ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয়ে ব্যস্ত প্রার্থীরা

আমিনুল ইসলাম জুয়েল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয়ে ব্যস্ত প্রার্থীরা

রংপুর: রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টায়। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত প্রার্থীরা।

ভোটের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা। দিচ্ছেন উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি, চাচ্ছেন ভোট।

সাধারণ মানুষ বলছে, মুখে প্রতিশ্রুতি নয়, এলাকার উন্নয়ন, পরিচ্ছন্ন এবং মাদকমুক্ত সমাজ গড়ায় যে প্রার্থী ভূমিকা রাখতে পারবেন তাকেই ভোট দেবে। নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু হবে- এমনটাই প্রত্যাশা ভোটারদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পোস্টার-লিফলেটে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকা। প্রার্থীদের পক্ষে চলছে মাইকিং। গণসংযোগ-পথসভাসহ বাড়ি বাড়ি ভোট চাচ্ছেন প্রার্থী ও কর্মীরা।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্নের লক্ষ্যে প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে ৩৩টি ওয়ার্ডে নিয়োগ করা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট। মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। থাকছে র‌্যাব ও বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্স।

প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংরক্ষিত ১১টি ওয়ার্ডের জন্য ১৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। তারা নিজ নিজ ওয়ার্ডে আচরণবিধি ভঙ্গ হলে সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা এর চেয়ে বেশি অপরাধের জন্য মামলা নেওয়া ও শাস্তি দেওয়ার কাজ করবেন।

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন। প্রার্থীরা হলেন— জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন।

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, রাত ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবেভাবে শেষ হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা। প্রতিটি কেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এক প্লাটুন (১১ প্লাটুন) করে বিজিবি থাকবে। দুটি কেন্দ্রের জন্য র‌্যাবের একটি টিম থাকবে। কেন্দ্রে পুলিশ অস্ত্রসহ এবং অস্ত্র ছাড়া থাকবে। বিজিবি ও র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে থাকবে।  

২০১২ সালের ২৮ জুন ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন গঠনের পর ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেবার এক লাখ ৬ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পেয়েছিলেন ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট এবং বিএনপি নেতা কাওসার জামান বাবলা পেয়েছিলেন ২১ হাজার ২৩৫ ভোট।

২০১২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন তিন লাখ ৫৭ হাজার ৭৪২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭৯ হাজার ১২৮ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৭৮ হাজার ৬১৪ জন।

২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর এই সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। সেই মোতাবেক এ সিটির বর্তমান নির্বাচিতদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি।

নির্বাচনে দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার ২২৯টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে গেছে, যা চলবে আগামী ২৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।