ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

বিয়ের পর পাঁচ তারকা দম্পতির প্রথম ঈদ

তৃণা শর্মা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৬
বিয়ের পর পাঁচ তারকা দম্পতির প্রথম ঈদ

ঈদ উৎসবকে ঘিরে সবার মধ্যে থাকে বিশেষ পরিকল্পনা। পরিবার, স্বজন ও প্রিয়জনকে নিয়ে ঈদ উদযাপনের মতো আনন্দ আর কীসেই বা হয়! নববিবাহিত দম্পতিদের বেলায় বিয়ের পর প্রথম ঈদটা একটু বিশেষ থাকে।

পাঁচ তারকা দম্পতি জানিয়েছেন বিয়ের পর তাদের প্রথম ঈদের স্মৃতি, ভালোলাগা মুহূর্তসহ উপহারের কথা।
 
ওমর সানি-মৌসুমী
১৯৯৬ সালে সবার অজান্তে বিয়ে করেন ওমর সানি-মৌসুমী। এ কারণে বিয়ের প্রথম বছরের ঈদও দু'জনকে কাটাতে হয়েছে চুপিসারে। কেমন ছিলো তাদের ঈদের পরিকল্পনা, উপহার আদান-প্রদান? সেসব দিনের কথা জানিয়ে ওমর সানি বলেন, ‘মৌসুমী আর আমার বিয়ের ব্যাপারটা লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলো। এমনকি বাসা থেকেও জানতো না। তাই একরকম গোপনেই পালন করা হয়েছে। আমি গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। সেই সময় গুলশান ক্লাবের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে বুফেতে খাবার পাওয়া যেতো। আমি, মৌসুমী আর প্রয়াত সাংবাদিক মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন সেখানে গিয়ে রাতে খেয়েছি। আড্ডা দিয়েছি। সবশেষে তিনজন মিলে আইসক্রিম খেতে খেতে বাসায় ফিরেছি। ’ 
দুই পরিবার ওমর সানি-মৌসুমীর বিয়ে মেনে নেওয়ার পর তাদের প্রথম ঈদটা স্মরণীয় হয়ে আছে। ওমর সানি বললেন, ‘ওইবার পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটার পাশাপাশি যারা আমাদের বিয়ের সময় সমর্থন দিয়েছেন তাদেরকেও উপহার দিয়েছিলাম। মৌসুমী সবার জন্য অনেক কিছু রান্না করেছিলো। ওইবার আসলে পরিবার, বন্ধু সবাইকে নিয়ে ঈদের আনন্দটাই ছিলো অন্যরকম। ’
 
রিয়াজ-তিনা
বিয়ের প্রথম বছরের ঈদের স্মৃতি জানিয়ে চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, ‘আমাদের বিয়ে হয়েছে নয় বছর। এই নয় বছরে আমরা ঊনিশটি ঈদ একসঙ্গে কাটিয়েছি। তবে বিবাহিত জীবনের প্রথম ঈদ তো অন্যরকম অনুভূতি। ’
 
রিয়াজ মনে করেন তিনা এখনও ছোট! তাই প্রথম বছর থেকেই তিনা নিজের ইচ্ছেমতো ঈদে সবকিছু তৈরি করেন। রিয়াজের কথা, ‘প্রথম বছর আমি আর তিনা মিলে দুই পরিবারের জন্য অনেক কেনাকাটা করেছিলাম। আমাদের বিয়ের তিন দিন পরেই ছিলো ঈদ। সেই প্রথমবার তিনা আমার পরিবারের জন্য পোলাও আর কোরমা রান্না করলো। ’
যোগ করে রিয়াজ বললেন, ‘প্রতি ঈদে তিনা আমার জন্য ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করে। প্রথমবার আমার জন্য পাঁচটি পাঞ্জাবি কিনে এনেছিলো ও। আমার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখি শাশুড়ি আমার জন্য অনেক পদের রান্না করেছেন। বিয়ের আগে ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে পরিবারকে তেমন একটা সময় দেওয়া হতো না। বিয়ের পর থেকে এখন পরিবারকে সময় দিতেই বেশি ভালো লাগে। ’
 
তাহসান-মিথিলা
বিয়ের প্রথম ঈদে কী কী হলো, অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো এসব নিয়ে শুরুতে সংগীতশিল্পী-অভিনেতা তাহসান বললেন, ‘আট বছর হলো আমাদের বিয়ের। মিথিলার সঙ্গে সতেরোটা ঈদ কাটালাম একসঙ্গে। প্রথমবারের মতো প্রতি ঈদেই মজার মজার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। ’ তাদের বিয়ের কিছুদিন পরই ঈদ ছিলো। তাই বউ, শ্বশুরবাড়ি সবকিছু নিয়ে একটু বেশিই উত্তেজনা কাজ করেছিলো তার মধ্যে।
‘মিথিলা আর আমি পরিবারের সবার জন্য উপহার কিনেছিলাম। সবাইকে ঘিরে অন্যরকম একটা আনন্দ ছিলো। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমাদের সময়টা তোলা ছিলো ঘরের অতিথিদের জন্য। বিকেলের দিকে দু’জন মিলে ঘুরতে বের হয়েছিলাম। ওইবার ঈদে দুই পরিবারের সবাই মিলে বাইরে রাতের খাবার খেয়েছি’- বললেন তাহসান।
 
বর্তমানে তাহসান-মিথিলা দম্পতির ঈদগুলোতে নতুনত্ব এসেছে। পুরো সময়টাতেই তারা মেতে থাকেন একমাত্র কন্যাসন্তান আইরাকে নিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই অতিথিরাও আইরাকে নিয়েই মাতেন। এটাকে নতুন আরেকটি আনন্দ হিসেবেই দেখছেন তাহসান-মিথিলা দম্পতি।
 
হিল্লোল-নওশীন
বিয়ের প্রথম ঈদের আগে সারা রমজান মাস হিল্লোল ও নওশীন অনেক কাজ করেছেন। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেও সময় কেটেছে। নওশীন ঘরে পাঁচ-ছয় পদের মিষ্টি বানিয়েছিলেন। ঘুরতেও বেরিয়েছিলেন।   
‘বিবাহিত জীবনের চার বছরে নয়টি ঈদ একসঙ্গে কাটিয়েছি। একসঙ্গে কাটানো সব ঈদই মনে রাখার মতো’- সহধর্মিণী নওশীনকে নিয়ে বলছিলেন অভিনেতা হিল্লোল। বিবাহিত জীবনের প্রথম ঈদের কথা জানাতে গিয়ে তিনি হেসে বললেন, ‘অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও আমাকে চমক দেওয়ার জন্য নওশীন যার কাছে কামিজ ডিজাইন করে তার কাছে আমার জন্য পাঞ্জাবি বানাতে দিয়েছিলো। আমিও নওশীনকে চমকে দেওয়ার জন্য ওই ডিজাইনারের কাছে ওর জন্য কামিজ বানাতে দিয়েছিলাম। মজার ব্যাপার হলো, জামা আর পাঞ্জাবি আনার জন্য দু’জন পৃথকভাবে গেলেও দোকানে দেখা হয়ে গিয়েছিলো আমাদের। ফলে চমকটা আর চমক থাকেনি!’
 
নাঈম-নাদিয়া
‘গত রোজার ঈদ নিয়ে আমরা খুব উৎসুক ছিলাম। কারণ বিয়ের পর ওটাই ছিলো আমাদের প্রথম ঈদ’- বললেন অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী নাদিয়া। যোগ করলেন তিনি, ‘সারাবছরই জামা কাপড় কেনা হয় অনেক। এখন আর ঈদকে কেন্দ্র করে নতুন জামা-কাপড় পরতে হবে তেমন একটা তাড়াহুড়া কাজ করে না। ’
 
ঈদের পরিকল্পনা, নতুন সংসার নিয়ে কথা বলেছেন তার স্বামী অভিনেতা এফএস নাঈমও। বিয়ের আগে তাদের প্রতি ঈদ চলে আসতো শুটিং করে করে। কিন্তু গত রোজার ঈদের ব্যাপার ছিলো ভিন্ন। তাই শুটিংয়ের ফাঁকে রোজার মধ্যে দু’জন মিলে পরিবার ও স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করেছেন। দাম্পত্য জীবনের প্রথম ঈদ হওয়ায় পরিবারকে বিশেষ কিছু উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা ছিলো তাদের।
নাদিয়ার বাবা-মা থাকেন দেশের বাইরে। তাই বিয়ের প্রথম বছর ঈদে তাদেরকে মিস করেছেন নাদিয়া। তবে নাঈম-নাদিয়া উভয়ের শ্বশুর-শাশুড়ির পক্ষ থেকেও বিশেষ উপহার ছিলো তাদের জন্য। নাদিয়া তার ননদের জন্যও তৈরি করেন বিশেষ পরিকল্পনা।
 
নাদিয়ার কাছে নাঈমের চাওয়া ছিলো একটাই- ঈদে সবার জন্য কিছু হলেও রান্না করতে হবে তাকে। নাঈম বললেন, “বিয়ের পর প্রথমবার ‘ঈদে আমার একটা বউ’ ভেবেই অনেক আনন্দ লেগেছে!”
 
বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৬
টিএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।