ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৭)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৭) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
ওরা একত্রে বসে খায়, যদিও কারোই ক্ষুধা লাগেনি। ওদের পেছনে ডেইজি চুপচাপ শুয়ে আছে। এরকম অন্ধকার একটা জায়গাতে নিজেদের দেখতে পাওয়ার পর মুরগিগুলো অবাক হয়ে কক্ কক্ করে ডেকে ওঠে, তবে বাচ্চারা ওখানে আছে বুঝতে পেরে শান্ত হয়।

খাবার শেষে জ্যাক আবারও তার চৌকিতে ফিরে যায়। গুহামুখের ভেতরে বসে শুনতে থাকে।

 
লোকগুলো হতবুদ্ধি আর হতাশ হয়ে পড়ে। ওরা পাহাড়ের গোঁড়ায় বসে, স্যান্ডুইচ খেতে খেতে তরল বিয়ারে চুমুক দেয়। জ্যাক তাদের কথা স্পষ্ট শুনতে পায়।  

বুঝলাম, ওই বাচ্চাগুলো এই দ্বীপে এসেছিল, আর আমার ধারণা ওরা এখানেই ছিল- কিন্তু এখন ওরা এখানে নেই, একজন বলে। এ ব্যাপারে আমি পুরোপুরি নিশ্চিত।

আমরা প্রতিটা ইঞ্চি খুঁজে দেখেছি, আরেকজন বলে। আমার ধারণা তুমি ঠিকই বলছো টম; ওই বাচ্চাগুলো এখানে ঠিকঠাক মতোই ছিল- আমরা যে রানার শিম দেখে এলাম তা ওরা ছাড়া আর কে লাগাবে? কিন্তু ওরা এখান থেকে চলে গেছে। আমার ধারণা গত বুধবার পুলিশ যে ছেলেটিকে দেখেছিল সে ওদের সতর্ক করে দিয়েছে, আর তারপর সবাই নৌকায় করে ভেগে গেছে।  

আরে তাই তো, নৌকা! তৃতীয়জন বলে। এখন বাচ্চারা যদি এখানে থাকতো তাহলে আমরা একটা নৌকা দেখতে পেতাম, তাই না? যখন একটাও দেখতে পাইনি তাই ওরা এখানে থাকতে পারে না! 

একেবারে ঠিক, প্রথমজন বলে। কথাটা তো ভেবে দেখিনি। যদি এখানে কোনো নৌকা না থাকে, তাহলে কোনো ছেলেমেয়েও নেই! আমি নিশ্চিত খোঁজাখুজি করে আর কোনো লাভ হবে না।

শুধু একটি জায়গাই এখনও আমাদের দেখা হয়নি, চতুর্থজন ফিসফিস করে বলে। এই পাহাড়ে কয়েকটা গুহা আছে। বাচ্চারা ওখানে লুকিয়ে থাকতে পারে।  

গুহা! অন্য একজন বলে। হুম, কেবল ওখানেই দেখা হয়নি। আমাদের অবশ্যই ওখানে দেখা দরকার। ওরা কোথায় আছে?
মিনিট খানেকের ভেতরেই দেখাচ্ছি, চতুর্থজন বলে। টর্চ আছে সঙ্গে?

না, তবে আমাদের সঙ্গে প্রচুর ম্যাচ আছে। অন্য একজন বলে। কিন্তু এখানে দেখো- কোনো নৌকা না পাওয়া গেলে ওরা এখানে থাকতে পারে না। ওরা যদি এখানেই থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কোথাও না কোথাও একটা নৌকার দেখা মিলবে!
হতে পারে অনুসন্ধানকারীরা যাতে খুঁজে না পায় তাই ডুবিয়ে দিয়েছে, চতুর্থজন বলে।
বাচ্চারা কখনই এরকম চিন্তা করবে না! অন্য একজন বলে।  
না, আমারও মনে হয় না ওরা তা করবে, জবাব আসে।  

জ্যাক, যে কিনা এতক্ষণ সবকিছু শুনছিল, মনে মনে মাইককে ধন্যবাদ জানায়। নৌকা ডুবাবার বুদ্ধিটা মাইকের। সে যদি সেটা না ডুবাতো তাহলে লোকগুলো ওটা অবশ্যই দেখতে পেতো। কারণ তাদের তল্লাশির ধরন জ্যাকের ধারণার চেয়েও অনেক ব্যাপক আর বিস্তৃত। কল্পনাবিলাসী লোকগুলো রানার শিম দেখেই ওদের উপস্থিতি ধারণা করে নিয়েছে! 

এসো, একজন বলে। এবার আমরা ওই গুহাগুলো দেখবো। তবে কেবল সময় কাটাবার জন্য। আমার মনে হয় না শিশুগুলো এখানের মাইলখানেকের মধ্যে আছে! ওরা নৌকা করে লেকের পাড়ে কোথাও সটকে পড়েছে! 
জ্যাক নীরবে ভেতরের গুহায় ফিরে যায়, তার বুকটা ধুকধুক শব্দ করে লাফাচ্ছে।  

ওরা চিন্তাও করছে না আমরা এই দ্বীপে রয়েছি, সে ফিসফিস করে বলে, কারণ ওরা নৌকা খুঁজে পায়নি। তবে ওরা গুহাগুলোতে তল্লাশি চালাতে আসছে। লণ্ঠনটা এখনই নিভিয়ে ফেলো মাইক। এবার সবাইকে ইঁদুরের মতো চুপচাপ পড়ে থাকতে হবে। ডেইজি কি শুয়ে আছে? ভালো! মুরগিগুলোও চুপচাপ আছে দেখছি। ওরা ভেবেছে এখন বুঝি রাত। তাই ঘুমাচ্ছে! এখন কেউ আর একটাও হাঁচি বা কাশি দেবে না। পরের ঘণ্টা দু’য়েকের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে!

ভেতরের গুহায় টু-শব্দটি পর্যন্ত শুনতে পাওয়া যায় না। ডেইজি ধীরে ধীরে লম্বা করে শ্বাস টেনে চুপচাপ শুয়ে আছে। মুরগিরা শান্তভাবে ঘুমিয়ে রয়েছে। বাচ্চারা ইঁদুরের মতো বসে আছে। একটার পর একটা ম্যাচের কাঠি ধরানো হয় এবং যে সুড়ঙ্গটা ওদের সেই ভেতরের গুহার দিকে গেছে লোকেরা সেটা খুঁজে পায়!

এদিকে দেখো টম, একটা গলার স্বর বলে। এখানে একটা সুড়ঙ্গের মতো, এটা কোথায় গেছে আমরা কি তা দেখবো? 
সেটাই ভালো হবে, আমি মনে করি একটা গলার স্বর বলে। এবং তারপর বন্ধ সুড়ঙ্গের মাথার দিক থেকে অনেকগুলো পায়ের আওয়াজ ভেসে আসে!

চলবে…
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।