ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

চলে গেলেন সংগীতশিল্পী ডেভিড বোয়ি

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
চলে গেলেন সংগীতশিল্পী ডেভিড বোয়ি ডেভিড বোয়ি (জন্ম: ৮ জানুয়ারি ১৯৪৭, মৃত্যু: ১০ জানুয়ারি ২০১৬)

ক্যান্সারের কাছে হেরে গেলেন কিংবদন্তি রক সংগীতশিল্পী ডেভিড বোয়ি। ৬৯ বছর বয়সে নিভে গেলো তার জীবনপ্রদীপ।

রোববার (১০ জানুয়ারি) বোয়ির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে বলা হয়, দেড় বছর ক্যান্সারের সঙ্গে সাহসিকতা দেখিয়ে লড়াই করে মারা গেলেন তিনি। দুই সন্তান ডানকান জোন্স ও আলেক্সান্ড্রিয়া লেক্সি জাহরা জোন্স, স্ত্রী সোমালি সুপারমডেল আইমান এবং বিশ্বজুড়ে অগণিত ভক্ত রেখে গেছেন তিনি।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জানান, বোয়ির গান শুনে বেড়ে উঠেছেন তিনি। এই মৃত্যুকে বিশ্বসংগীতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।  বোয়ির জন্মস্থানে মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল দিয়ে শোক জ্ঞাপন করছেন ভক্ত ও সংগীতানুরাগীরা। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মার্কিন পপসম্রাজ্ঞী ম্যাডোনা, র‌্যাপার কানইয়ে ওয়েস্ট, রোলিং স্টোনস ব্যান্ডের মতো বিশ্বসংগীতের মহারথীরা। ম্যাডোনা টুইটারে লিখেছেন, ‘প্রতিভাধর, অতুলনীয়, মেধাবী, গেম চেঞ্জার ছিলেন। তিনি অমর হয়ে থাকবেন চিরকাল!’

পুরো নাম ডেভিড রবার্ট জোন্স। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুই বছর পর ১৯৪৭ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ লন্ডনের ব্রিক্সটন এলাকায় জন্মেছিলেন তিনি। ১৩ বছর বয়সে প্রথম স্যাক্সোফোন ধরেছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত 'স্পেস ওডিটি' গানের সুবাদে ইউরোপ জুড়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। ইউকে সিঙ্গেলস চার্টের শীর্ষ পাঁচে স্থান করে নেয় এটি।

স্ট্যানলি কুবরিকের ‘২০০১: অ্যা স্পেস ওডিসি’ ছবিটি দেখে গানটি লেখার অনুপ্রেরণা পান বোয়ি। যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধকালীন একাকীত্বের কথা ফুটে উঠেছে এতে। চাঁদে অ্যাপোলোর অবতরণও কাকতালীয়ভাবে মিলে গিয়েছিলো এ গানের সঙ্গে।  তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি বোয়িকে। এর তিন বছর পর আরেক বিখ্যাত গান 'জিগি স্টারডাস্ট' তাকে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এনে দেয়।

বোয়িকে বলা হয় গ্ল্যাম রকের স্রষ্টা। চার দশকেরও বেশি সময়ের সংগীত জীবনে আর্ট রক, হার্ডরক, সৌল, ড্যান্স পপ, পাঙ্ক ও ইলেক্ট্রনিক ধাঁচের গান-বাজনায় অনেক অবদান রেখেছেন তিনি।  তার প্রজন্মের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগীতশিল্পীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। স্বতন্ত্র গান-বাজনার মাধ্যমে তিনি পেরিয়ে গেছেন সংগীতের সীমান্ত।

বোয়ির তারকাখ্যাতি পাওয়ার পেছনে মার্কিন সংগীত প্রযোজক টনি ভিসকন্টির অবদান অনেক। তিনি বলেন, ‘তিনি সবসময় তা-ই করতেন যা করতে চাইতেন। সবই নিজের মতো সবচেয়ে ভালো করতে চাইতেন। তিনি অসাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি সবসময় আমাদের সঙ্গে থাকবেন। এখন কাঁদার সময়। ’

১৯৭০ সালে অ্যাঞ্জি বার্নেটকে প্রথম বিয়ে করেন বোয়ি। সত্তর দশকের মাঝামাঝি সৌল ও ফাঙ্ক সাউন্ড নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে তার প্রথম হিট গান ‘ফেম’। আমেরিকা থেকে তিনি সুইজারল্যান্ডে পাড়ি জমান। ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত তার ‘লো’ ও ‘হিরোস’-এর মতো বাণিজ্যিকভাবে সফল গানের জন্ম সেখানেই। ১৯৮৩ সালে ইএমআই’র সঙ্গে উচ্চ অংকের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। এরপর বের হয় তার তুমুল বিখ্যাত গান ‘লেটস ড্যান্স’।

শুধু গান নয়, অভিনয়ও করেছেন বোয়ি। ব্রডওয়েতে ‘দ্য এলিফ্যান্ট ম্যান’ ছাড়া ‘মেরি ক্রিসমাস, মিস্টার লরেন্স’, ‘দ্য স্নোম্যান’, ‘অ্যাবসলিউট বিগিনার্স’ ও মার্টিন স্করসিসের ‘দ্য লাস্ট টেম্পটেশন অব ক্রাইস্ট’ ছবিতেও দেখা গেছে তাকে।

গত ৮ জানুয়ারি ছিলো তার ৬৯তম জন্মদিন। ওইদিন প্রকাশিত হয় বোয়ির ২৮তম অ্যালবাম ‘ব্ল্যাকস্টার’। এর একটি গানের ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালের বিছানায় শয্যাশায়ী তিনি। তার চোখ ব্যান্ডেজ করা। এতে তিনি গেয়েছেন, ‘এখানে দেখো, আমি স্বর্গে আছি। ’ ভক্তদেরও এমন প্রত্যাশা, তিনি শান্তিতে থাকুন।

বাংলাদেশ সময় : ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
বিএসকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।