ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ: মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ: মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

কলকাতা: গত ১৬ মে ভরদুপুরে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৯ জন নিহত ও সাতজন আহত হন। আহতরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুর সন্ধান পেয়েছে রাজ্যটির তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। তল্লাশিতে নেমেই পুলিশ জানতে পেরেছিল ভানু পরিবারসহ প্রতিবেশী রাজ্য উড়িষ্যায় পালিয়েছেন। সেখানে গিয়ে খোঁজ শুরু করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) জানা যায়, উড়িষ্যার কটকের এক হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন অভিযুক্ত ভানু। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। চিকিৎসা চলছে, রয়েছেন পুলিশের নজরদারিতে। তবে এর মধ্যেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন ভানুর ছেলে ও ভাতিজা। তার ছেলের নাম পৃথ্বীজিৎ বাগ। তবে ভাইপো নাবালক হওয়ায় তার নাম প্রকাশ্যে আনেনি পুলিশ।

পুলিশের দাবি, বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া ভানুর কারখানাটি বেআইনি ছিল। কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে এক-দুই বছর নয়, গত ৩০ বছর ধরে কীভাবে একইস্থানে বেআইনি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আতশবাজি তৈরিই ছিল তার ধ্যানজ্ঞান। রংমশাল, তুবড়ি, ছুঁচোবাজি, রকেট, হাউই, গাছবোমা, সবই তৈরি হতো ভানুর বেআইনি কারখানায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সামনেই পঞ্চায়েত, সে কারণে এগরায় আতশবাজি তৈরির আড়ালে বোমা তৈরি হতো। সেখান থেকেই এই বিস্ফোরণ। অবৈধভাবে বোমা প্রস্তুত হচ্ছিল ভানুর কারখানায়। বিপুল মশলা মজুত থাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছে।

ইতোমধ্যেই এই বিস্ফোরণের ঘটনায় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ-এর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বুধবার সেই দাবিতে মামলা আবেদন মঞ্জুরও করেছেন কলকাতা হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) মামলাটির শুনানি হতে পারে। শুভেন্দুর দাবি, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। সেই কারণে, অবৈধ আতশবাজি তৈরির কারখানার আড়ালেই চলছিল বোমা তৈরির কাজ।

তবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিন দশক আগে যখন ভানু প্রথম বাজির ব্যবসা শুরু করেন তখনও এলাকায় একাধিকবার বিস্ফোরণ ঘটেছে। এমনকি, ৫ বছর আগে বাড়ির ওই কারখানাতেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ভানুর ভাই এবং তার স্ত্রীর। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে ভানু বাগের আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ৫ জনের। পরবর্তীতে আবারও বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু, আতশবাজি বানানোর মোহ এমনই ছিল ভানুর যে, ব্যবসার সুবিধার্থে রাজনীতির আড়ালে আশ্রয় নেন ভানু ওরফে কৃষ্ণপদ বাগ।

এ ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা অঞ্চল একেবারে উড়িষ্যা বর্ডারে। যিনি সেখানে বেআইনিভাবে আতশবাজি কারখানা চালাচ্ছিলেন তাকে আমাদের পুলিশ গত বছর অক্টোবরে গ্রেপ্তার করেছিল। আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়ে আবার এই অবৈধ বাজি নির্মাণের কাজ শুরু করছিলেন। স্থানীয়রা সেখানে কাজ করতেন। জীবিকার একটা বিষয় ছিল। মমতার দাবি, ভানু বাংলাদেশ ও উড়িষ্যায় আতশবাজি সাপ্লাই করতেন। স্থানীয়দের অভিমত, সবটাই হতো রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।