ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

গ্রাহকের জন্য সুলভ মূল্যে মোবাইল হ্যান্ডসেট নিশ্চিত করতে হবে: বিটিআরসি চেয়ারম্যান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
গ্রাহকের জন্য সুলভ মূল্যে মোবাইল হ্যান্ডসেট নিশ্চিত করতে হবে: বিটিআরসি চেয়ারম্যান

ঢাকা: দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় মোবাইল হ্যান্ডসেটের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।  

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি’র প্রধান সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত “ভোল্টি সক্ষম মোবাইল হ্যান্ডসেট এবং নেটওয়ার্ক অপটিমাইজেশন” বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ভয়েস ওভার লং টার্ম ইভ্যালুয়েশন (ভোল্টি) হচ্ছে মোবাইল ফোনে ভয়েস কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে টুজি বা থ্রিজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করে সরাসরি ফোরজি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভয়েস কল করা যাবে। ভোল্টির সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ভয়েস কোয়ালিটি, দ্রুত কল কানেক্ট করার ক্ষমতা এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ।

কর্মশালায় টিআরসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমরা গ্রাহকের জন্য ফোরজি প্রযুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা উন্নত বিশ্বের দিকে এগুতে চাই, তাদের সঙ্গে সমানতালে তাল মিলিয়ে চলতে চাই- এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কর্মশালায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। নিজস্ব প্রয়োজনীয়তার ঊর্ধ্বে থেকে দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল অপারেটরসহ খাত সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি নির্দেশনা দেন।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, ২০১৭ সালে বিটিআরসির তত্ত্বাবধানে দেশে মোবাইল ইন্ডাস্ট্রির যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে দেশে ১৭টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুত করছে। যার মাধ্যমে দেশের চাহিদার শতকরা ৯৯ ভাগ হ্যান্ডসেট দেশীয় উৎপাদন থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে এ শিল্পে দেশীয় বিনিয়োগসহ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগও হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিটিআরসির যে স্পেকট্রাম রোডম্যাপ রয়েছে তার একটি প্রধান অনুষঙ্গ হলো, ২০২৯-২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে টুজি নেটওয়ার্ক/প্রযুক্তি যাতে পুরোপুরি বন্ধ করা যায়। তাহলে এখন থেকে ক্রমান্বয়ে বাজার থেকে টুজি ডিভাইস/হ্যান্ডসেটগুলো ধীরে ধীরে ফোরজি সক্ষম স্মার্ট/ফিচার ফোন দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে হবে। প্রতিস্থাপনের বিষয়টি বিবেচনায় বস্তুত এ কর্মশালার আয়োজন।

পরবর্তীতে ভোল্টির গুরুত্ব ও সুযোগ, কারিগরী পদ্ধতি ও কার্যনীতি এবং কৌশল বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশদ উপস্থাপনা করেন কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আউয়াল উদ্দীন আহমেদ।

কর্মশালায় আগত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা চারটি গ্রুপে- নেটওয়ার্ক মূল্যায়ন, উৎপাদক, মান নিয়ন্ত্রণ ও ভোল্টি সেবা; বিভক্ত হয়ে আলোচনা, কর্মপদ্ধতি বিশ্লেষণ ও ফলাফল নির্ধারণে অংশগ্রহণ করেন। যেখানে, বর্তমান নেটওয়ার্ক পরিকাঠামো মূল্যায়ন, ভোল্টি প্রস্তুতি মূল্যায়ন ও ভোল্টির জন্য নেটওয়ার্ক কেপিআই সংজ্ঞায়িত করা, ভোল্টি ডিভাইসের জন্য প্রযুক্তিগত বিবেচনা, সহযোগিতা এবং অংশীদারত্ব, গুণগতমান নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থা, ডিভাইস সার্টিফিকেশন মান, নেটওয়ার্ক-ডিভাইস ইন্টিগ্রেশন টেস্টিং, ভোল্টি পরিষেবার ট্যারিফ এবং সচেতনতা, ভোল্টি সামর্থ এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতা বিষয়ে বিশদ আলোচনা ও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়।

কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ ভোল্টি অভিযোজনে সব অপারেটরের সমান প্রস্তুতির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া, অদ্যাবধি যেসব অপারেটর থ্রিজি হ্যান্ডসেট (উপযোগী নেটওয়ার্ক বন্ধকরণ) করেনি, তারা শিগগিরই তা করে নিবেন মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। কর্মশালার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় যে কোনো ধরনের রেগুলেটরি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন তিনি।

ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমীয়া, সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যেন সঠিক সময়ে গ্রাহকের নিকট পৌঁছায়- এ বিষয়ে কমিশনের অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের কমিশনার ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী গুরুত্বারোপ করেন।

এমটব মহাসচিব লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, ভোল্টি হচ্ছে প্রযুক্তি প্রয়োজনীয়তা এবং প্রযুক্তির এ পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন ঘটাতে মোবাইল অপারেটরগুলো পুরোপুরি প্রস্তুত। যেহেতু নেটওয়ার্ক এবং ডিভাইস পরিপূরক তাই উভয়কে উন্নত করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর মহাসচিব জাকারিয়া শাহীদ ভোল্টি সক্ষম মোবাইল হ্যান্ডসেট এবং নেটওয়ার্ক অপটিমাইজেশন বিষয়ে বিশেষভাবে মোবাইল অপারেটরদের সহযোগিতা কামনা করেন। মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যতটুকু সম্ভব গ্রাহকের জন্য সুলভে মোবাইল ফোন উৎপাদন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে বিটিআরসি’র বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের প্রতিনিধিরা, মোবাইল হ্যান্ডসেট নির্মাতা, সংযোজনকারী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এবং টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
এমআইএইচ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।