ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

রোনালদোর পর মেসিও সৌদির প্রস্তাব নাকচ করলেন

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
রোনালদোর পর মেসিও সৌদির প্রস্তাব নাকচ করলেন

মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব সম্প্রতি বেশকিছু সংস্কারমূলক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ একটি।

আর নিজেদের সংস্কৃতি ও পর্যটনের প্রচারণার জন্য বড় কোনো তারকাকে দরকার তাদের। এক্ষেত্রে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছিলেন সৌদি সরকারের প্রথম পছন্দ। কিন্তু এমন প্রস্তাবে 'না' বলে দিয়েছেন জুভেন্টাসের পর্তুগিজ উইঙ্গার। এমনকি তাদের দ্বিতীয় লক্ষ্য লিওনেল মেসিও এই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম ফুটবল স্পানা।

এর আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম 'ডেইলি মেইল' এর এক রিপোর্টে রোনালদোর বিষয়টি নিয়ে দাবি করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সৌদি আরবের পর্যটন বিভাগের 'মুখ' হওয়ার জন্য বছরে ৬ মিলিয়ন ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬২ কোটি টাকা) প্রস্তাব পেয়েছিলেন রোনালদো। তাকে শুধু সৌদি আরবের কিছু দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করতে হতো আর তার নাম-ছবি ব্যবহার করা হতো বিভিন্ন প্রচারণার কাজে।

এদিকে রোনালদো ছাড়াও মেসির কাছেও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন অধিনায়ক তখন সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে 'দ্য টেলিগ্রাফ' এর সঙ্গে কথা বলতেও রাজি হননি দুই মহাতারকার প্রতিনিধিরা। মানবাধিকারের প্রশ্নে ইমেজ সংকটে ভুগছে সৌদি আরব। এটাই 'না' বলার মূল কারণ বলে দাবি করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

সম্প্রতি ইতালিয়ান সুপার কাপে নাপোলিকে হারিয়ে জুভেন্টাসের শিরোপা জেতার ম্যাচে গোল করে ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসেছেন রোনালদো। তার ঝুলিতে আছে পাঁচটি ব্যালন ডি'অরসহ অসংখ্য শিরোপা। অন্যদিকে মেসি রেকর্ড ছয়টি ব্যালন ডি'অরের মালিক। ক্যারিয়ারে অসংখ্য শিরোপা ও রেকর্ড আছে তার ঝুলিতেও। আধুনিক ফুটবলের এই দুই সেরার একজনকে তাই নিজেদের পর্যটনের পোস্টার বয় হিসেবে পেতে চায় সৌদি আরব।

মানবাধিকার নিয়ে সমালোচনার মুখেই সম্প্রতি 'ভিজিট সৌদি' নামের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটির সরকার। এর উদ্দেশ্য সৌদি আরবকে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। যদিও করোনা মহামারির কারণে তাদের এই পরিকল্পনা এখন স্থগিত হয়ে আছে। তবে করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর এই নিয়ে জোরেশোরে প্রচারণা চালাতে চায় সৌদি আরব। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য মেসি কিংবা রোনালদোকে এই পরিকল্পনার অংশ করতে। কিন্তু দেশটির সঙ্গে নাম জড়ালে সমালোচনার মুখে পড়ার জোর সম্ভাবনা আছে।

অতি সম্প্রতি খেলাধুলাকে ব্যবহার করে নিজেদের ইমেজ উজ্জ্বল করার পরিকল্পনা করেছে সৌদি সরকার। এর মধ্যে গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপ আয়োজনও ছিল, যেখানে অংশ নিয়েছিল বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের মতো ফুটবলীয় জানান্টরা। সঙ্গে ছিল অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ ও ভ্যালেন্সিয়া। সেসময়ের বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে স্বীকার করেছিলেন যে, তারা অর্থের টানেই সেখানে খেলতে গেছেন। কারণ এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনকে তিন বছরে ১০২ মিলিয়ন পাউন্ড দেবে সৌদি আরব।

শুধু ক্লাব পর্যায়ের খেলাই নয়, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মতো শীর্ষ দলকে নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচও আয়োজন করেছিল সৌদি আরব। ২০১৯ সালের নভেম্বরে দক্ষিণ আমেরিকার দুই ফুটবল পরাশক্তি মুখোমুখি হয়েছিল। ওই ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন মেসি। এমনকি সৌদি 'জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটি' এর চেয়ারম্যান তুর্ক আল-শেখের সঙ্গে সাক্ষাতও করেছিলেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। তুর্ক আল-শেখ আবার স্পেনের দ্বিতীয় সারির ফুটবল টুর্নামেন্ট সেগুন্দা ডিভিশনের ক্লাব আলমেরিয়ার অন্যতম মালিকও।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।