ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

বাপ-দাদার পেশায় ভালো নেই উলিপুরের যুগী সম্প্রদায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
বাপ-দাদার পেশায় ভালো নেই উলিপুরের যুগী সম্প্রদায় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে ২৩ কিলোমিটার দক্ষিণে উলিপুর উপজেলার যুগীপাড়া গ্রাম। জন্মলগ্ন থেকে যুগী চুন তৈরির পৈতৃক এ পেশায় জড়িত যুগীপাড়ার ৬০-৭০টি পরিবার।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে অন্য কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় দিন ভালো কাটছে না যুগী সম্প্রদায়ের। বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে কোনোমতে জীবিকা নির্বাহ করছে পরিবারগুলো।

বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকলেও কাঁচামালের দুষ্প্রাপ্যতা আর অর্থাভাবে যুগী চুন তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের।

নদ-নদীসহ গ্রামাঞ্চলের ডোবা-নালা থেকে সংগ্রহকৃত শামুক-ঝিনুকই যুগী চুন তৈরির মূল উপাদান। বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি মাটির উনুনে শামুক-ঝিনুক সাজিয়ে আগুনে পুড়িয়ে চুন তৈরির উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর একটি পাকা গর্তে ছোট কাঠের গুঁড়ি দিয়ে চূর্ন করে পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয় যুগী চুন।

যুগী সম্প্রদায়ের গৃহবধূ শ্রী পুনো রানী ও মালতি রানী বাংলানিউজকে জানান, ইতোপূর্বে ডোবা-নালায় শামুক-ঝিনুক পাওয়া যেত সহজেই। যুগী গৃহবধূরা বাড়ির অন্যান্য কাজকর্মের পাশাপাশি বাড়িতে বসে কম খরচে চুন তৈরি করায় আয়ও ভালোই হতো।

যুগী চুন প্রস্তুতকারক রবীন্দ্র চন্দ্র দেব নাথ বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে কাঁচামালের দুষ্প্রাপ্যতায় এ পেশায় টিকে থাকাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ করে ডোবা-নালায় শামুক-ঝিনুক উৎপাদনের প্রতিকূল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা একান্ত প্রয়োজন।

উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবু আলা বাংলানিউজকে জানান, যুগী পরিবারগুলোকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। নতুবা সময়ের বিবর্তনে একদিন হারিয়ে যাবে পরিবশেগতভাবে চূন তৈরির সঙ্গে জড়িত যুগী সম্প্রদায়।

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
আরবি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।