ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সুচির রোহিঙ্গা প্যানেল ছাড়লেন বিল রিচার্ডসন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
সুচির রোহিঙ্গা প্যানেল ছাড়লেন বিল রিচার্ডসন বিল রিচার্ডসন। ফাইল ছবি

‘সবই লোকদেখানো’, ‘সুচি নৈতিক যোগ্যতাহীন নেত্রী’—এমন অভিযোগ তুলে রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমার নেত্রী অং সান সুচির গড়া আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা প্যানেল থেকে সরে দাঁড়ালেন বর্ষীয়ান সাবেক মার্কিন কূটনীতিক বিল রিচার্ডসন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, বিল রিচার্ডসন সুচির গড়া এই প্যানেলটিকে 'নামসর্বস্ব', লোক দেখানো প্যানেল বলে দাবি করে বলেছেন, এটি একটি ‘হোয়াইটওয়াশ প্যানেলমাত্র’।   

বিল রিচার্ডসনের সরে দাঁড়ানো বা সুচির সমালোচনা করে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাপারে মিয়ানমার সরকার বা সুচির দফতর থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

রিচার্ডসন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে  অং সান সুচির সবচেয়ে বড় অযোগ্যতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ‘নেত্রী হিসেবে নৈতিক অযোগ্যতা’কে।

রোহিঙ্গা প্যানেল থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রশাসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমার সরে দাঁড়ানোর মূল কারণ হলো সুচির গড়া আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা প্যানেলটি আসলে এক লোক দেখানো ভেলকি’’।

তিনি আরও বলেন, ‘‘ মিয়ানমার সরকারের বিনোদন দেয়ার স্কোয়াডের (চিয়ারলিডিং স্কোয়াড) অংশ হয়ে থাকতে চাই না আমি। ’’

সাংবাদিকদের তিনি জানান, গত সোমবারসহ টানা তিনদিন  অং সান সুচির সঙ্গে প্যানেলের একটি বৈঠক হয়। সোমবারের বৈঠককালে  রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ওপর সংবাদ সংগ্রহ করতে এসে রয়টার্সের আটক হওয়া দুজন সাংবাদিকের বিষয়ে তিনি জানতে চান সুচির কাছে। এসময় সুচি তার সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে প্রচণ্ড ক্ষেপে উঠে (Ms Suu Kyi was "furious") সুচি তাকে মুখের ওপর বলে দেন, ‘‘এটা উপদেষ্টা প্যানেলের কাজের অংশ নয়’’।

তাদের দেওয়া '‘কোনো পরামর্শ বা উপদেশকে মিয়ানমারের নেত্রী মোটেই আমলে নেন না’' বলেও অভিযোগ করেন রিচার্ডসন।

প্যানেলের বৈঠককালে সুচি কেবল রিচার্ডসনকেই অপমান করেননি, পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মিডিয়া, জাতিসংঘ, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, ‘তাতে রীতিমতো হতবাক’ হয়েছেন  বিল রিচার্ডসন। প্যানেলের টানা তিনদিনের বৈঠকেই এমন উগ্রমূর্তিতে ছিলেন সুচি।

'‘আমাদের কোনো সুপরামর্শই তিনি কানে তোলেন না’' বলে মন্তব্য করে রিচার্ডসন বলেন, '‘আমি তাকে খুবই পছন্দ করি এবং শ্রদ্ধা করি। কিন্তু দু:খজনকভাবে রাখাইনের রোহিঙ্গা ইস্যুতে ‘সামান্যতম নৈতিকতাও’ তার মধ্যে নেই। তিনি এ বিষয়ে সবাইকে যেভাবে এবং যে ভাষায় দোষারোপ করে চলেছেন তাও দু:খজনক। ’’  

প্রসঙ্গত, রাখাইনে ব্যাপক রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা ও প্রতিবাদের মুখে মিয়ানমার নেত্রী অং সান সুচি গত বছর এই প্যানেলটি গঠন করেন, রিচার্ডসনের ভাষায় যা এখন এক ‘লোকদেখানো’ এক প্যানেলে পর্যবসিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।