ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

উপায়হীন মানুষ পথে পথে

মো. রাজীন উদ্দিন চৌধুরী, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২১
উপায়হীন মানুষ পথে পথে আনারস বিক্রেতা জহির হোসেন

ঢাকা: জহির হোসেন মিরপুর বাউনিয়া বস্তিতে স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে থাকেন। এটা তার দ্বিতীয় সংসার।

মৌসুমী ব্যবসা করে দিন চলে জহির হোসেনের।  

শুক্রবার (৩০ জুলাই) ‘লকডাউন’ আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে ৫০টি আনারস নিয়ে বের হয়েছেন। কিন্তু বিক্রি হয়েছে ১৫টি। সব বিক্রি হলে হাতে আসবে ৩০০- ৪০০ টাকা, যা দিয়ে জ্বলবে তার চুলার হাড়ি।  

‘দিন এনে দিন খাওয়া’ এই মানুষগুলো অসহায় হয়ে কঠোর লকডাউন অমান্য করে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন। ৬৫ বছর বয়সী জহির হোসেনের ছেলের বয়স ১২ বছর। স্ত্রী-ছেলের খাবারের ব্যবস্থা করতেই তিনি বাধ্য হয়ে আনারস বিক্রি করতে রাস্তায় নেমেছেন। গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে মিরপুর ১২ নম্বর পর্যন্ত চলে তার বেচা বিক্রি।  

কঠোর লকডাউন না মেনে কেন নেমেছেন এই হকারি ব্যবসায়? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলানিউজকে জহির হোসেন বলেন, সরকারের কথা মতো লকডাউনের প্রথম দু’দিন বাসায় ছিলাম। পড়াশোনা না জানা থাকায় নতুন দিনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও পারছি না। সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার কেউ নেই। তাই বাধ্য হয়েই রাস্তায় হকারি করছি।

পুলিশের আচরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জহির হোসেন বলেন, পুলিশের বাধায় তো পড়তেই হয়। রাস্তায় মানুষ তো তেমন নাই, আশেপাশে তাকালেই তো দেখা যায় কে কোথায় কি করতেসে। তারপরেও চেষ্টা করি লুকিয়ে লুকিয়ে বেচা বিক্রি করার।

আনারসকে কেন বেছে নিলেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথম দিন আম বিক্রি করেছি, অর্ধেক আম বাসাতে নিয়ে যাওয়া লাগছে। আনারস বিক্রি বেশি দেখে পরের দিন থেকে আনারস বেচি। এইগুলো আর বাসায় ফেরত নিয়ে যেতে হয় না।

বলতে বলতেই পুলিশের সাইরেনের আওয়াজ কানে ভেসে এলো। চারিদিকে ছোটাছুটি শুরু হয়ে গেল। জহির হোসেন আস্থে ধীরে বললেন, বাবা যাই, আনারস তো আর নিবেন না!

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২১
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।