ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

জিয়ার আত্মহত্যা মামলার চার্জশিট ফাঁস

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
জিয়ার আত্মহত্যা মামলার চার্জশিট ফাঁস জিয়া খান

বলিউড অভিনেত্রী জিয়া খানের আত্মহত্যা মামলায় গত ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। আগেই এই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া ও তথ্য গোপনের অভিযোগ ছিলো অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে।

এবার সিবিআই তদন্তে উঠে এলো আত্মহত্যার কারণও। জানা গেলো বিস্ফোরক তথ্য। এই গোপন তথ্য মিডিয়ার সামনে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সিবিআইয়ের তীব্র সমালোচনা করেছে আদালত।

জানা গেছে, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দশ মাস শান্তিভবনে একই ফ্ল্যাটে থাকতেন সুরজ ও জিয়া। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। সুরজের জামা ইস্ত্রি করে দিতেন বলিউডের এই অভিনেত্রী। এমনকি ডাইনিং টেবিল আর শোবার ঘরও পরিষ্কার করে রাখতেন সুরজের জন্য।

২০১৩ সালের ৩ জুন মুম্বাইয়ের জুহুর অ্যাপার্টমেন্টে আত্মহত্যার দু’দিন আগে জিয়া ছিলেন সুরজের সঙ্গে। জিয়া চার মাসের সন্তানসম্ভবা একথা জানতে পেরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তারা। গর্ভপাতের জন্য ওষুধ খেয়ে রক্তপাতজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন জিয়া। সুরজের ভয় ছিলো এই সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে শুরু হওয়ার আগেই তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। বরং বাড়িতে নিজেই মৃত ভ্রূণটি বের করে কমোডে ফেলে দেন তিনি। এই ঘটনার পরেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন জিয়া। তিন পাতার সুইসাইড নোটে জিয়া লিখেছিলেন, এরপর থেকেই সুরজ তাকে এড়িয়ে চলতেন। সব মিলিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে জিয়া শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলেই ধারণা তদন্ত কর্মকর্তাদের।

জিয়ার মা রাবেয়ার দাবি, সুরজের সঙ্গে পানসে সম্পর্কের কারণে ২০০৮ সাল থেকে মনোবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হচ্ছিলেন জিয়া। শেষদিকে অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সুরজ তাকে মিথ্যে বলায় রেগে গিয়ে নিজের ব্ল্যাকবেরি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রেমিকের কনট্যাক্ট নাম্বার মুছে ফেলেন জিয়া। মৃত্যুর দিন দুটি ছবি ও একটি আইটেম গানে নাচার সুযোগ পাওয়ায় জিয়াকে ব্যাঙ্গ করে এসএমএস করেন সুরজ।

জিয়া মামলার চার্জশিটের এসব তথ্য ফাঁস হওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছে সিবিআই। জিয়া খানের মৃত্যু তদন্তের চার্জশিট ফাঁস হয়ে যাওয়ায় আদালতের সমালোচনার মুখে পড়তে হলো এই সংস্থাকে। চার্জশিটের রিপোর্ট অভিযুক্ত সুরজ পাঞ্চোলির হাতে পৌঁছনোর আগে কীভাবে গণমাধ্যমে চলে গেলো, এই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে একহাত নিয়েছেন বিচারক। সিবিআই বিশেষ আদালতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৮ জানুয়ারি।

জিয়ার মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, হত্যা। শুরু থেকে এই দাবি করে আসছেন জিয়ার মা রাবিয়া খান। তার লাগাতার চেষ্টাতেই এই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআই’র হাতে। তাই নিজের সন্তানের ওপর চালানো নিষ্ঠুরতার অনেক তথ্য সিবিআইকে দিয়েছেন তিনি। সুরজকে উদ্দেশ্য করে রাবিয়া বলেন, ‘ঠিক কতোটা নিষ্ঠুর হলে কেউ এ ধরণের ঘৃণ্য কাজ করতে পারে। যে এ ধরণের কাজ করে, তার পক্ষে খুন করা কোনো ব্যাপার নয়। ’

এটি এই মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট। গত বছর মুম্বাই পুলিশ তদন্তের পর ৪৪৭ পাতার চার্জশিট তৈরি করেছিলো। তবে তারা পুরো বিষয়টিই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো বলে অভিযোগ জিয়ার মায়ের। তিনি মনে করেন, সিবিআই তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে তার মেয়েকে ঠিক কতোটা নৃশংসতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিলো। তবে আরও বড় সত্য উন্মোচন হওয়া নাকি এখনও বাকি। সুরজের মা অভিনেত্রী জরিনা ওয়াহাব জানান, পুরো চার্জশিট প্রকাশের পর তারা পদক্ষেপ নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
বিএসকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।