ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯৭)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯৭) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
এখানে, এখানে, অতো তাড়াহুড়া কোরো না ইয়াং ম্যান। পুরাতন ওভারকোট আর ছেঁড়া জুতো পরা ছেলেটিকে দেখতে খুব একটা সুবিধের মনে না হওয়ায় দারোয়ান বলে। তুমি ক্যাপটেনকে কেনো খুঁজছো?

আরে দয়া বলুন ওনারা কোথায়? জ্যাক মিনতির সুরে বলে এবং ঠিক সেই মুহূর্তে পেছন থেকে একটা পুরুষকণ্ঠ বলে ওঠে:
আমাকে খুঁজছো কেনো? তুমি কী চাও, এই ছেলে?
জ্যাক পেছনে তাকায়। দেখে বাদামি চেহারার একটা লোক তার দিকে তাকিয়ে আছে এবং তখনই সে তাকে চিনতে পারে।

কারণ লোকটার চেহারা অবিকল মাইকের মতো।  
ক্যাপটেন আরনল্ড! মাইক, পেগি, আর নোরা এখন কোথায় আছে আমি সেটা জানি! সে চেঁচিয়ে ওঠে।  
যেন ভুল শুনছে ঠিক এমনভাবে ক্যাপটেন তার দিকে তাকায়। তারপর তিনি জ্যাকের হাত ধরেন এবং তাকে ওপরের তলায় একটা কক্ষে নিয়ে যান যেখানে একজন নারী বসে একটা চিঠি লিখছিলেন। জ্যাক বুঝতে পারে তিনিই ওই ছেলে-মেয়েদের মা, কারণ তার চেহারার সঙ্গে পেগি আর নোরার অনেক মিল রয়েছে। তাকে খুব সদয়, সবল আর বুদ্ধিমতী বলে মনে হচ্ছিল। জ্যাকের মনে হচ্ছিল ইনি তার নিজেরও মা।  
এই ছেলেটা বলছে সে জানে বাচ্চারা কোথায় আছে, মেরি, ক্যাপটেন বলেন।  
এরপর সেখানে সেই কী যে উত্তেজনার শুরু! জ্যাক তার গল্পটা খুলে বলে এবং দু’জন পরিণত নারী-পুরুষ একটা শব্দও উচ্চারণ না করে থ হয়ে তার সব কথা শোনে। কথা শেষ হলে ক্যাপটেন জ্যাকের সঙ্গে হাত মেলান এবং তার স্ত্রী তাকে জড়িয়ে ধরেন।
তুমি আমাদের বাচ্চাদের চমৎকার এক বন্ধু! উত্তেজনায় তার চেহারা চকচক করছে। আর তুমি সত্যিই বলছো তোমরা সবাই মিলে ছোট্ট একটা দ্বীপে বসবাস করছো আর আজ পর্যন্ত কেউ তোমাদের খুঁজে পায়নি?
হুম, জ্যাক বলে, আর ওহ্, স্যার, এটাও তো সত্য একটা জাহাজ গিয়ে নিয়ে আসার আগপর্যন্ত, আপনি আর মিসেস আরনল্ডও একটা দ্বীপেই ছিলেন?
পুরোপুরি সত্য, ক্যাপটেন আরনল্ড হেসে বলেন। আমাদের প্লেনটা পড়ে গিয়ে বিধ্বস্ত হয় আর আমরা প্রশান্ত মহাসাগরের একটা দ্বীপে হারিয়ে গিয়েছিলাম! আমাদের বাচ্চারাও একটা দ্বীপে একাকী বসবাস করবার জন্য চলে গেছে এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই জানার সুযোগ ছিল না! পরিবারের ভেতর এমন একটা ঘটনা ঘটলো!
জন, আমাদের এখনই ওদের কাছে যাওয়া উচিত, মিসেস আরনল্ড বলেন। কথাটা বলার সময় তিনি আনন্দে প্রায় কেঁদে ফেলেন। তাড়াতাড়ি, এখনই চলো। আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না!
আমাদের জুতসই একটা নৌকা চাই, জ্যাক বলে। ফুটো হয়ে আমাদের পুরাতন নৌকাটা বলতে গেলে বাতিল মালে পরিণত হয়েছে।  
দারজার কাছে একটা গাড়ি এসে দাঁড়াতে খুব বেশি সময় লাগে না। জ্যাক, ক্যাপটেন আর মিসেস আরনল্ড সেই গাড়িতে করে লেকের পাড়ে চলে আসেন। তারা সেখানকার জেলেদের কাছ থেকে বড় একটা নৌকা ভাড়া নেয় এবং রহস্য দ্বীপের দিকে যাত্রা শুরু করে। জ্যাক অবাক হয়ে ভাবতে থাকে বাচ্চারা কী বলবে! 
ঠিক সেই মুহূর্তে, তিনটে বাচ্চা ভীষণ দুশ্চিন্তা শুরু করে! এখন চায়ের সময় পেরিয়ে গেছে। আকাশটা অন্ধকার হতে চললো। জ্যাক কোথায় গেলো?
আমি বৈঠার শব্দ শুনতে পাচ্ছি! অবশেষে পেগি চেঁচিয়ে ওঠে। ওরা সবাই সৈকতে ছুটে আসে। গোধূলির আলোতে দ্বীপের দিকে এগিয়ে আসতে থাকা একটা নৌকার আবছা অবয়ব দেখতে পায়। এরপর মাইক দেখে নৌকাটা তাদের নিজেদেরটার চেয়ে বড় এবং একজনের বদলে তাতে মোট তিনজন রয়েছে!
তার মানে জ্যাক ধরা পড়ে গেছে। এই লোকগুলোকে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে! মাইক ভাবে এবং তার বুক কাঁপতে শুরু করে। কিন্তু এর পরপরই অবাক হয়ে শোনে লেকের কালো জলের ওপর দিয়ে জ্যাকের স্পস্ট গলার স্বর ভেসে আসছে।
মাইক! পেগি! নোরা! সব ঠিক আছে! আমি তোমাদের জন্য বড়দিনের একটা উপহার নিয়ে এসেছি!

চলবে…

বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।