ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ওষুধের দোকান কমানোর নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৫
ওষুধের দোকান কমানোর নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছবি: জি এম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এবং ওষুধ শিল্পে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ঢাকাসহ সারাদেশে ওষুধের দোকান কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
 
শনিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ওয়ান ফার্মা’ নামে একটি কোমম্পানির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালককে তিনি এ নির্দেশনা দেন।



প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অলিতে গলিতে মুড়ি-মুড়কির দোকানের মতো ওষুধের ব্যবসা চলতে পারে না। সারা দুনিয়ার কোথাও এটা নেই। এতে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিদিনই বাড়ছে। কোনোভাবে একটি লাইসেন্স যোগাড় করেই যে কেউ ওষুধের দোকান খুলে বসছেন। এটা চলতে দেওয়া হবে না।

নাসিম বলেন, প্রকৃত ফার্মাসিস্টকেই কেবল আসল ও নবায়নকৃত লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করতে হবে।

নাসিম আরও বলেন, বারবার আহ্বান জানানোর পরও ওষুধের দাম কমানো হচ্ছে না। দেশের বাজারে অধিকাংশ ওষুধের দামই বিশ্ব বাজারের চেয়ে অনেক বেশি। এক্ষেত্রে মুনাফাখোর মনোবৃত্তি থেকে বের হয়ে এসে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে দাম আনতে হবে।

কেবল দামই নয়, মালিকরা বেশি লাভের আশায় বিদেশে রফতানির ওষুধ এবং স্থানীয় বাজারে বিক্রির ওষুধের মানের পার্থক্য তৈরি করছেন। এগুলো অবশ্যই দূর করতে হবে, যোগ করেন তিনি।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আপনারা (ওষুধ শিল্প মালিকরা) ওষুধ রফতানি করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছেন, তা মানছি। তবে আপনাদের বিবেকবান হতে হবে। ওষুধ শিল্পে ভেজাল আছে। আমি দেখেছি। কিছু ক্রিমিনাল আছে। এরা কারখানা করেছে। ক্লিনিক করেছে। এদের মধ্যে চিকিৎসকও আছে। এরা লাইসেন্স নিয়েই অপকর্ম করছে। মানুষ মারছে। এরা আমাদের পরিচিত। আপনারা সবাই এদের চেনেন। এদের প্রতিরোধের সময় এসেছে।

তিনি বলেন, জনস্বার্থে কারও জন্য ছাড় নেই। কেউ তদবির নিয়ে আসবেন না। এদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো রাজনীতি নেই। এরা ক্রিমিনাল। এরা মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করে। তামাশা করে।

ওষুধ প্রশাসনের দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের কিন্তু আইন আছে। প্রয়োগ নেই। আমাদের দেশের মতো এতো আইন আমেরিকাতেও নেই।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম বলেন, দেশে বর্তমানে শতাধিক মেডিকেল কলেজ আছে, ৭০ হাজারের ওপর ডাক্তার আছে। প্রয়োজনীয় ওষুধের ৯৭ ভাগই দেশে উৎপাদন হচ্ছে। দরকার কেবল মানসম্মত সেবা ও দাম নির্ধারণ।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, দেশের উন্নয়নে ওষুধ শিল্পের অবদান অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশে বর্তমানে টিকা, ইনস্যুলিনের মতো ওষুধ তৈরি হচ্ছে। ২৮৭টি কারখানা দেশের চাহিদা পূরণ করছে। ১৪০টি দেশে বছরে ৮শ’ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ রফতানি করছে ৯৭টি কারখানা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের কমান্ডেন্ট জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, ওয়ান ফার্মার নির্বাহী পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৫
আরএম/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।