ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় আইচি মেডিকেলের ১৫০ শিক্ষার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় আইচি মেডিকেলের ১৫০ শিক্ষার্থী

ঢাকা: প্রতিষ্ঠার ছয় বছরেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে ব্যর্থ হওয়াসহ কলেজ কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করায় মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন রাজধানীর উত্তরার বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আইচি’র ১৫০ শিক্ষার্থী।  

তারা বলছেন, সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর অনাপত্তিপত্র দিলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মাইগ্রেশন ঠেকাতে নানা টালবাহানা শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে কলেজটির শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, তারা এ বছরের জুন থেকে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বর্জন করে আসছেন। তাতেও মালিক পক্ষের কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা আগস্ট মাসে তাদের কাছে কলেজের অনুমোদনের ব্যাপারে উদাসীন কেন জানতে চান। তারা তাদের ভবিষ্যতের কথা তুলে ধরলে আইচি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজের অনুমোদনের ব্যাপারে ২৮ আগস্ট অপরাগতা প্রকাশ করে।  

শিক্ষার্থীদের অন্য কলেজের মাইগ্রেশনে তাদের কোনো আপত্তি নেই বলে জানান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মন্ত্রণালয় থেকে মাইগ্রেশনের জন্য তাদের কাছে বিভিন্ন ডকুমেন্ট চাইলে তারা যথাসময়ে তা জমা দিয়েছেন। কিন্তু অতি সম্প্রতি কলেজ কর্তৃপক্ষ উদাসীনতা শুরু করেছে। গুটিকয়েক শিক্ষক বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মাইগ্রেশনকামী শিক্ষার্থীদের কলেজে রাখার প্রচেষ্টা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ তাদের।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৭ সালে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনা ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১১ (সংশোধিত) এর বাস্তবায়নের জন্য কলেজটিকে কিছু শর্তারোপ করে। এটি পালনে ব্যর্থ হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আইচি মেডিকেল কলেজকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস কোর্সে কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার বিষয়ে চিঠি দেয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, পরে এ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ হাইকোর্ট বিভাগে মন্ত্রণালয়ের জারি করা সাময়িক ভর্তি স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করায়। কিন্তু ওই ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক তালিকাভুক্ত হননি।

মাইগ্রেশন প্রক্রিয়ার এই অনিশ্চয়তার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে উল্লেখ করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত ভবিষ্যতের আশায় অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশন দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি নেই বলে অনাপত্তিপত্র জারি করে। কিন্তু এত মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বন করছে। মাইগ্রেশন সংক্রান্ত কাজের জন্যে বিভিন্ন ডকুমেন্টস চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ বা গড়িমসি করছে। ফলে মাইগ্রেশন প্রক্রিয়ায় প্রচণ্ড কালক্ষেপণ হচ্ছে। তাছাড়া হোস্টেলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছাড়াতে বিভিন্ন ফন্দি করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এখন আমাদের শিক্ষাজীবনের অনেকখানি সময় নষ্ট হয়ে গেছে। মানহীন কোনো মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করে মানুষের জীবন নিয়ে খেলার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা সবাই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমাদের ভবিষ্যতে ভালোমানের ডাক্তার হওয়ার জন্য নিয়মিত অধ্যয়ন করা জরুরি। এমতাবস্থায় আমাদের দ্রুত মাইগ্রেশন না করলে অনেক শিক্ষার্থীর অকালে ঝড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।  

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করে ১৫০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বাঁচাতে দ্রুত মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করার আহ্বান জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
ইএসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।