ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সমস্যায় জর্জরিত মাগুরা সদর হাসপাতাল, ভোগান্তিতে রোগী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
সমস্যায় জর্জরিত মাগুরা সদর হাসপাতাল, ভোগান্তিতে রোগী

মাগুরা: মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে দিনের পর দিন। বর্তমানে শীত মৌসুম থাকায় হাসপাতালে সেবা নিতে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগী সংখ্যা। হাসপাতালের বেডের সংখ্যা কম থাকায় অনেকে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাথরুম অপরিষ্কার, নোংরা পানিতে ভরে গেছে। নেই বাথরুমের দরজার ছিটকিনি ও লাইট।

১০০ বেডে রেখেই চলছে রোগীদের সেবা। রয়েছে লোকবল সংকট। ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল চালু হলেও লোক নিয়োগ না দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মাগুরাবাসী। জরুরি বিভাগে মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে রোগীদের দেখভাল।

মাগুর সদর হাসপাতালের এমএলএসএস সাবিয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে ১০০ বেড থাকলেও সবসময় প্রায় ৩শ রোগী থাকেন।  
 
চিকিৎসা নিতে আসা নিজনান্দুয়ালী গ্রামের বাসিন্দা আন্না বেগম বলেন, এক সপ্তাহ হলো হাসপাতালের বাথরুমগুলোতে নোংরা পানি জমে আছে। লাইট থাকলে তা নষ্ট। বাথরুম সবসময় অন্ধকার থাকে। ফলে রাতে রোগীদের যেতে সমস্যা হয়। আবার দরজা থাকলেও নেই ছিটকিনি।  

জীবন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি বলেন, সোমবার চাচিকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। বেডের সংকট থাকায় বাধ্য হয়ে তাকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
সমস্যায় জর্জরিত মাগুরা সদর হাসপাতাল, ভোগান্তিতে রোগী।  ছবি- বাংলানিউজ হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আরভিনা বেগম নামে একজন স্কুলশিক্ষিকা বলেন, এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের বাথরুমে নোংরা পানি জমে আছে, দেখার কেউ নেই। বাথরুমগুলো সবসময় পরিষ্কার রাখা জরুরি। তা নাহলে জীবাণু ছড়াবে, কিন্তু এখানে তা হচ্ছে না।

হাসপাতালে রোগীদের স্যালাইন দেওয়ার স্টান্ডের অভাব রয়েছে। নারী ওয়ার্ডে একটি মাত্র স্টান্ড দিয়ে স্যালাইন দেওয়ার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।
 
মাগুরা সদর হাসপাতালের বাবুচি শরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রান্নাঘর ও বাথরুমের নোংরা পানি মিলে একাকার। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ও মশা-মাছি জন্মাচ্ছে। ফলে রান্নাঘরে প্রবেশ করতে সমস্যা হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে যদি ড্রেনের ব্যবস্থা থাকতো। তাহলে সবার উপকার হতো। একটু বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। এখানে পানি বেরোনোর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
 
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. শফিকুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে যে পরিমান চিকিৎসক থাকার কথা তা নেই। পাঁচজন চিকিৎসক আছেন। তারা নানা কারণে ছুটিতে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে আমাদের কার্যাকালীন একটু সমস্যা হচ্ছে। তার উপর চলছে শীতকাল। এ সময় ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেশি থাকে। তাই রোগীকে সেবা দিতে তাৎক্ষণিকভাবে একটু বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। বেশি চিকিৎসক থাকলে এমনটা হবে না।
সমস্যায় জর্জরিত মাগুরা সদর হাসপাতাল, ভোগান্তিতে রোগী।  ছবি- বাংলানিউজ
মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক স্বপ্ন কুমার কুণ্ডু বলেন, হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ভালো রয়েছে। তবে, রান্নাঘরের সামনে বাথরুমের নোংরা পানি জমে থাকে। পানি বেরোনোর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। হাসপাতালের ড্রেনের ব্যবস্থা না থাকায় এমনটা হচ্ছে। গণপূর্ত বিভাগ ড্রেন নির্মাণ না করলে এ সমস্যা থেকেই যাবে। আমরা অনেকবার মাগুরা পৌরমেয়রের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি, কোনো কাজ হয়নি।  

হাসপাতালের চিকিৎসক নিয়োগ করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবগত করেছি। আশা করছি, দ্রুত নতুন চিকিৎসক পাবো।
 
মাগুরা গণপূত বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল আল মামুন বলেন, জেলা সদর হাসপাতালের ড্রেনের টেন্ডার হয়ে গেছে। চলতি সপ্তাহে কাজ শুরু হবে। আশা করছি, বর্ষা মৌসুমে আর পানি জমবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।