ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

কলকাতা বইমেলার একটি দিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
কলকাতা বইমেলার একটি দিন কলকাতা বইমেলার

কলকাতা: আট থেকে আশি, লাখো দর্শকের সমাগমে, সুপারহিট রাজ্যবাসীর বাৎসরিক বইপার্বণ। থরে থরে সাজানো রঙ-বেরঙের নতুন বইয়ের মলাট, হাল্কা মেঠো ধুলো, থিম সং, বাতাসে খাবারের ঘ্রান, আর সেলফি গ্যালারিতে উপচে পড়া ভিড়ে শনিবার একেবারে মেতে উঠল আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। এটাই ছিল বইমেলার শেষ শনিবার(৯ফেব্রুয়ারি)। তবে বই পাগলদের জন্য হাতে আছে আরও দু’দিন।

অন্যান্য বারের মতো এবারেও শাসকদলের নিজস্ব পত্রিকার স্টল জাগোবাংলা ঘিরে মানুষের আগ্রহ ছিল। গ্রামবাংলার পটভূমিকায় গড়া ওই স্টল।

যারা এলেন, তাদের জন্য বাড়তি পাওনা ছিল বাউল গান। অপরদিকে বামেদের নিজস্ব পত্রিকা গণশক্তির স্টল সেরকম সুদৃশ্য না হলেও বামপন্থীরা যে এরাজ্যে আছে, ভিড়ই সেই পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছিলো। হাঁসের ডিমের সহযোগে নানা রকম মাছের গরম গরম চপ সাজিয়ে ক্রেতা টানছেন রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর গিন্নিরা। শুধু গিন্নিরা কেনো অন্যান্য স্টলে মোঘলাই থেকে চাইনিজ কোনো কিছুই বাদ যায়নি বাহারী খাবারে।
...
কলকাতা বইমেলায় এবারের থিম দক্ষিণ আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালা। তাদের প্যাভিলিয়ন জুড়ে সে দেশের বিভিন্ন ছবি সাঁটা। মনোরম সেসব পটদৃশ্য মুগ্ধ করছে আগতদের। মণ্ডপের বাইরে ‘রাজা রামমোহন রায়ের মূর্তি’, তাকে ঘিরেও ছিল ভিড়। একটু মনোযোগ দিয়ে নজর করলেনই, বোঝা যায় এতো মূর্তি নয়, আসল মানুষ।  

কোথাও দেড়শো রুপি নগদ দিলেই মিলবে যেকোনো তিনটি বই, কোথাও বিনামুল্যে বিলোচ্ছে ধার্মিক গ্রন্থমালা। কোথাও আবার বইয়ের পাতায় তুতু ভুতু -র কাণ্ডকারখানা ওল্টাতে ওল্টাতে শৈশবে ডুব দিচ্ছেন প্রবীন পাঠকরা। আবার মেঠো পথ দিয়ে হাঁক দিচ্ছেন ২০ রুপিতে নিজের লেখা ছড়ার বই কেনার জন্য এক বৃদ্ধ। বেশ লম্বা লাইন ছিল টাকা তোলার জন্য মেলায় রাখা এটিএমেও।
 
শুধুই কি লাখ টাকার বেচা-কেনা। সিসিটিভি ফাঁকি দিয়ে হচ্ছে চুরিও! কেউ ধরা পড়ছে কেউবা পড়ছেন না। তবে বই চুরি মানে তো বিদ্যা চুরি! জ্ঞান কি কখনো চুরি করা যায়! তাই যারা ধরা পড়ছে লিখে রাখা হচ্ছে নামধাম। ঘটা করে মেলার শেষদিন তাদের দেওয়া হবে উপহার। এটাই মেলা আয়োজক পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের নীতি। নিন্দুকের কাছে নিন্দনীয় হলেও জানা গেল অনেকেই আসেন উপহার নিতে।
 
অপরদিকে, এবছর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের কয়েকটি উদ্ধার করেছিল কলকাতা পুলিশ। সেইসব ভাগ্যবান মালিকদের বইমেলায় ডেকে, রীতিমতো উৎসব করে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হল মুঠোফোন।  

মেলা প্রাঙ্গনে পথ চলতি পাঠক নাগালে পেয়ে গেলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বা সমরেশ মজুমদারদেরও। তারাও দেদার বিলোলেন সই। পাঠকদের সঙ্গে তুললেন ছবি। সব মিলিয়ে এক উন্মাদনার তুফান উঠল এবারের মেলায়।  

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
ভিএস/এসঅইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।