ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

জিকিরে দিল তাজা হয়

ইসলাম ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৪
জিকিরে দিল তাজা হয় সংগৃহীত ছবি।

জিকির একটি ইবাদত। সহজ ও কষ্টবিহীন ইবাদত।

অপরাপর ইবাদতগুলোতে কষ্ট সাধন করতে হয়। কিন্তু জিকিরের ক্ষেত্রে কোনো কষ্টই সইতে হয় না। এছাড়াও খাঁটি মুমিনের শান হলো জিকির। জিকির ছাড়া খাঁটি মুমিন হওয়া কল্পনাতীত। পৃথিবীর বুকে যত নবী-রাসূল, ওলি-আল্লাহ, বুজুর্গ ছিলেন সবার সব সময়ের আমল ছিল জিকির।

জিকিরে দিল তাজা হয়।  হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, সাহাবি হজরত আবু মুসা আশয়ারি (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি স্বীয় পালনকর্তার কথা স্মরণ করে আর যে করে না তাদের উভয়ের দৃষ্টান্ত যথাক্রমে জীবিত ও মৃত। জিকির দিয়ে অন্যান্য ইবাদতের মজা ও স্বাদ পাওয়া যায়। ’

এক হাদিসে আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যার ভাষ্য প্রায় এ রকম- বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহকে স্মরণ করে, আল্লাহ ততক্ষণ ওই বান্দাকে স্মরণ করে। ইবাদতের মর্মকথা হলো- আল্লাহকে সব সময় স্মরণ করা। আল্লাহর চিন্তা-ফিকির হৃদয়ে সদা জাগ্রত রাখা। এই কারণে দৈনন্দিন ইবাদত নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যেন আল্লাহকে বান্দা সব সময় স্মরণ করতে বাধ্য হয়। এতে বোঝা যায় নামাজ, রোজা প্রভৃতি ইবাদত হলো আল্লাহকে স্মরণ করার মাধ্যম। আর জিকির হলো মাধ্যম ছাড়া আল্লাহকে স্মরণ করা। এক স্থানে আল্লাহ নিজেই ঘোষণা দেন- ‘আকিমিস সালাতা লিজিকরি’। অর্থাৎ নামাজ আদায় করো আমার স্মরণের জন্য।

আলেমরা জিকিরের প্রকারভেদ বর্ণনা করেছেন। জিকির অন্তর দিয়েও হয়, জবান দিয়েও। এ হিসেবে জিকির দুই প্রকার। কালবি, জবানি। এ দু’য়ের মধ্যে কালবি উত্তম। কালবি জিকির আবার দুই প্রকার-

ক. অন্তরে আল্লাহর মহত্ত্ব, বড়ত্ব, কুদরতের কথা স্মরণ করা।

খ. আল্লাহতায়ালা যে বিধিবিধান দিয়েছেন তা আদায় করার সময় আল্লাহর কথা স্মরণ করা। জিকিরে কালবির প্রথম প্রকারকে জিকিরে খফিও বলে। বুজুর্গদের বর্ণনায় পাওয়া যায়, জিকিরে খফি সত্তর গুণ বেশি মর্যাদার অধিকার রাখে। এমনকি আমল লেখা ফেরেশতারাও সে সম্পর্কে অবগত নয়। ঘটনা বর্ণনা করা হয় (যদিও তা দুর্বল)

কিয়ামতের দিন বান্দার হিসাব-নিকাশের জন্য যখন একত্র করা হবে, তখন আমল লেখক ফেরেশতারা তার সব রেকর্ড পেশ করবে। আল্লাহ বলবেন, ভালো করে দেখো আমার বান্দার আরো কিছু আমল আছে কি না? আমল লেখক ফেরেশতা বলবে, ‘হে পরোয়ারদেগার! আপনি আমার দ্বারা যা রেকর্ড করিয়েছেন আমি তা পুঙ্খানুপুঙ্খ পেশ করেছি। ’ তখন আল্লাহ বান্দাকে বলবেন, তোমার এমন কতগুলো নেকি (আমল) আছে যা আমি ছাড়া অন্য কেউ জানে না। আমি আজ তার প্রতিদান দেবো। আর ওই আমল হলো জিকরে খফি (অনেক ওলামায়ে কেরাম অবশ্য জিকরে খফিকে এত মূল্যায়ন করেন না)।

জিকিরের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। মানুষ তার কথাই বেশি স্মরণ করে, যার সাথে তার সম্পর্ক বেশি। সুতরাং আল্লাহর প্রেমিক হওয়ার জন্য আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করতে হবে। আর স্মরণ করার সবচেয়ে সহজ তরিকা হলো জিকির।

জিকিরকারী ও জিকিরের মজমাকে রহমতের ফেরেশতারা বেষ্টন করে রাখে এবং অহরহ তাদের ওপর রহমত-বরকত বর্ষিত হতে থাকে। ফরজ ইবাদতের পরই জিকিরের গুরুত্ব, ওলি-আল্লাহরা সর্বদাই ইবাদতে মশগুল থাকতেন। তাদের সর্বদা ইবাদতে লিপ্ত হওয়ার বিষয়টি হলো জিকির।

আল্লাহ জিকিরকারীদের প্রশংসা এভাবে করেছেন যে, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের কথা স্মরণ করব। ’ -সূরা বাকারা : ১৫২

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।