ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৭১)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৭১) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
আজ ডেইজির দুধ দোয়াবো ভাবছি, পেগি বলে। দুধ দোয়াবার সময় প্রায় হয়ে এলো, আর আজ সকালে ছেলেরা সময় পাবে না। আগুনটা দেখো, নোরা, ফুটতে শুরু করলে কেটলিটা নামিয়ে রেখো। 

শিগগিরই ছেলেরা ফিরে আসে, খুশি মনে মেয়েদের ধবল মাশরুমের চমৎকার সংগ্রহ দেখায়। পেগি ডেইজির দুধ দোয়ানো শেষ করে এবং সবার জন্য গরম গরম চা বানায়।

তাদের টিনভর্তি কোকা অনেক আগেই শেষ, তাই সেটাও তালিকায় যোগ করতে জ্যাক তার মনে গেঁথে নেয়।  

যে সময় ছেলেরা ডিমভাজা আর মাশরুমের সঙ্গে কয়েকটা বুনো স্ট্রবেরি আর মাখন দিয়ে নাস্তা করতে ব্যস্ত, মেয়ে দু’টি তখন উইলো ঝুড়িতে চমৎকার সেই মাশরুম সাজিয়ে দেয়, উইলোর এই ঝুড়িগুলো শনের ঝুড়ির চেয়ে বড় আর মজবুত। ঝুড়ি সাজিয়ে আরো বেশকিছু বাকি থেকে যায়।  

পেগি আর নোরা সাবধানে ঝুড়িগুলো বয়ে নিয়ে নৌকায় রাখে। যাতে মাছি বসতে না পারে তাই ঝুড়ির ওপরটা এলডার পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়। মাছিরা এলডার পাতার ঘ্রাণ একেবারেই সইতে পারে না।  

ছেলেরা নৌকা ছাড়ে। ভেতরে এমনভাবে গোছগাছ করা হয় যাতে ওরা দু’জনে হ্রদের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যেতে পারে। তবে তাদের পণ্যগুলো বিক্রি করতে এবং দোকানে কেনাকাটা সারতে কেবল জ্যাকই যাবে। একা একটা ছেলে খুব একটা চোখে পড়ার মতো না। জ্যাকের ফিরে আসার আগপর্যন্ত লেকের তীরে কোথাও নৌকাসহ লুকিয়ে থেকে মাইক ওর জন্য অপেক্ষা করবে। মাইক সঙ্গে কিছুটা রান্না করা মাছ আর সামান্য দুধ এনেছে, কারণ জ্যাক ফিরে আসতে কম করে হলেও ঘণ্টা খানেক সময় লাগবে।  

এখানে নৌকা রাখার ভালো একটা জায়গা আছে, মাইক আর সে হ্রদের ওপর দিয়ে নৌকা বাইতে থাকে এবং দূরের গ্রামটা দেখেতে পাওয়ার পর, জ্যাক বলে। লেকের পাড়ে একটা এলডার গাছ নুয়ে পড়ে আছে, আর মাইক পথ দেখিয়ে নৌকাটিকে সেখানে নিয়ে যায়। নৌকাটি পড়ে থাকা গাছটার তলায় পিছলে ঢুকে গেলে জ্যাক লাফিয়ে নামে।  

এখান থেকে আমি সহজেই গ্রামের পথ খুঁজে নিতে পারবো, সে বলে। আমি যতটা পারা যায় তাড়াতাড়ি ফিরবো, মাইক।
জ্যাক লম্বা দু’টি লাঠি এনেছে। ওর সঙ্গে সে মাশরুম আর স্ট্রবেরির ঝুড়িগুলো বাঁধে। এভাবে কোনো কিছু না ফেলে সে খুব সহজেই ওগুলো বয়ে নিয়ে যেতে পারবে। মালামাল নিয়ে সে বনের ভেতর চলে যায় আর মাইক তার ফিরবার অপেক্ষায় নৌকায় বসে থাকে।  

ছোট সেই গ্রামের পথ খুঁজে পেতে জ্যাককে খুব একটা বেগ পোহাতে হয়নি। সেদিন গ্রামে হাট বসেতে দেখে সে খুবই খুশি হয়! ছোট এই বাজার প্রতি বুধবার বসে, আর ঘটনাক্রমে সেদিন ছিল বুধবার! 

দারুণ! জ্যাক ভাবে। খুব একটা ভিড়-ভাট্টা নেই বলে কেউ আমাকে দেখতেও পাবে না। তাই খুব সহজেই আমি আমার জিনিসগুলো বেচতে পারবো! 

ছেলেটি ছোট্ট সেই বাজারে গিয়ে, দারুণ মাশরুম! পাকা বুনো স্ট্রবেরি! বলে উঁচ্চৈঃস্বরে ডাকতে শুরু করে।  
মাশরুম আর স্ট্রবেরির পরিপাটি সুন্দর সুন্দর ঝুড়ি দেখতে পেয়ে লোকেরা থামে। সন্দেহ নেই জিনিসগুলো খুবই চমৎকার এবং জ্যাক তার মালামাল খুব দ্রুত বিক্রি করে। তার পকেটে এখন পুরো এক সিলিং আর ছয় পেনি ঝনঝন করছে। এতে জ্যাক খুব তৃপ্ত বোধ করে। এবার সে অনেক অনেক জিনিস কিনতে পারবে! 

অবশেষে তার লাঠিতে আর একটি ঝুড়িও বাকি থাকে না। লোকেরা তার প্রশংসা করে। তার পণ্য আর সুন্দর করে বোনা ঝুড়ির জন্য। তাকে আবার আসতে বলে। জ্যাকও ঠিক করে আবার আসবে। টাকা কামাবার খুব মজার একটা উপায়, আর কেবল টাকা হলেই সে তার দরকারি সব জিনিস কিনতে পারবে! 

সে কেনাকাটা করতে যায়। খুব বড় একটা আটার বস্তা কেনে। পেগির জন্য উল আর সুতা কেনে। গোটা কুড়ি মোমবাতি আর প্রচুর ম্যাচও নেয়। নতুন একটা কেটলি, দু’টি এনামেলের বাসন, কিছু গল্পের বই, দু’টি পেন্সিল আর একটা রাবার, সঙ্গে একটা আঁকার খাতাও নেয়। কিছু তারকাঁটা, সাবান, একে ওকে খুশি করবার জন্য মাখন, চকলেটের কয়েকটা বার, কয়েক টিন কোকা, চা, চাল- ওহ্, এতো জিনিস তাকে এর আগে কখনও বইতে হয়নি! 

চলবে...
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।