ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

পেরুর দুর্গম নুয়েভার এক ফুটবল মাঠ 

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৮
পেরুর দুর্গম নুয়েভার এক ফুটবল মাঠ  নুয়েভা ইউনিয়নের ফুটবল মাঠ

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ‘নুয়েভা ইউনিয়ন’। দুর্গম বলতে একেবারেই পিছিয়ে পড়া। এখানে যেমন নেই বিদ্যুৎ, নেই সুন্দর বাধানো রাস্তা কিংবা জলপ্রবাহ। এমন আরও অনেক ‘নেই’ এর মধ্যে কেবল একটি ফুটবল মাঠ রয়েছে, যেটাকে ঘিরে রয়েছে তাদের সীমাহীন আনন্দ, আকাশছোঁয়া স্বপ্ন। এই মাঠ যেন নুয়েভার কুটিরবাসীদের নির্মল বিনোদনের ক্ষেত্র।

১৫ বছর আগে রাজধানী লিমা ঘেঁষে অঞ্চলটিতে আসা কুটিরবাসী পাহাড়ি ঢালুর একটি জায়গাকে সমতল করে এই মাঠ বানিয়ে ফুটবল খেলা শুরু করেন। এখানে যে অধিবাসীরা থাকেন, তারা অধিকাংশই পেরুর দরিদ্র প্রদেশগুলো থেকে এসে বসতি গড়েছেন।

ফুটবল খেলছেন নুয়েভার দুই অধিবাসীনুয়েভার ৪০ বছর বয়সী অধিবাসী এদগার চ্যাম্পাই বললেন, ‘মাঠের এ জায়গাটি ছিল পাহাড়। এখন যেমন দেখা যাচ্ছে, জায়গাটি তেমন ছিলো না। কিন্তু শুধু আমাদের দৃঢ় সংকল্প দিয়ে আমরা জায়গাটি খুড়তে শুরু করি। ’ নুয়েভার ঘাসহীন এ মাঠটি পেরু ফুটবল দলের জন্য তাদের আবেগের নিদর্শন। ৫৪ বছর বয়সী লুইসা আলকানতারা বলেন, পেরু যখন গোল করে, তখন খুবই আনন্দ পাই।

সোমবার থেকে শনিবার এ অঞ্চলের পুরুষরা কাজে ব্যস্ত থাকেন। এসময় নারীরা মাঠটিতে ফুটবল অথবা ভলিবল খেলেন। আর পুরুষরা শুধু রোববার ফুটবল খেলেন। সন্ধ্যার ফুটবল মাঠরোববার এ মাঠে উৎসব জমে। খেলার সময় তারা বিভিন্ন জনকে ছদ্মনামে ডাকে। যেমন: ‘বেবিফেস’ ‘শর্টার’। এসময় নারীরা চিচা নামের স্থানীয় এক ধরনের পানীয় বিক্রি করে। পুরুষরা এ পানীয় কিনে পান করে। ৩২ বছর বয়সী প্রধান খেলোয়াড় আয়োজক ভিক্টর অ্যানতোনিও বলেন, ‘নুয়েভা ইউনিয়নের অধিবাসীরা ফুটবল মাঠটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখে। ’

পেরু জাতীয় দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়ই স্বল্প আয়ের পরিবার থেকে উঠে আসা। অ্যানতোনিও আশা প্রকাশ করেন, ‘ভবিষ্যতে এ প্রত্যন্ত এলাকার মাঠ থেকেও হয়তো কেউ জাতীয় দলে খেলবে। এই মাঠ থাকায় আমরা তা ভাবতে পারছি। নয়তো পারতাম না। ’নুয়েভা ইউনিয়নের কুটিরনুয়েভার এ মাঠটি শুধু ফুটবল বা আনন্দের জন্য নয়। বিপদেও এ মাঠটিই তাদের আশ্রয়স্থল। ভূমিকম্প হলে তারা সবাই এ মাঠেই ছুটে আসে। নুয়েভাবাসীর কাছে এই মাঠ যেন তাদের উৎসবস্থল।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৮
এএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।