ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

ইতিহাসের এই দিনে

বনফুল ও কমলকুমার মজুমদারের প্রয়াণ

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১
বনফুল ও কমলকুমার মজুমদারের প্রয়াণ

প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই সেখানে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।

তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এ গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।

মঙ্গলবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২৬ মাঘ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

ঘটনা

১৬৩৯: অলিভার ক্রোমওয়েলের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের শাসনের শুরু হয়।

১৭৫৭: ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির লর্ড ক্লাইভ ও বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার মধ্যে আলিনগর সন্ধি হয় এবং বৃটিশরা কলকাতার দখল নেয়।

১৮৪৩: মাইকেল মধুসূদন দত্ত খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন।

১৯৫৭: মাওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন।

১৯৬৯: প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে যায় বোয়িং ৭৪৭ বিমান।

১৯৭২: বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কিউবা।

১৯৯১: লিথুনিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পক্ষে ভোট দেয়।

১৯৯৪: গাজা ও জেরিকো থেকে ইসরাইলি অপসারণ ও সেখানে ফিলিস্তিনি স্বায়ত্তশাসন প্রদানে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

১৯৯৪: নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।

জন্ম

১৭৩৭: টমাস পেইন, ইংরেজ-মার্কিন দার্শনিক, লেখক এবং কর্মী

১৭৭৩: উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবম প্রেসিডেন্ট

১৮৪৭: কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রখ্যাত বাঙালি আইনজ্ঞ অধ্যাপক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙালি রেজিস্ট্রার

১৯০২: মণীশ ঘটক, বাঙালি গল্পকার, কবি এবং ঔপন্যাসিক

১৯২৩: কবীর চৌধুরী, বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক এবং অনুবাদক

১৯৩০: সুভাষ দত্ত, বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অভিনেতা

১৯৩৫: শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৪২: এম এ জলিল, বাংলাদেশের একজন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ এবং সামরিক কর্মকর্তা

১৯৪৪: অ্যালিস ওয়াকার, মার্কিন ঔপন্যাসিক, ছোট গল্প লেখক এবং কবি

১৯৪৫: ইয়োশিনোরি ওসুমি, জাপানিজ কোষ জীবতত্ত্ববিদ, চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী

১৯৭০: গ্লেন ম্যাকগ্রা, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার এবং ধারাভাষ্যকার

১৯৮১: টম হিডেলস্টোন, ইংরেজ অভিনেতা, প্রযোজক এবং সঙ্গীত পরিবেশক

মৃত্যু

১৮৮১: ফিওদোর দস্তয়েভস্কি, বিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক।

১৮৯৪: নবগোপাল মিত্র , ঊনবিংশ শতকের জাতীয়তাবাদের মহান কর্মী ও 'হিন্দুমেলা' র মূল সংগঠক

১৯৭৪: অর্ধেন্দুকুমার গঙ্গোপাধ্যায়, বাঙালি শিল্প সমালোচক এবং অধ্যাপক

১৯৭৯: বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, বাঙালি সাহিত্যিক

বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও কবি। তিনি ‘বনফুল’ ছদ্মনামেই অধিক পরিচিত।

১৮৯৯ সালের ১৯ জুলাই অবিভক্ত ভারতবর্ষের বিহার রাজ্যের মণিহারীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ডা. সত্যচরণ মুখোপাধ্যায় ও মাতা মৃণালিনী দেবী।

বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় কৈশোর থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে নিজের নাম লুকোতে তিনি বনফুল ছদ্মনামের আশ্রয় নেন। ১৯১৫ সালে সাহেবগঞ্জ স্কুলে পড়ার সময় মালঞ্চ পত্রিকায় একটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার সাহিত্য জীবনের সূত্রপাত ঘটে। ‘শনিবারের চিঠি’তে ব্যাঙ্গ কবিতা লিখে সাহিত্য জগতে নিজের আসন স্থায়ী করেন তিনি। এছাড়াও, নিয়মিত প্রবাসী, ভারতী এবং সমসাময়িক অন্য পত্রিকায় ছোটগল্প প্রকাশ করতেন।

লেখক হিসেবে বনফুল হাজারেরও বেশি কবিতা, ৫৮৬টি ছোট গল্প, ৬০টি উপন্যাস, ৫টি নাটক, জীবনী ছাড়াও অসংখ্য প্রবন্ধ রচনা করেছেন।

সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি পদ্মভূষণ উপাধি লাভ করেন। এছাড়াও, তিনি শরৎস্মৃতি পুরস্কার (১৯৫১), রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৬২), বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯৬৭) পান। ১৯৭৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিলিট উপাধি দেয়।

১৯৭৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৭৯: কমলকুমার মজুমদার, প্রখ্যাত বাঙালি ঔপন্যাসিক

কমলকুমার মজুমদার বিংশ শতাব্দীর একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক, যিনি আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিগণিত। তাকে বলা হয় ‘লেখকদের লেখক’।

তার উপন্যাস ‘অন্তর্জলী যাত্রা’ অনন্যপূর্ব আখ্যানভাগ ও ভাষাশৈলীর জন্য প্রসিদ্ধ। বাংলা কথাসাহিত্য বিশেষ করে উপন্যাস ইয়োরোপীয় আদলে গড়ে উঠেছে, কমলকুমার মজুমদার সে প্রথা পরিহার করেছিলেন।

তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের দুরূহতম লেখকদের একজন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিখ্যাত ছিলেন; যেমন ‘সুহাসিনীর পমেটম’ উপন্যাসে ২৫০ পৃষ্ঠায় যতিচিহ্নবিহীন মাত্র একটি বাক্য দেখা যায়। তিনি বাংলা সাহিত্যের দুর্বোধ্যতম লেখক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। দীক্ষিত পাঠকের কাছে কমলকুমার অবশ্যপাঠ্য লেখক হিসেবেই সমাদৃত হলেও তিনি সাধারণ পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেননি।

১৯৬৯ সালে তার প্রথম গ্রন্থ ‘অন্তর্জলী যাত্রা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭০ সালে তার দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘নিম অন্নপূর্ণা’ প্রকাশিত হয়।

কমলকুমার মজুমদার ১৯১৪ সালের ১৬ নভেম্বর উত্তর চব্বিশ পরগনার টাকি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম প্রফুল্লকুমার মজুমদার ও মাতার নাম রেনুকাময়ী।

কমলকুমার মজুমদার ১৯৭৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২১
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।