ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সর্বাধিক ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

ধোঁয়াহীন তামাক মহামারির কবলে বিশ্বস্বাস্থ্য

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৪
ধোঁয়াহীন তামাক মহামারির কবলে বিশ্বস্বাস্থ্য

ঢাকা: ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগ-ব্যাধি সৃষ্টিকারী ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য ব্যবহার করে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষ। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সত্ত্বেও এই পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সারা বিশ্বেই উপেক্ষিত একটি বিষয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে।
 
ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য ব্যবহারের ঝুঁকি হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নীতিনির্ধারক, গবেষক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যসহ সবধরনের তামাকপণ্যের ব্যবহার হ্রাসকরণে নীতিনির্ধারকরা  উচ্চহারে করারোপ; সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রবর্তন; বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা নিষিদ্ধের মতো শক্তিশালী ও স্বীকৃত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করবেন বলে প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয় বিশ্বজুড়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে যে ধরনের পদক্ষেপই গ্রহণ করা হোক না কেন তা থেকে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বাদ দেওয়া চলবে না।
 
U.S. Centers for Disease Control and Prevention I U.S. National Cancer Institute at India’s National Conference on Tobacco or Health in Mumbai এর যৌথ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত `2014 Smokeless Tobacco and Public Health: A Global Perspective' নামক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে যা ভারতের মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত একটি কনফারেন্সে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়।
   
তামাক নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক কর্মকাণ্ড বেশিরভাগই ধোঁয়াযুক্ত তামাকপণ্য ব্যবহার কেন্দ্রিক, যদিও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার দিন দিনই বাড়ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এই হার ক্রমবর্ধমান। কেবল বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতেই বসবাস করে বিশ্বের মোট ৮৬ শতাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাকসেবনকারী। সংখ্যায় যা প্রায় ২৫৯ মিলিয়ন।   এদের মধ্যে নারী সেবনকারীর (বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশে) সংখ্যাই বেশি।
 
ধোঁয়াবিহীন তামাক আসক্তি তৈরি করে; মুখগহ্বর, খাদ্যনালী ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার সৃষ্টি করে; এবং প্রজনন স্বাস্থ্যে (যেমন: মৃত শিশু ও কম ওজনসম্পন্ন শিশু জন্ম) মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এছাড়া ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের সঙ্গে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোকেরও গভীর সম্পর্ক আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ফলাফল বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত বলে গবেষণা প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
 
বিশ্বব্যাপী ধোঁয়াবিহীন তামাকের বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যবহার চালু থাকায় এই পণ্য সর্ম্পকে পুরোপুরি ধারণা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। নানা ধরনের মিশ্রন ব্যবহার করে তৈরি করা হয় বিচিত্র সব মনোহরি ও সুগন্ধীযুক্ত তামাকপণ্য। অনেক ক্ষেত্রে তামাকজাত নয় এমন পণ্যের সঙ্গে তামাকপণ্য মিশিয়ে চলে বাজার দখলের প্রচেষ্টা। ধোঁয়াযুক্ত তামাকপণ্য বাজারজাতকরণে নানাবিধ নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী হওয়ায় তামাক কোম্পানিগুলো এখন ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের সঙ্গে আকর্ষণীয় সব ফলমূলের ফ্লেভার মিশিয়ে বাজারজাত করছে। এমনকি যা আমাদের কোমলমতি শিশুদেরকেও আকৃষ্ট করছে।

ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার একটি বৈশ্বিক সমস্যা যা ৩০০ মিলিয়ন মানুষকে মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে আটকে রেখেছে। বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাকসেবনকারীর বাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। কেবল ভারত (২২০), বাংলাদেশ (২২) এবং মায়ানমার (১১) মিলে ধোঁয়াবিহীন তামাকসেবনকারীর সংখ্যা ২৫৯ মিলিয়ন। এর মধ্যে নারী সেবনকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ভারত ও বাংলাদেশে।

শিশু ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি আফ্রিকায়। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কঙ্গো, নামিবিয়া, লিওসোথো, ডিজিবটি ও বত্সওয়ানা ।

এফসিটিসি অনুসারে রাষ্ট্রসমূহ তামাক নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করার কথা তার মধ্যে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও যেন যথাযথভাবে অর্ন্তভুক্ত করা হয় সে বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনে জোর তাগিদ দেওয়া হয়। -বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশ সময় : ১৬৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।