ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

অনলাইনে কেনা পণ্য ঘরে পৌঁছে দিতে চায় ডাক বিভাগ

গৌতম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২০
অনলাইনে কেনা পণ্য ঘরে পৌঁছে দিতে চায় ডাক বিভাগ জিপিও অফিস

ঢাকা: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে দেশ অচল হয়ে পড়েছে। লোকজনকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় মানুষের ঘরে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিতে চায় ডাক বিভাগ।

ডাকবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৪ এপ্রিলের পর এ সেবা চালুর চিন্তাভানা করা হচ্ছে। প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।

সরকার অনুমোদন দিলে শিগগিরই কার্যক্রম শুরু করা হবে।

দেশের ৬৪ জেলায় ৬০টি কাভার্ড ভ্যানে করে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা সহায়ক সরঞ্জাম পিপিই, কিট ও জনসচেতনতামূলক লিফলেট পৌঁছে দিচ্ছে ডাক বিভাগ। একই সঙ্গে ৭০ হাজার আউটলেটের মাধ্যমে নগদের সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. নূর-উর-রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ডাক বিভাগের জরুরি সেবা চালু আছে। মেডিক্যাল সরঞ্জামসহ অন্যান্য জরুরি পণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ডাক বিভাগের নগদ পরিষেবাও চালু আছে। প্রয়োজন হলে ই-কমার্স পরিষেবা জোরালো করা হবে। অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের ঘরে জরুরিভাবে পণ্য পৌঁছে দিতে পারছে না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের সহায়তা চায় আমরা দিতে পারব। যদি এ অবস্থা আরো কিছু দিন থাকে তাহলে এটা করতে হবে।

সচিব বলেন, ‘ই-কমার্সের মাধ্যমে অনলাইনে কেনা পণ্য গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য যথেষ্ট লোকবল আমাদের আছে। প্রয়োজনে ছুটি বাতিল করে লোকজন আনা হবে। চাহিদা অনুযায়ী আমরা সেবাটা দিতে পারবো। ’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন সব ধরনের সেবা সীমিত পরিসরে চালু করা হবে। সে ক্ষেত্রে এ সেবাগুলো আরও ভালোভাবে দেওয়া যাবে। করোনার এই সঙ্কটকালে জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে যা প্রয়োজন তা করা হবে। ’

ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র বাংলানিউজকে বলেন, ‘মানুষের ঘরে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কী করা যায় তা ৪ এপ্রিলের সিদ্ধান্ত হবে। আমাদের যথেষ্ট লোকবল আছে। ’

সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘এক সময় ধরেই নেওয়া হয়েছিল যে ডাক বিভাগের কাফনের কাপড় পরে কবরে যাওয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু এখনকার পদক্ষেপগুলো ভিন্ন চিন্তা তৈরি করেছে। ডাক বিভাগ এখন রূপান্তরিত হচ্ছে ডিজিটাল ডাকঘরে। এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্যোক্তা শ্রেণি এবং সব কর্মকাণ্ড ঢেলে সাজানো হচ্ছে। ’

ডাক বিভাগের বর্তমান সেবাগুলো হলো- অভ্যন্তরীণ ডাক সেবা, আন্তর্জাতিক ডাক সেবা, এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিস (ইএমএস), গ্যারান্টিড এক্সপ্রেস পোস্ট, সঞ্চয় ব্যাংক, সঞ্চয় ব্যাংক আইন, সঞ্চয় ব্যাংক বিধিমালা, সঞ্চয়পত্র, ডাক জীবন বীমা, মানি অর্ডার, পোস্টাল অর্ডার, পোস্টাল ক্যাশ কার্ড, ইএমটিএস, ইএমটিএস রেট, স্পিড পোস্ট এবং নগদ।

জানা গেছে, ডাক বিভাগ ই-কমার্সের পণ্য ডেলিভারির জন্য আলাদা করে কাউন্টার খুলেছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এ সেবার জন্য। দেশে পণ্য ডেলিভারি দিয়ে অর্থ উপার্জন অনেক বড় মাধ্যম। ডাক বিভাগের আয়ের অন্যতম উৎস হতে পারে এটি। শুধু ই-কমার্স সেবায় প্রতিদিন ২৫ হাজার অর্ডার আসে। প্রতি মাসে এ অর্ডারের সংখ্যা ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে।

এদিকে আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যবহার বাড়ায় ডাক সেবা খাতে সাধারণ চিঠিপত্র কমে গেছে। তবে ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বাড়ায় দেশে এবং বিদেশে পার্সেল ও লজিস্টিক পরিবহন সেবার পরিধি বেড়েছে। কিন্তু ডাক অধিদফতরের বিদ্যমান পুরনো ডাকঘরগুলোয় বিভিন্ন আকৃতির ও ওজনের পার্সেল ও লজিস্টিক গ্রহণ, প্রসেসিং ও বিতরণের প্রয়োজনীয় স্পেস নেই। এবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জোরেশোরেই আধুনিকায়নে কাজ শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ে ডাক অধিদপ্তর দেশের প্রায় ২ হাজার ৮৭৯টি জরাজীর্ণ নিজস্ব ভবন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে দেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে ৪টি বিভাগে জিপিও ভবন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২০
জিসিজি/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।