ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৬৯)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৬৯) প্রতীকী ছবি

[পূর্বপ্রকাশের পর]
তাহলে তো খুবই চমৎকার হয়, জ্যাক বলে। ঠিক আছে, তাহলে সবাই শোনো। আমি নৌকা নিয়ে লেকের শেষ মাথায় ওপারের গ্রামে যাবো, তারপর সেখানে গিয়ে আমাদের খুব বেশি দরকার এমন সব জিনিস কিনে নিয়ে আসবো, এটাই সবচেয়ে ভালো হবে, তা কি তোমরা ভেবে দেখনি?

বাকিরা সবাই বিস্ময়ে চিৎকার করে ওঠে।
তুমি ধরা পড়ে যাবে!
কোনো কিছু কেনার মতো টাকা তো তোমার কাছে নেই!
ধুর, যেও না, জ্যাক!

আমি কিছুতেই ধরা পড়বো না, জ্যাক বলে।

আমি খুব সতর্ক থাকবো। পাশের গ্রামের কেউই তো আমাকে চেনে না। শুধু পাঁচ মাইল দূরে বলে আমাদের দরকারি সব জিনিসপত্র বয়ে আনতে ভীষণ পরিশ্রম হবে।
কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে, জ্যাক? পেগি বলে।  

সেটা আমি দেখছি, জ্যাক বলে। মাইক যদি খুব ভোরে ব্যাগভর্তি মাশরুম তুলতে আমাকে সাহায্য করে তাহলে আমি সেগুলো আমাদের বানানো উইলোর ঝুড়িতে সাজিয়ে বেচতে গ্রামে নিয়ে যেতে পারি।  
আরে এটা খুব ভালো একটা বুদ্ধি জ্যাক, পেগি বলে। শুধু যদি ধরা না পড়!

এ নিয়ে ভেবো না, বোকা, জ্যাক বলে। এবার চলো আমাদের কী কী জিনিস দরকার তার একটা তালিকা তৈরি করা যাক, আর যাওয়ার পর আমি সব সঙ্গে আনতে চেষ্টা করবো।

আমি আশা করছি একটা কি দু’টা বই পাবো, পেগি বলে।  
আর একটা পেন্সিল হলে খুবই ভালো হয়, নোরা বলে। আমি আঁকাআঁকির জিনিস পছন্দ করি।
আর নতুন একটা কেটলি, পেগি বলে। আমাদেরটা ফুটো হয়ে গেছে।

এবং আরো কিছু তারকাটা, মাইক বলে।  
এবং আটা, উল আর কালো সুতো, পেগি বলে।  
ওরা যার যা দরকার তার তালিকা তৈরি করতে বসে। যাতে ভুলে না যায় জ্যাক তাই মুখস্ত করে নেয়।  
মাইক আর আমি কাল সকালে হ্রদের ওপারে মাশরুম তুলতে যাবো, সে বলে।  

আর শোন, জ্যাক যদি মনে করো কিছু বুনো স্ট্রবেরি বেচতে পারবে তাহলে কি সঙ্গে নেবে? ব্যগ্রকণ্ঠে নোরা বলে। আমি জানি কোথায় অঢেল রয়েছে। কাল ডাঁসা ডাঁসা আর খুব মিষ্টি মিষ্টি স্ট্রবেরিতে ভরপুর একটা জায়গা খুঁজে পেয়েছি!
খুব চমৎকার বুদ্ধি, আনন্দে, জ্যাক বলে। এদিকে তাকাও, আজ আমরা ছোট ছোট অসংখ্য ঝুড়ি বানাব, আর তারপর আমরা সেগুলোতে পরিপাটি করে মাশরুম আর স্ট্রবেরি সাজিয়ে নৌকায় করে বিক্রি করতে নিয়ে যাবো। আমরা প্রচুর টাকা আয় করতে পারবো!

বাচ্চারা সত্যিই সত্যিই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। মাইক সরু উইলো ডাল সরবরাহ নিশ্চিত করতে উঠে চলে যায়, আর পেগিও শর আনতে ছুটে যায়। সে আবিষ্কার করেছে শর দিয়েও সুশ্রী ঝুড়ি বানানো সম্ভব এবং তার ধারণা স্ট্রবেরির জন্য সেগুলো খুব ভালো হবে।  

শিগগিরই ওরা চারজন রোদছাওয়া পাহাড়ের পাশে ঝোপের আড়ালে ঝুড়ি বুনতে বসে যায়। ঝুড়ি বোনায় ছেলেরাও এখন মেয়েদের মতোই দক্ষ এবং সূর্য ডোবার আগে জায়গাটা সারি সারি ঝুড়িতে ছেয়ে যায়। পেগি গুনে দেখে। মোট সাতাশটা সাজি!

বলে রাখছি! ভরতে পারলে, সবগুলোই বিক্রি করে আসতে পারবে, জ্যাক, তখন তোমার কাছে সবকিছু কেনার মতো টাকা থাকবে, মাইক বলে।  

সবাই একটু আগেভাগেই শুতে যায়, কেননা ওরা জানে কাল সকালে খুব ভোরে তাদের বিছানা ছাড়তে হবে। ওদের কারো সঙ্গে কোনো হাতঘড়ি বা ঘড়ি নেই, আর সকাল সকাল ওঠার একমাত্র উপায় হলো আগেভাগে ঘুমিয়ে পড়া! এটা ওদের জানা। রাতে ভয়াবহ গরম পড়ায় ওরা নিজেদের সেই বাইরের শোবার ঘরে কাঁটা ঝোপের আড়ালে, আরাম করে গুল্মের বিছানায় শুয়ে পড়ে। সেই প্রথম দিনের মতো এবারও কোনো কিছুই তাদের এই ঘুম ভাঙাতে পারবে না! একটা সজারু মাইকের পায়ের ওপর দিয়ে হেঁটে যায়, তবু সে সেদিকে চেয়ে দেখে না! একটা বাদুড় মাইকের মুখের ওপর ডানা ঝাঁপটায় তবু সে একটুও নড়ে না।

চলবে...
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।