ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

নিউমোনিয়ায় পদক্ষেপ না নিলে মারা যেতে পারে দেড় লাখ শিশু

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২০
নিউমোনিয়ায় পদক্ষেপ না নিলে মারা যেতে পারে দেড় লাখ শিশু

ঢাকা: নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রচেষ্টা জোরদার করার মাধ্যমে বাংলাদেশে এক লাখ ৪০ হাজার শিশুকে নিউমোনিয়া ও অন্য বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণের হাত থেকে বাঁচানো যেতে পারে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য  উঠে এসেছে।

ঢাকার ইউনিসেফ অফিস জানিয়েছে, নয়টি শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য ও শিশুদের সংস্থা বার্সেলোনায় শৈশবকালীন নিউমোনিয়া বিষয়ক প্রথম বৈশ্বিক ফোরামের আয়োজন করেছে।

ঠিক এই সময়ে জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করলো।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‍বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশকজুড়ে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী এক লাখের বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। তবে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও চিকিৎসাসেবা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় জোরদার করার মাধ্যমে এড়ানো যেতে পারে আনুমানিক ৪৮ হাজার শিশুর মৃত্যু।

গবেষকরা আরও দেখেছেন যে, নিউমোনিয়া মোকাবিলায় প্রচেষ্টা জোরদার করা হলে তা এর বাইরে একটি ‘রিপলইফেক্ট’ তৈরি করতে পারে, যা একই সঙ্গে অন্য বড় ধরনের শৈশবকালীন রোগে আরও ৯২ হাজার শিশুর মৃত্যু ঠেকাতে পারে।

শিশুদের পুষ্টির উন্নতি, অ্যান্টিবায়োটিক ও টিকাদানের আওতা বাড়ানো এবং স্তন্যপানের হার বাড়ানো– এই পদক্ষেপগুলো নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই হস্তক্ষেপগুলো ডায়রিয়া (২৫ হাজার), সেপসিস (৩ হাজার) ওহামের (৩৩ হাজার) মতো রোগে হাজার শিশুর মৃত্যুও ঠেকাতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, ২০৩০ সাল নাগাদ এই প্রভাব এত ব্যাপক হবে যে শুধু নিউমোনিয়া প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু এড়ানো যেতে পারে।

ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের কারণে নিউমোনিয়া হয় এবং এই রোগে আক্রান্ত হলে শিশুদের ফুসফুস পুঁজ ও তরলের ভরে যায়, যার কারণে তাদের নিশ্বাস নিতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়।

এই রোগটি বাংলাদেশে শিশুদের অন্যতম বড় ঘাতক, যার কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১৩ শতাংশ শিশুর মৃত্যু হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকার মাধ্যমে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ এবং স্বল্প মূল্যের অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে সহজেই চিকিৎসা করা যেতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে এক বছরের কম বয়সী অনেক শিশুকে টিকা দেওয়া হয়নি এবং এই রোগের লক্ষণে ভোগা সত্ত্বেও অর্ধেকের বেশি সংখ্যক শিশু প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পায় না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোজুমি বলেন, সব চেয়ে দরিদ্র ও বঞ্চিত শিশুরাই নিউমোনিয়ায় মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে সবচেয়ে বেশি। ধনী পরিবারের শিশুদের তুলনায় দরিদ্র পরিবারের শিশুদের সেবা পাওয়ার সম্ভাবনা অর্ধেক এবং তাদের পাঁচ বছরের জন্মদিনের আগেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনাও দ্বিগুণ। নিউমোনিয়ার কারণে শিশুমৃত্যু বন্ধের সম্ভাবনার অগ্রগতি যথেষ্ট তরান্বিত হয়নি বা ন্যায্য নয়। এর জন্য স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি ও বায়ুদূষণসহ আন্তঃখাত সমন্বয়ে  প্রকল্প প্রয়োজন। ইউনিসেফ, সেভ দ্যা চিলড্রেন ও অন্য সহযোগী সংস্থা যৌথভাবে বাংলাদেশ সরকারকে নিউমোনিয়া মোকাবিলায় সহায়তা করে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
টিআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।