ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

তাপদাহে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৬
তাপদাহে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে ছবি: পিয়াস - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তাপদাহ যতো বাড়ছে ঢাকা শিশু হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ততোই বাড়ছে। অনেক অভিভাবক আসছেন তাদের শিশুদের নিয়ে।

কিন্তু পাচ্ছেন না বেড ।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে সাভার থেকে ১৭ দিনের শিশু নিয়ে শেরেবাংলা নগর ঢাকা শিশু হাসপাতালে আসেন মা উম্মে সুলতানা। চারদিন ধরে শিশুটি ডায়রিয়া ও ভাইরাস জনিত জ্বরে আক্রান্ত। শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বসে আছেন মা।
 
মা উম্মে সুলতানা বলেন, চারদিন আগে ডায়রিয়া শুরু হয়। এর পরে থেকে জ্বর। এখন আমার বাচ্চা কিছুই খায় না। গরমের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বর। হাসপাতালে ভর্তি করাবো ডাক্তার বলে বেড খালি নেই। ’
 
অতিরিক্ত রোগী আসার কারণে হিমশিম খাচ্ছেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তাররা। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে ১০০ থেকে ১৫০ শিশু ভর্তি থাকে। গরমের কারণে শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় দেড়শ শিশু ডায়রিয়া ও জ্বর জনিত রোগের কারণে হাসপাতালে এসেছে। বর্তমানে হাসপাতালে ২৫০ থেকে ৩০০ শিশু ভর্তি রয়েছে বলেও জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  
 
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. পার্থ প্রতীম পাল বাংলানিউজকে বলেন, যেখানে শীতকালে ১০০ রোগী ভর্তি হয় গরমে প্রায় আড়াই থেকে ৩০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। আমরা সব শিশু রোগীদের বেড দিতে পারছি না। গরমের কারণে প্রথমে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এর পরে জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে শিশুর শরীরে লাল লাল দাগও দেখা দিচ্ছে। এর সঙ্গে গরমে ঘেমে এক ধরনের অ্যাজমা ও পেটের নানা পীড়া দেখা দিচ্ছে। ’
 
গরমে শিশু সুরক্ষায় পরামর্শ দিয়ে ডা. পার্থ বলেন, গরমের মধ্যে কোনো ভাবেই শিশুকে ঘরের বাইরে বের করা যাবে না। সব সময় ঠান্ডা পরিবেশে রুমের মধ্যে রাখতে হবে। পানি ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে শিশুকে খাওয়াতে হবে। পানি ও খাবারের মাধ্যমে এই রোগ অধিক ছড়ায়। শিশু যে ঘরে থাকবে ঘরটি সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ’
 
হাসপাতালে মোট সিট ৬০০টি। কোনো বেডই খালি নেই। অনেক শিশুরা সিটের অভাবে মেঝতো রাখা হয়েছে। ডায়রিয়া ও জ্বর জনিত রোগে ঢাকা শিশু হাসপাতালের ১৯ নম্বর বেডে ভর্তি আছে ছয় মাসের একটি শিশু। হাসাপতাল থেকে জানানো হয় আরও কিছু দিন ভর্তি রাখতে হবে।
 
এই প্রসঙ্গে শিশুটির বাবা মামুনুর রশিদ জানান, প্রচন্ড গরমের কারণে আমার বাচ্চা ৭ দিন ধরে অসুস্থ। হাসাপতালে দু’দিন ধরে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তার বলে আরও কিছু দিন রাখতে হবে। ’
 
বেড খালি না থাকায় অনেক শিশুকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর খিলগাঁও থেকে দুই মাসের শিশু তানজিন তাইওয়াতকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন শাওন তানভির। ডায়রিয়া ও জ্বর জনিত সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে চাইলেও ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন তিনি।
 
তানভির বাংলানিউজকে বলেন, জ্বর ও বাচ্চার শরীরের লাল লাল দাগ দেখা দিয়েছে। ভর্তি করাতে চাইলাম ডাক্তার বলছে বাসায় ওষুধগুলো খাওয়ালেই সেরে যাবে। দুই দিন পরে আবারও দেখা করতে বলেছে। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৬
এমআইএস/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।