ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

হাতুড়ির শব্দে পর্দা উঠলো কলকাতা বইমেলার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪
হাতুড়ির শব্দে পর্দা উঠলো কলকাতা বইমেলার

কলকাতা: চিরাচরিত প্রথা মেনে হাতুড়ির শব্দে ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) মেলা উদ্বোধনকালে মুখমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী, বইমেলার আয়োজক এবং লেখক, কবি, সাহিত্যিকসহ বিশিষ্টজনেরা।

এবারের মেলায় ‘থিম কান্ট্রি’ যুক্তরাজ্য। সে সুবাদে উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার অ্যালেক্স এলিস, ব্রিটিশ কাউন্সিল ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর অ্যালিসন ব্যারেট প্রমুখ।

মেলার উদ্বোধন পর্বে বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে বই পড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি জানি ইয়ং জেনারেশনের (তরুণ প্রজন্ম) হাতে সময় খুব কম। তবু অনুরোধ করবো, তারা যেন বই পড়ার জন্য কিছুটা সময় বের করে। আমি জানি এই কদিনে অসংখ্য বইপ্রেমিক মানুষ আসবেন। তাতে যেন ইয়াং জেনারেশনও শামিল হয়।

কলকাতা বইমেলা একদিন বিশ্বে সর্বোচ্চ স্থান পাবে উল্লেখ করে মমতা বলেন, এত দেশ অংশ নেওয়ায় কলকাতা বইমেলা পরিণত হয়েছে বিশ্বমেলায়। কলকাতা বইমেলা একদিন একটা ছোট্ট জায়গায় থেকে শুরু হয়েছিল। তখন থেকেই আমার বইমেলায় আসা-যাওয়া। ১৯৯৫ সালে আমার লেখা প্রথম ‘উপলব্ধি’ দেজ প্রকাশনা থেকে প্রকাশ পেয়েছিল। আগামী বছরের মধ্যে আমার ১৫০টা বই প্রকাশনা সম্পন্ন হবে আশা করি।

তিনি মেলায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশসহ ২০টি দেশকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মমতা বলেন, বইমেলাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে মেলা কর্তৃপক্ষ। দিনদিন এই মেলার সুনাম গোটা বিশ্বে আরও ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার তার বক্তব্যে অতিথিদের বাংলা ভাষায় সম্বোধন করে বলেন, আমার নাম অ্যালেক্স এলিস। আমি ভারতকে ভালোবা। ভারতকে চিনেছি বইয়ের মাধ্যমে। আমার ভারতীয়দের সম্বন্ধে যা জানাশোনা, তা হয়েছে এই বইয়ের মাধ্যমে। এটি লন্ডনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা। আর যার আয়োজন হয় ম্যাজিক্যাল কলকাতায়। এ শহর সংস্কৃতির শহর। মেলায় যুক্তরাজ্য থিম কান্ট্রি হিসেবে মর্যাদা পাওয়ায় আয়োজকদের সাধুবাদ জানাই।

এদিনের মেলা থেকে লেখিকা বানী বাসুকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। তিনি বলেন, আমরা যারা লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত আমাদের শেষ নেই। যতদিন মাথা চলবে ততদিন কলম চলবে। অনেক ক্ষেত্রে বয়সের ভারে ইচ্ছে না করলেও ম্যাগাজিন প্রকাশকদের আবদারে লিখে যেতেই হয়। ফলে আজীবন সম্মাননা মানে আমার এখানেই শেষ নয়।  

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন সেজেছে ঢাকাই রিকশাচিত্রের আদলে
কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন সেজে উঠেছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রিকশাচিত্রের আদলে। এ প্যাভিলিয়নে থাকছে বিভিন্ন আয়োজন। বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ফিতা কেটে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের দ্বার উন্মোচন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ।  

বাংলাদেশের পাশাপাশি এবারের কলকাতা বইমেলায় বিগত বছরের মতো অংশ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইতালি, থাইল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, পেরু, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা, মেক্সিকোসহ বিশ্বের মোট ২০টি দেশ। প্রায় ১২ বছর পর ফের বইমেলায় এসেছে জার্মানি।  

এছাড়া ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থা ও তিন শতাধিক লিটন ম্যাগাজিন অংশ নিয়েছে মেলায়। বিশ্বের লেখক-পাঠকের মিলনমেলার এ আয়োজন সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

১৯৭৬ সালে ভারতে প্রথম শুরু হয় কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা। ১৯৮৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারে প্রথম স্বীকৃতি পায় এ বইমেলা। ১৯৯৭ সাল থেকে একটি দেশকে বইমেলার ফোকাল থিম কান্ট্রি হিসেবে বেছে নেওয়া শুরু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৪
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।