ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনা আতঙ্কে চেম্বারে রোগী দেখছেন না চিকিৎসকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২০
করোনা আতঙ্কে চেম্বারে রোগী দেখছেন না চিকিৎসকরা

রাজশাহী: নাটোরের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ জামিলুর রহমান। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন। ছেলে বজলুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার (২৪ মার্চ) রাজশাহীতে যান চিকিৎসা করাতে। কিন্তু মহানগরীর দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক ঘুরেও চিকিৎসকের দেখা পাননি তিনি। কারণ, করোনা আতঙ্কে রাজশাহীতে চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে চিকিৎসা না পেয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে তাকে। মূলত করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মানুষের উৎকণ্ঠার মধ্যে রাজশাহীর চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। 

গত শনিবার (২১ মার্চ) থেকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীর বেসরকারি চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। আর এতে করে জরুরি এ সময়ে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে রাজশাহীতে যাওইয়া রোগীদের।

বিশেষ করে নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত রোগী, যারা প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েই এতদিন অভ্যস্ত ছিলেন তারা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন।

রাজশাহী মহানগরীর বেসরকারি চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এখানকার প্রায় ৮০ শতাংশ চিকিৎসক বর্তমানে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখছেন না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ পরিস্থিতি চলতে পারে বলা বলা হচ্ছে।

চিকিৎসকরা ব্জানাচ্ছেন, করোনার প্রতিরোধে সতর্কতার অংশ হিসেবেই এ পদক্ষেপ। এক জেলার রোগী যেন অন্য জেলায় না যায় সেজন্য এ সিদ্ধান্ত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর অন্যতম ডায়াগনস্টিক সেন্টার পপুলার, মেডিপ্যাথ, ল্যাবএইড, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, রয়েল, আমানা, মেট্রোপলিটন, রাফিসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শতাধিক চিকিৎসক প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চার হাজার রোগী দেখে থাকেন। কিন্তু, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে গত শনিবার (২১ মার্চ) থেকে অধিকাংশ চিকিৎসকই রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন।  

রাজশাহীর পাশের জেলা নওঁগা থেকে আসা আবু হাশেম নামের আরেক রোগী জানান, তার পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে হবে। এ কারণে পরামর্শ নিতে তিনি এক চিকিৎসকের উদ্দেশ্যে গেলেও তার চেম্বার বন্ধ থাকায় নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।  

এ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তবিবুর রহমান শেখ বলেন, মানুষকে চিকিৎসার বাইরে রাখা হচ্ছে এমনটা নয়। করোনা সতর্কতার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ। তবে এটা খুবই সাময়িক। আমাদের সবাইকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি রোগীদেরও এ বিষয়ে উৎসাহিত করতে হবে।

রাজশাহীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপক শহীদ উদ্দিন শামীম জানান, চিকিৎসকরা করোনা সতর্কতার জন্য আসছেন না। এক্ষেত্রে তাদের কিছু করার নেই। এছাড়া তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই রেখেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২০
এসএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।