ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

সরকারকে হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে গ্রামীণফোন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
সরকারকে হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে গ্রামীণফোন

ঢাকা: সরকারকে এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামীণফোন। আপিল বিভাগের নির্দেশে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি (রোববার) দেশের টেলিকমিউনিকেশন খাতের প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এই টাকা দেবে।

প্রতিষ্ঠানটির হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মো. হাসান শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।

এর আগে বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির পাওনা এক হাজার কোটি টাকা আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক ওইদিন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, গ্রামীণফোন যদি টাকা না দেয় আমরা প্রশাসক নিয়োগ করবো। ওনার কাজ হবে এই ইন্ডাস্ট্রি চালানো। তাদের বেতন-ভাতা যা যা আছে সব দেবে, সব করবে। এরপর টাকা যা বেশি হবে সেই টাকা সরকারের কাছে জমা দেবে। সে টাকা যখন জমা দেওয়া শেষ হয়ে যাবে তখন মেয়াদ শেষ হবে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, আর তো কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, আমার যতটুকু মনে হয় টাকাটা তারা দিয়ে দেবে।

গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে বিটিআরসিকে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশ রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন। আপিল বিভাগ এক হাজার কোটি টাকা দিতে নির্দেশ দেয়।

এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে গ্রামীণফোনের বিবৃতিতে বলা হয়, বিচার ব্যবস্থার ওপর আমাদের শ্রদ্ধা আছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি কোম্পানি হিসেবে গ্রামীণফোন ও এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর যে চাপ দিয়ে আসছে, সে বিষয়েও আদালত সুরক্ষা দেবে বলে অপারেটরটির আশা।

অডিট আপত্তির পাওনা নিয়ে গ্রামীণফোনের বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রামীণফোন এখনও বলতে চায়, অডিট আপত্তি নিয়ে বিটিআরসির ওই দাবি সঠিক নয়। গ্রামীণফোন আশা করে, তাদের বক্তব্যও আদালত শুনবে। গ্রাহক, সহযোগী ও অংশীদারদের স্বার্থ রক্ষা করতে, সমঝোতার ভিত্তিতে একটি স্বচ্ছ সমাধানে পৌঁছাতে গ্রামীণফোন আলোচনা চালিয়ে যাবে।

টাকা পরিশোধের পর গ্রামীণফোনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বাধাগুলোও দূর হবে বলে বিবৃতিতে আশা করা হয়।

গত বছরের ২ এপ্রিল বিভিন্ন খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোন ওই চিঠির বিষয়ে নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে।

একই সঙ্গে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।

পরে শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ অক্টোবর আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে টাকা আদায়ের ওপর দু’মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন।

পরে গ্রামীণফোনের কাছে ওই টাকা দাবি আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে।

ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৪ নভেম্বর তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এ আবেদেনের রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০/আপডেট
এমআইএইচ/জেডএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।