ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

উদ্ধার ও গবেষণা চালাবে বাংলাদেশি রোবট ‘ব্র্যাকইউ ডুবুরি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
উদ্ধার ও গবেষণা চালাবে বাংলাদেশি রোবট ‘ব্র্যাকইউ ডুবুরি’

ঢাকা: নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌপথে ঘটা দুর্ঘটনায় উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নির্ভর করতে হয় ডুবুরিদের ওপর।  

অনেক সময় দুর্গম হওয়ায় অথবা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নদীর তলদেশে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রমে বেশ বেগ পেতে হয়।

মাঝেমধ্যে ডুবন্ত বস্তু শনাক্তও সম্ভব হয় না।  

আর এ সমস্যা সমাধানে ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধার ও গবেষণায় কাজ করতে বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে রোবট, যার নাম ‘ব্র্যাকইউ ডুবুরি’।  

রোবটটি তৈরি করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ। নির্মাতাদের দাবি নৌযান দুর্ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রে নদীর গভীরে মানুষ ও লঞ্চ হারিয়ে যায়। সেসব গভীরে সাধারণ ডুবুরিদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় না। বিষয়টি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ক্ষেত্রে ‘ব্র্যাকইউ ডুবুরি’ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এছাড়া গভীর সমুদ্রে কোরাল রিসার্চে সহয়তা করবে এই অটোমেটেড আন্ডারওয়াটার রোবট।  

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী কেন্দ্রে ১৭তম বেসিস সফট এক্সপো- ২০২৩ এ প্রদর্শনীর জন্য আনা হয় রোবটটি। দক্ষিণ এশিয়ার তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয়ে বড় আয়োজন বেসিস সফট এক্সপো।

প্রদর্শনীতে ‘ব্র্যাকইউ ডুবুরি’র ভাইস টিম লিডার মাহ্ফুজুল হক বাংলানিউজকে বলের, বাংলাদেশে প্রথম কোনো অটোমেটেড আন্ডারওয়াটার রোবট এটি। এটি তৈরির পেছনের গল্প হচ্ছে, দেশে লঞ্চডুবিতে অনেক মানুষ মারা যায়। অনেক সময় এসব লঞ্চ হারিয়ে যায়। সবক্ষেত্রে সাধারণ ডুবুরিদের পক্ষে হারিয়ে যাওয়া লঞ্চ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না। এমন সব বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে ডুবুরি হিসেবে এই রোবটটি বানানো হয়েছে। যেখানে মানুষ ডুবুরির অনেক সীমাবদ্ধতাকে এড়িয়ে উদ্ধার কাজ করবে রোবট ডুবুরি।

এই রোবট ডুবুরি দিয়ে সমুদ্রে কোরাল রিসার্চ করা যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ডুবুরিদের কোরাল রিসার্চ করার জন্য কোনো পারমিশন দেয় না ইউএনডিপি। আমরা চিন্তা করেছি, যদি এরকম একটা রোবট তৈরি করতে পারি যেটা কোরাল রিসার্চে সহযোগিতা করবে।  

২০১৮ সাল থেকে ব্র্যাকইউ ডুবুরি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে মাহ্ফুজুল হক বলেন, এই প্রজেক্টে শুরুর দিকে চারজন কাজ করেছেন। সদস্যদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে পেশাজীবনে প্রবেশ করেছেন। ফলে প্রজেক্টে যুক্ত হয়েছেন নতুনরা। বর্তমানে আমাদের টিম মেম্বার সংখ্যা প্রায় ৪০।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই প্রজেক্টটা করার বেশ কিছু লক্ষ্য আছে। যার মধ্যে প্রধান হচ্ছে কোরাল রিসার্চ। সেন্টমার্টিনে যে সকল কোরাল আছে সেগুলোর ছবি তুলে আনা বা তার ইনফরমেশন ডাটা আনা। আমাদের আরেকটা লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং মেরিন একাডেমির জাহাজ ইনস্পেকশন পাশাপাশি পোর্টেট সিকিউরিটি। এই দুই কাজে ডুবুরি হিসেবে আমরা এ রোবটকে ব্যবহার করতে পারি।  

এই রোবট বাণিজ্যিক পর্যায়ে যেতে আরও দুই বছর সময় লাগবে বলে জানান তিনি।  

ব্র্যাকইউ ডুবুরির উদ্ভাবক দল জানায়, এই রোবটে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি (এআই) টেকনোলজি যুক্ত করা হয়েছে। রোবটটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে। এটা কোনো রিমোট কন্ট্রোলে চলবে না। এটা নিজেই পানির নিচে সমস্ত কিছু ডিটেক্ট করবে এবং তথ্য দেবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
ইএসএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।