ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

ছবিতে সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
ছবিতে সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ- ছবি: বাংলানিউজ

বিরুলিয়া সাদুল্যাপুর থেকে ফিরে: প্রেম নিবেদনে গোলাপ নেই, এমনটা ভাবাই যায় না। গোলাপ শয্যায় প্রেমিক মার্ক অ্যান্টোনিওয়ের সঙ্গে মিলিত হতেন রানী ক্লিওপেট্রা। ইতিহাস বলে, দুনিয়া কাঁপানো নেপোলিয়নের স্ত্রীর ছিলেন দুনিয়ার সেরা গোলাপ বাগানের সম্ভার। রোমে আবার দরজায় গোলাপ আটকে রাখার অর্থ অন্তরঙ্গ গোপনীয়তা। এহেন গোলাপ ভাণ্ডারে যে বিবিধ রতন থাকবে তাতে আর আশ্চর্য কি!

সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
সৌন্দর্য ও লাবণ্যের প্রতীক গোলাপ। গোলাপ শীতকালীন ফুল হলেও বর্তমানে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে সারা বছরই।

বর্ণ, গন্ধ ও সৌন্দর্যের বিচারে গোলাপকে ফুলের রানী বলা হয়। পুষ্প প্রেমীদের সবচেয়ে প্রিয় ফুলও গোলাপ। কিন্তু কোথায় হয় এতো গোলাপ?
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
ঢাকার কাছেই তুরাগ তীরে ঘুরে বেড়ানোর এক গ্রামীণ পরিবেশে মনোরম সুন্দর জায়গা সাদুল্যাপুর, যা সবাই গোলাপ গ্রাম নামেই চেনেন। কারণ এই গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের জীবিকা গোলাপ চাষ করেই। বিরুলিয়া থেকে গ্রামের বুক চিরে চলে গেছে ইটের আঁকাবাঁকা সরু পথ। দুই পাশেই তৈরি করা হয়েছে গোলাপ বাগান। এসব বাগানে ফুটে আছে টকটকে লাল গোলাপ। সকালের শিশিরভেজা ফুলে নরম আলোর ঝিকিমিকি যেন এক চোখ জুড়ানো বাগান। গ্রামের পর গ্রাম একই নান্দনিক দৃশ্য। সাদুল্যাপুর, শ্যামপুর, মোস্তাপাড়া, গোলাপপুরসহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রামের জীবিকার প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মিরান্ডি জাতের রক্তলাল গোলাপের চাষ।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
চাষের গোলাপে গন্ধ নেই তেমন। তবে পুরোটা গ্রামই যেন গোলাপের বাগান! জমিগুলো ছেয়ে আছে মিরান্ডি জাতের লাল, হলুদ কত বর্ণের গোলাপে। যার কোনো ইয়াত্তা নেই। এখানের বাগান থেকে আপনি গোলাপ কিনে নিতে পারেন।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
আবার খুব খাম-খেয়ালী করতে বাগানে ঢুকে পড়লেও বিরক্ত হন চাষিরা। কারন অনেকে অজান্তেই ক্ষতি করে ফেলেন গোলাপের চারার ও ফুলের।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
ঢাকার বেশির ভাগ ফুলের চাহিদা এখান থেকে মেটানো হয়। শাহবাগ, আগারগাও, খামারবাড়ি, মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন ফুলের বাজারগুলোতে গোলাপের প্রধান যোগান দেন বিরুলিয়ার চাষিরা।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
স্থানীয় ফুল চাষিরা নিজেদের প্রয়োজনে এ গ্রামেই গড়ে তুলেছেন ফুলেরহাট। শ্যামপুর গ্রামে প্রতি সন্ধ্যায় বসে গোলাপের হাট। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগেই ঢাকায় এসে নিলামে বিক্রি করেন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবসের মতো বিশেষ উৎসবের দিনগুলোতে এ ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
মাঠের পর মাঠ গোলাপ চাষীদের ব্যস্ততা দেখা গেলো। কাটিং, গুটি কলম এবং চোখ কলমের কাজ করছেন তারা। নতুন গাছ উৎপাদনের প্রধান পদ্ধতি বাডিং বা চোখ কলম, যার মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে কাটা ফুলের উৎপাদন করা হয়ে থাকে।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
এই গোলাপ যে শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক তা নয়, গোলাপের পরিচর্যা করতে কষ্টও করতে হয় চাষী এবং কর্মচারীদের।   গোলাপের কাঁটা লেগে ক্ষত হয় চাষীর হাত।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
রঙ, গন্ধ ও সৌন্দর্যের জন্য গোলাপ ফুল সবার কাছেই প্রিয়। দেশে গোলাপের চাহিদা প্রায় সারা বছর। ঘর সাজানো, বিয়ে, গায়ে হলুদ, বিভিন্ন সভা, সমাবেশের মতো অনুষ্ঠানের স্থান ফুল দিয়ে সাজানো হয়। শহরের বাসিন্দাদের ভবনের ছাদ, বারান্দা বা সিঁড়ি ঘরটাই ভরসা। কিন্তু ঘরে কিংবা বাইরে, সযত্নেই চলছেই এই ভালবাসার ফুলের চাষ।
সাদুল্যাপুরে ভালোবাসার চাষ
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
এসআরএস/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।