ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

মিতুলদের ঈদ উপহার | আলমগীর কবির 

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২০
মিতুলদের ঈদ উপহার | আলমগীর কবির 

মিতুলদের ইস্কুলে লম্বা ছুটি হয়েছে করোনার জন্য। কিছুদিন ছুটি ভালোই উপভোগ করলো সে। মায়ের হাতের রান্না খেতে পারলো। তার মা শিক্ষকতা করেন। অনেক ব্যস্ততায় দিন কেটে যেত মায়ের। মায়ের হাতের রান্না ভারি মজার। মাকে সে ছোট্ট বেলার মতো কাছে পেয়েছে আবার।

বাবার অফিসও ছুটি। তার বাবাকে অন্য সময় তেমন কাছে পেতো না।

এখন পেয়েছে। ওদের বাসায় একটা লাইব্রেরি আছে। অনেক অনেক বই। মজার মজার বই।
সেখান থেকে বই পড়তে এখন আর মিতুলের বাধা রইলো না। মিতুলের পছন্দ গোয়েন্দা গল্প। ভালোভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিল ওর।
কিন্তু দেশের অবস্থা আস্তে আস্তে খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে।
যারা নিম্নবিত্ত মানুষ, তাদের কষ্ট বেড়ে গেছে। ঘরে খাবার নেই অনেকের। কাজ নেই। সামনে আবার ঈদ। মিতুল এসব বিষয় নিয়েও রোজ ভাবে। তাদের জন্য যদি কিছু করতে পারতো সে।
বিকেলবেলা গল্পের বই পড়ছিল মিতুল।
তখন মোবাইল ফোন হাতে মিতুলের ঘরে মিতুলের মা এলেন।
মা বললেন, মিতুল, আবির ফোন দিয়েছে। কথা বল।
মিতুলকে মা ফোন দিয়ে চলে গেলেন।
আবির মিতুলের ক্লাসমেট। মিতুলের ভালো বন্ধু।
-হ্যালো আবির।
-মিতুল, কেমন আছিস।
-ভালো আছি। তুই কেমন আছিস?
-আমিও ভালো আছি।
-তোকে একটা কারণে ফোন দিয়েছি।
-কারণ ছাড়া ফোন দিবি না, তা আমার জানা আছে। কী কারণ তা বল?
মিতুলের কথায় আবির মোটেও রাগ করলো না। হাসলো।
তারপর বললো, তুই তো জানিস আমাদের আশপাশের অনেক মানুষ ভালো নেই। অভাবে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। আমরা সব বন্ধু মিলে তাদের জন্য কিছু করতে পারি না? তুই কি বলিস?
মিতুল বললো, আমিও তাই ভাবছিলাম। খুবই ভালো একটা কাজ হবে। আর কদিন পরেই তো ঈদ। আচ্ছা তুই কাজ শুরু করে দে।
তুই ওইদিকে দেখ আমি এইদিকটা দেখছি।
মিতুলের বেশ আনন্দ হলো। সে অনেকগুলো ভালো বন্ধু পেয়েছে এই জীবনে।
মা বাবাকে সব খুলে বলতেই, মা বাবা খুব খুশি হলেন।
মিতুল তার মাটির ব্যাংকটা ভেঙে ফেললো। গুনে দেখলো আটশত টাকার মতো হয়েছে। তাই দেখে মা দিলেন দু’হাজার টাকা। বাবা দিলেন দুই হাজার টাকা।
মিতুলের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
পরের দু’দিন মিতুলের ব্যস্ততায় কেটে গেল।
সবুজ সোহাগ আবির সোহেল মিতু জীবন শারমিন সবাই সাধ্যমতো সহযোগিতা করলো।
ওদের সংগ্রহ দাঁড়লো প্রায় বিশ হাজার টাকা।
বিশজন শিশুর জন্য ঈদ সামগ্রী কিনতে পারলো ওরা। ওদের উদ্যোগটা সফল হলো।
অনেকে অবাক হলেন। অনেকে খুশি হলেন।
দুঃসময়ের এমন দিনে অসহায়, ছিন্নমূল শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছে মিতুল ও তার বন্ধুরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২০
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।