ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ঋতুপর্ণার গোল ছোটনের চোখে ‘বিশ্বমানের’

নিউজরুম এডিটর, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৪
ঋতুপর্ণার গোল ছোটনের চোখে ‘বিশ্বমানের’

‘আমার কপালে গোল জোটে না’-  বেশ আক্ষেপ নিয়েই কথাটি বলেছিলেন ঋতুপর্ণা। কারণ সাফের গ্রুপ পর্বে একটি গোলও করতে পারেননি।

যদিও গোলে অবদান রেখেছিলেন ঠিকই। সেমিফাইনালে ভুটানের বিপক্ষে এসে সেই গেরো খুললেন তিনি। আর ফাইনালে তো উপহার দিলেন দর্শনীয় এক গোল। তার সেই গোলই এনে দিয়েছেন শিরোপার সুবাস।

কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ৮১ মিনিটে বাঁ প্রান্তের দুরূহ কোণ থেকে ভাসানো শটে জয়সূচক গোলটি করেন ঋতুপর্ণা। যা কেবল  মুগ্ধতাই ছড়িয়েছে নারী দলের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের মনে। তার চোখে, ঋতুপর্ণার গোলটি বিশ্বমানের।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, ‘সুপার গোল, বিশ্বমানের গোল। আমিও একটু বিস্মিত ছিলাম যে, শুরুর ম্যাচগুলোতে ঋতু গোল পাচ্ছিল না। ক্রস করছে কিন্তু শট নিচ্ছে না। আমি থাকাকালীন, ডি বক্সে গেলেই তাকে বলতাম যে শুট করো। ভুটানের বিপক্ষে সে গোল করার পর আমার ভালো লেগেছে। আজকের গোলটা দুর্দান্ত, চিন্তাই করা যায় না এমনটা। তার সঙ্গে নেপালের ডিফেন্ডার লেগেছিল, কিন্তু সেকেন্ডের মধ্যেই বল শুট করে দুর্দান্ত এক গোল করেছে সে। ’    

‘খেলাটা খুবই ভালো লেগেছে। প্রতিকূল পরিবেশে সাড়ে ১৫ হাজার দর্শকের সামনে খেলাটা সহজ ছিল না। শুরু থেকেই তারা আক্রমণাত্মক ছিল, ৯০ মিনিট জুড়েই নিজেদের খেলায় রেখেছে। নেপাল ডিফেন্স শক্ত রেখে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠছিল বারবার। কিন্তু বাংলাদেশ প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণাত্মক থেকেছে এবং তাদের অ্যাপ্রোচ ছিল দারুণ। ’

মাঠে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিলেও মাঠের বাইরের পরিস্থিতি পক্ষে ছিল না মেয়েদের। যেখানে উঠে আসে দলের ভেতর সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের গুঞ্জন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ‘অতি সক্রিয়’ থাকা নিয়েও অভিযোগ উঠেছিল। যদিও ছোটন এসবের কিছুতেই বিশ্বাস করেন না।

তিনি বলেন, ‘সেসব মিথ্যা ও বানোয়াট। এটা আসলে খুব দুঃখজনক। মেয়েদেরকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হবে, এমন পরিস্থিতির পরও তারা সেসবে মনোযোগ না দিয়ে খেলায় পুরোপুরি নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। আমার মনে হয়, তারা পণ করে রেখেছিল যে আমরা দেশের জন্য খেলতে এসেছি এবং আমাদের খেলতে হবে। দেশের জন্য সবকিছু উজাড় করে দিয়েছে তারা। ’ 

অভিযোগ ছিল ছোটনের ওপরও। শুধু তা-ই নয়, সাবেক আরও যারা কোচ ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের প্ররোচিত করার অভিযোগ আনেন বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ছোটন বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যদি এরকমই হতো তাহলে মেয়েরা এভাবে পারফর্ম করত না এবং চ্যাম্পিয়ন হতো না। মেয়েরা পারফরম্যান্স দিয়েই প্রমাণ করেছে এই অভিযোগ একদমই সত্য নয়। ’

গত আসরে ছোটনের কোচিংয়েই প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু গত বছর হঠাৎই হেড কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এবার সাফ জয়ের পর বাটলারও দিয়েছেন পদত্যাগের ঘোষণা। পুরোনো সেই জায়গায় আবারও ফিরে যেতে আগ্রহী ছোটন। তবে যদি-কিন্তুর বার্তাও দিয়ে রাখলেন তিনি।  

সাবেক এই কোচ বলেন, ‘জাতীয় দলে কাজ করা প্রতিটা মানুষের স্বপ্ন ও সৌভাগ্য বলা যায়। আমি ছেড়ে এসেছি, কারণ তখন বিরুদ্ধ একটা পরিবেশ ছিল। মনে হয়েছে যে, ওই মুহূর্তেই থামা উচিত। কাজ করার যদি সেরকম পরিবেশ থাকে তাহলে ভেবে দেখব। দেশের হয়ে কাজ করাটা তো গর্বের ব্যাপার। ’

বাংলাদেশ সময়ট: ০২০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৪
এএইচএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।