ সাজা দেন আদালত। মামলা চলাকালে বাকি দুই আসামির মৃত্যু হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়।  

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান ও মকিবুল আলম বাবলা এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক।

রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক বলেন, যেহেতু মরদেহ উদ্ধার হয়নি এজন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অপহরণ মামলায় বিচার হয়েছে। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিয়মান হয়েছে।

তবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আসামিদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান। তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে আমার মক্কেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।