ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ভোলায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মেলা শুরু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
ভোলায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মেলা শুরু

ভোলা: ভোলায় বসেছে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মেলা। স্কুল-কলেদের শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রচেষ্টায় মেধা খাটিয়ে উদ্ভাবন করেছে বিজ্ঞান বিষয়ক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি।

যা ব্যবহারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে মানুষের জীবন-যাত্রার মান উন্নয়ন সম্ভব বলে মনে করছে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীরাও ধারণা পাবেন, হয়ে উঠবেন বিজ্ঞান মনস্ক।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকালে ভোলা সদর উপজেলা চত্বরে এ মেলার আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী ৪৪তম জাতীয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং সপ্তম বিজ্ঞান অলিম্পয়াডে ঢল নেমেছে দর্শনার্থী ও ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের।

আয়োজকরা বলছেন, এমন মেলার মাধ্যমে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা খাটিয়ে আরও বেশি এগিয়ে যাবে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে আগ্রহ হবে। যার মাধ্যমে তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

কেউ তৈরি করেছেন লাইফ বয়া (লাইফ জ্যাকেট), কেউ গ্রিন হাউজ, ওয়াটার এলাম বা পানি-বাতাস দূষণের সমাধান যন্ত্র। স্রোতের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র ও ফসলের ক্ষেত থেকে ক্ষতিকর পোকা-মাকড় দূর করার যন্ত্রও আবিষ্কার করেছেন কেউ কেউ। প্রযুক্তি নির্ভর এসব যন্ত্র উদ্ভাবন করেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ যেন ক্ষুদে বিজ্ঞানিদের মেলা বসছে। যা দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।

বাতাস ও পানি দূষণ সমাধান যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন ভোলা পৌর-বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামান্না, হাবিবা, সাথী। তারা বলেন, আমাদের ধারণা- এ যন্ত্রের মাধ্যমে বাতাম-পানি দূষণমুক্ত করা যাবে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাও হবে।

আধুনিক কাকতাড়ুয়া উদ্ভাবন করেছেন ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন জুয়েল বলেন, এ যন্ত্রের মাধ্যমে কৃষকরা ক্ষতিকর পোকা-মাকড় তাড়াতে পারবে। এতে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে ফসল।

আধুনিক নগরী উদ্ভাবন করা শিক্ষার্থী সাদিকা বলেন, প্রযুক্তি সম্পর্কে আমরা অনেকে কম-বেশি জানি। তাই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা  বিভিন্ন যন্ত্র উদ্ভাবন করেছি।

মেলার প্রধান আর্কষণ ছিল টেলিস্কোপ। এটি তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নাজমুল আহসান জাহিদ। তিনি বলেন, এ যন্ত্রের মাধ্যমে মহাকাশ সম্পর্কে জানতে পারবে পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রহ, নক্ষত্র দেখতে পারবে। মহাবিশ্বের রহস্য জানার আগ্রহ তৈরি হবে। আমি চাই- শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান মনস্ক হয়ে উঠুক ও উদ্যোক্তা তৈরি হোক।

টবগি মাধ্যমিক  বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আশ্রাফুল আলম বলেন, প্রযুক্তি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের যেমনি জানার আগ্রহ রয়েছে, ঠিক তেমনি নতুন কিছু উদ্ভাবনের আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

এদিকে মেলার প্রথম দিনেই বিপুল সংখ্যক মানুষের ঢল নেমেছে। মেলা দেখতে এসে অনেকেই প্রযুক্তির ব্যবহার ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ পেয়েছেন।

বিজ্ঞান মনস্ক একটি জাতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে মনে করছেন ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, আগ্রহ থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করবে। দুইদিন ব্যাপী মেলায় ২৫টি স্টল বসছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে ভোলা উপজেলা প্রশাসন এ অলিম্পয়াডের আয়োজন করে। ভোলা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন এ মেলার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ইউএনও তৌহিদুল ইসলাম।

এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউনুস, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ, একাডেমিক সুপারভাইজার সিরাজুল ইসলাম শাওনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে এ মেলার শেষ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
এসএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।