ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে অজগর পরিবারে নতুন অতিথি 

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২০
বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে অজগর পরিবারে নতুন অতিথি  ডিম থেকে ফুটেছে অজগর ছানা। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বর্ষা মৌসুম সরীসৃপ প্রাণীদের প্রজননকাল। অন্য প্রাণীর মতো সাপও এসময় পরিবেশের জন্য সৃষ্টি করে পরবর্তী নতুন প্রজন্ম।

যা প্রকৃতিতে ভারসাম্য রক্ষা, খাদ্যশৃংখল নিয়ন্ত্রণসহ প্রতিবেশব্যবস্থার উপযোগী আরণ্যক উপাদানে পরিণত হয়।  

এই শ্রাবণেই নতুন অতিথি হয়ে এসেছে প্রায় আড়াই ডজন অজগর ছানা। শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে সদ্য জন্ম নেওয়া ছানারা একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।  

বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের স্ত্রী অজগর সাপটি ২৮ মে ৩১টি ডিম পাড়ে। পরে তা দিয়ে ২২ জুলাই থেকে ডিম ফোটা শুরু হয়েছে। প্রায় সবগুলোই শেষ। ৪/৫টি ডিম বাকি; এগুলোও বৃহস্পতিবারের মধ্যে ফুটে যাবে।  

অবমুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই বনবিভাগের সঙ্গে কথা বলে এগুলো লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বা সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হবে। অন্যবারের তুলনায় এবারের ছানাগুলো বেশ রিষ্টপুষ্ট হয়েছে।  

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, এর আগে ওই অজগরটি প্রথম ২০০২ সালের মে মাসে ৩২টি ডিম পেড়েছিল। ডিম পাড়ার ৫৯ দিন পর ২৮টি বাচ্চা ফুটেছিল। ২০০৪ সালের ১৩ মে ৩৮টি ডিম দেয়। সেবার ৬০ দিন পর বাচ্চা ফুটেছিল ৩২টি। ২০১১ সালের মে মাসে ৩০টি ডিম দেয়। সবশেষ ৪র্থ দফায় ২০১৯ সালের ৯ জুন মা অজগরটি ৩০টি ডিম দেয়। ডিম পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অজগরটি নিজেকে বৃত্তাকারে গুটিয়ে নিয়ে ডিম ঢেকে রেখে ‘তা’ দিতে শুরু করে। ১৬ জুলাই রাতে ডিম ছিদ্র করে প্রথম ৫টি অজগর ছানা ফোটে। ক্রমান্বয়ে ১৭ জুলাই ৩০টি ছানা বের হয়। প্রতিবারই ছানাগুলোকে সংরক্ষিত বনে অবমুক্ত করা হয়।

পুরুষ অজগরের সঙ্গে আমাদের স্ত্রী অজগরটির জোড়া মেলানো কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা পুরুষ অজগরটিকে বেশিদিন রাখি না; মাঝে মাঝে ধরি; আবার মাঝে মাঝে অবমুক্ত করে দেই। তখন আমাদের এখানের স্ত্রী অজগরটি একা হয়ে পড়ে। ২/১ বছর পর পর এভাবে ছানা ফুটলে ওগুলোকে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ছেড়ে অজগর প্রজাতিটিকে প্রকৃতিতে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছি। জানান সজল।  
  
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী গবেষক ড. কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এ অজগরের ইংরেজি নাম Burmese Python এবং বৈজ্ঞানিক নাম Python molurus. এক সময় আমাদের দেশে ‘বার্মিজ পাইথন’কে ভুল করে ‘রক পাইথন’ বলা হতো। পরে শুদ্ধ করে তাকে ‘বার্মিজ পাইথন’ বলা হচ্ছে। আমরা কখনোই আমাদের দেশে ‘রক পাইথন’ দেখিনি।  

পাইথন আসলে ডিপ ফরেস্টে (ঘন অরণ্য) না থেকে টেরিটরির (নির্বাচিত এলাকা) দিকেই বেশি থাকে। খাবার যেদিকে বেশি সেদিকেই চলে আসে। এ সাপটি সিলেট, চট্টগ্রাম এবং খুলনা বিভাগের সংরক্ষিত বনগুলোতে দেখা যায় জানান ড. হাসান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২০
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।