ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

দোকানে দেখে অনলাইনে কেনাকাটা

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪
দোকানে দেখে অনলাইনে কেনাকাটা

গত ‍অক্টোবরের দিওয়ালী ঘিরে ভারতের ই-বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন আর স্ন্যাপডিল নামের তিনটি বিশ্বখ্যাত অনলাইনই দিওয়ালীর আগে মূল্যছাড়ের মচ্ছব বড় অংকের মুনাফা কুঁড়িয়েছে।

অনলাইনে একটি বাটন টিপে অর্ডার আর ঘরেই পণ্য হাজির। এ নিয়ে ভারতবাসীর খুশির সীমা ছিলো না।

বই, কিছু ইলেক্ট্রনিক পণ্য সামগ্রী এগুলোই অনলাইনে বিকোতো আগে। কিন্তু এখন শাড়ি-কাপড়, রান্নাঘরের বাসন-পত্র, দামি স্বর্ণালঙ্কার, আসবাব, খাবার-দাবার সবকিছুই ই-বাণিজ্যের অন্তর্ভূক্ত। ইন্টারনেটেই কেনা যাচ্ছে সব কিছু।

ফ্লিপকার্ট জানাচ্ছে ওরা দিওয়ালী মওসুমে ১০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে অনলাইন বাজারে। স্নাপডিলও বলেছে, তাদের বাণিজ্য অনেকটা একই অংকের। আর অ্যামাজন জানাতেই চায়নি তারা কত বড় অংকের ব্যবসা তুলে এনেছে এই অনলাইন মার্কেটে।

অতীতে মানুষ অনলাইনে কোনও পণ্য সম্পর্কে জ্ঞান নিতো, খুটিয়ে খুঁটিয়ে জেনে নিতো এর গুনাবলী আর পরে দোকান থেকেই পণ্যটি কিনতো। কিন্তু এখন বিষয়টি ঘটছে ঠিক উল্টো। আজকাল ক্রেতারা দোকানে যান। পোশাক, জুতো বা পণ্যের সাইজ, রঙ দেখে নেন, ট্রায়াল রুমে গায়ে চড়িয়ে বুঝে নেন কেমন লাগছে। আর পণ্য দোকানে রেখে চলে যান বাসায়। অনলাইনে অর্ডার করেন পছন্দের পণ্য। যথাসময়ে তা ঘরে পৌঁছে যায়।
Online_2_1
স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য এসব কিছুই এখন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে, বাজারের চেয়ে কম দামে।

ভারতের ছোট ছোট শহরগুলোতেও এখন পৌঁছে গেছে এই সেবা। ফলে বাজারে দোকানগুলোতে বিক্রি কমছে। আর সেকারণে দোকানেও এখন কমদামে পণ্য বিক্রির অফার।

পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার একটি ছোট কম্পিউটার হার্ডওয়ার দোকানের বিক্রেতার কথা, অনলাইনে কেনো কিনবেন? আমরাই কমদামে বেচবো।

অ্যাসোচাম-পিডব্লিউসি নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানাচ্ছে ২০১৪ সালে ভারতের অন্তত চার কোটি ক্রেতা কিছু না কিছু পণ্য অনলাইনে কিনেছেন। আর ২০১৫ সালে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় কোটিতে দাঁড়াবে।

স্মার্টফোনের ভূমিকাটিই এখানে মুখ্য। এই ফোনের কারণে অনলাইনে কেনা-কাটা এখন সবচেয়ে সহজ হয়ে উঠেছে।

ক্যাশ-অন-ডেলিভারি একটি সহজ ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। আর নেট ব্যাংকিং আর ক্রেডিট কার্ড পদ্ধতিতো আছেই।

আর ক্যাশ-অন-ডেলিভারিতে খুঁতখুঁতে ক্রেতারাও খুশি। যারা দাম দিয়ে খচখচানিতে থাকেন, কিই না কি পণ্য আসে, তারা এখন দেখে শুনে নিয়েই দাম দিতে পারছেন।

গুগল অনলাইন শপিং ফেস্টিভালে দেখা গেছে বছরের শেষভাগে মাত্র তিন দিনে এই সাইটে ঢুকেছে ৮০ লাখ মানুষ।

চড়া দরের পণ্যগুলোও, যেমন ফ্ল্যাটবাড়ি, গাড়ি কিংবা মোটরবাইক এগুলোও অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে।
কোনো কোনো ভারতীয় শহরে তরুণ ব্যবসায়ীরা ই-গ্রোসারি স্টোর পর্যন্ত খুলে বসেছে।

আর স্ন্যাপডিল আরও এককদম এগিয়ে অনলাইন কৃষি স্টোরও চালু করেছে। এতে বীজ, সার, সেচসরঞ্জাম মিলছে প্রান্তিক চাষীদের জন্য।

খুচরা দোকানদাররা এখন কমদরের জন্য ই-ব্যবসায়ীদের দুষছেন। বিশেষ করে ইন্টারনেট বিক্রয়ে বড় ধরনের ডিসকাউন্ট তাদের বড় ক্ষতি করে ছাড়ছে।

বছর কয়েক আগেই ছোট ছোট স্টোরগুলো বড় চেইন স্টোরগুলোর হামলায় পর্যুদস্ত হয়েছিলো, তবে এবার দু-পক্ষেরই একই শত্রু এই ই-বাণিজ্য।  

বাংলাদেশ সময় ১১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।