ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দেশে হচ্ছে বিশ্বমানের অটিস্টিক একাডেমি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫
দেশে হচ্ছে বিশ্বমানের অটিস্টিক একাডেমি

ঢাকা: অটিস্টিক শিশুদের মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে ‍যুক্ত করা, উন্নত চিকিৎসা দান ও পুনর্বাসনে বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের অটিস্টিক একাডেমি।

সম্প্রতি, রাজধানীতে ‘অটিস্টিক একাডেমি স্থাপন ও প্রকল্পের পরিসর বৃদ্ধি’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।



শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সাত হাজার চারশ ১০ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে ওই সভায়।

এর মধ্যে একাডেমি স্থাপনের জন্য রাজধানীর মহাখালী এলাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশে দুই একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন, প্রকল্পটির পরিচালক (পিডি) সালমা বেগম।

সালমা বেগম জানান, চার বছর ধরে অটিস্টিক শিশুদের শিক্ষা, চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও পুনর্বাসন বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ভাবে সরকার।

২০১৪ সালে ‘স্টাবলিসমেন্ট অব অটিস্টিক একাডেমি প্রজেক্ট (ইএএপি)’ নামে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সরকারি অর্থায়নে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।  

সায়মা ওয়াজেদের সুপারিশে প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅ্যাবিলিটিস (এনএএএনডি)’ রাখার প্রক্রিয়া চলছে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৪ কোটি ১০ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সালমা বেগম বলেন, মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে অটিস্টিক শিশুদের পরিচিত করতে বিশ্বমানের স্বয়ংসম্পূর্ণ ও যুগোপযোগী হবে এ একাডেমি।

পাশাপাশি ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে এ শিশুদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলা, আবাসন ও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা এবং সচেতনতা তৈরি এর প্রধান উদ্দেশ্য।

এ একাডেমিতে অটিস্টিক শিশুদের প্রশিক্ষণ, কাউন্সিলিং, প্রতিবন্ধকতা শনাক্তকরণ, থেরাপি, চিকিৎসা, নাচ, গান, ছবিআঁকা, জিম, প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম, হোস্টেল, অডিটরিয়াম, মাঠ এবং সুইমিং পুলের ব্যবস্থা থাকবে।

অটিস্টিক শিশুবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে মূলধারার শিক্ষায় অটিজম ও স্নায়ুর বিকাশজনিত জনগোষ্ঠীকে একীভূত করতে সরকার এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানান তিনি।

সালমা বেগম বলেন, প্রচলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অটিস্টিক শিশুরা সুযোগ পায় না। এ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে সারা দেশের অটিস্টিক শিশুদের সেবার সুযোগ তৈরি হবে।

একাডেমির অবকাঠামো, জনবল, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়েছে।
 
অটিস্টিক শিশুদের একাডেমি একটু স্পর্শকাতর বিষয় উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, বৃহত্তর পরিসরে করতে হলে ঢাকার বাইরে করাই ভালো।
 
তিনি বলেন, এ একাডেমিতে সব অটিস্টিক শিশুকে রাখা যাবে না। সে ক্ষেত্রে শিশু ও তার অভিভাবকদের প্রশিক্ষণ এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
 
তিনি বলেন, অটিস্টিক শিশুদের জরুরি চিকিৎসা দরকার। তাই, একাডেমির কাছাকাছি যে কোনো একটি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে, যাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এসব শিশু চিকিৎসা পায়।

এ একাডেমি চলতি বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অটিজম প্রতিরোধে এ একাডেমিতে একটি গবেষণা কেন্দ্রও খুলতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অটিস্টিক শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে। অটিস্টিক শিশুদের দক্ষতা অর্জনে সরকার কাজ করছে।

তিনি বলেন, ঢাকায় একাডেমি স্থাপন করে সব শিশুকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, প্রকল্পটি বিশ্বমানের। এ একাডেমি হলে বাংলাদেশ অটিস্টিক শিশুদের আদর্শ হয়ে থাকবে।

একাডেমিটি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।