ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

বিশ্বের একেবারে উত্তর অঞ্চলের মসজিদ

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৫
বিশ্বের একেবারে উত্তর অঞ্চলের মসজিদ

রাশিয়ার সাত হাজার মসজিদের মধ্যে একটি মসজিদের জায়গা হয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। রাশিয়ার ক্রাসনোইয়ারস্ক (Krasnoyarsk) রাজ্যের নরিলস্ক (Norilsk) শহরের এই মসজিদটি বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের মসজিদের স্বীকৃতি পেয়েছে।

মসজিদটির নাম, ‘নুর্দ কামাল’ (Nurd Kamal) মসজিদ। নীলাভ রংয়ের কাস্টম নকশা অনুযায়ী নির্মিত এই মসজিদের নকশা প্রথাগত মসজিদগুলো থেকে একটু ভিন্ন।

এই মসজিদের ইমামের নাম খতিব আবদুল্লাহ হজরত গালিমভ। নরিলস্ক শহর উত্তর মেরুর বলয়ের ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। নরিলস্ক শহরটি শিল্পোৎপাদন নগরী বলে খ্যাত। এলাকাটি রাশিয়ার মানচিত্রে শহর হিসাবে পরিচিত ১৯৫৩ সাল থেকে।

বর্তমানে এই এলাকাটি বিশ্বে মেরু বলয়ের ওপারের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল শহর হিসেবে পরিচিত। প্রথমটি এই ক্রাসনোইয়ারস্ক রাজ্যের আরেক শহর মুরমানস্ক।

নরিলস্ক শহরে দুই লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। তাদের বেশিরভাগ জন্মগতভাবে মুসলমান হলেও তাদের পূর্ব পুরুষরা কাজের সন্ধানে এসেছেন ককেশাস, তাতারস্থান, বাশকির ও আজারবাইজান থেকে।

নরিলস্ক শহরে ১৯৯৬ সালে প্রথম একটি অর্থোডক্স গির্জা তৈরি করা হয়। এর দুই বছর পর মুসলমানরা একটি সবুজ রঙের মসজিদ নির্মাণ করেন। তারা আকৃতির মিনার চারকোনা বিশিষ্ট মিনার সমেত মসজিদটি কিন্তু খুব বেশি বড় নয়। এর মিনারের উচ্চতা মাত্র ৩০ মিটার। মসজিদটি একটি দ্বিতল ভবন। ওপরে নামাজ আদায় করা হয়, নীচের তলা ব্যবহার তরা হয় মাদ্রাসা হিসেবে।

নরিলস্কের প্রথম মসজিদের নির্মাতা ও উদ্যোক্তা হলেন, মুখতাদ বেকমেয়েভ। তিনি তাতারস্থানের আদি বাসিন্দা। তিনিই এই মসজিদের নামকরণ করেছেন।

নরিলস্ক শহরের আর অন্য দশটা ভবনের মতো এই মসজিদ ভবনটি তৈরি করা হয়েছে পিলারের ওপরে। আর তা এ কারণে করা হয়েছে যে, এখানে মাটির সামান্য গভীরে রয়েছে চিরন্তন হিম। যা মাটির গভীরে ৩০০ থেকে ৫০০ মিটার পর্যন্ত নিচে চলে গেছে। খুব গরমকাল বা কোনো গ্রীষ্মকালে যদি ররফ গলতে শুরু করে, তবে এই ভবনের ভিত সরতে শুরু কতে পারে। এমতাবস্থায় ভবনটি যাতে অনড় অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, তাই এর ভিত তৈরি করা হয়েছে পিলারের ওপরে, যা মাটির গভীরে পুঁতে দেওয়া হয়েছে। সঠিক করে বললে বলতে হয়, হিম বরফের মধ্যেই গভীরে জমিয়ে দেওয়া হয়েছে পিলারগুলো।

বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের এই মসজিদের বাইরের আকারের বেশকিছু বিশেষত্ব রয়েছে। যেমন, সাধারণত মিনার তৈরি করা হয় গোল চূড়া সমেত, কিন্তু এখানে তা করতে হয়েছে চৌকো। কারণ সেই উত্তরের প্রাকৃতিক আবহাওয়া। মসজিদ ও মিনারের ছাদটি করা হয়েছে ঢালু। তা না করে উপায়ও নেই। কারণ, বরফ পড়ে বলে। নরিলস্ক শহরের প্রত্যেক বাসিন্দার জন্য বছরে প্রায় ১০ টন করে বরফ পড়ে বলে মনে করা হয়!

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘন্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।