ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

রাজশাহীতে দুটিতে আ.লীগ, একটিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর জয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২১
রাজশাহীতে দুটিতে আ.লীগ, একটিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর জয়

রাজশাহী: দেশে পৌরসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজশাহীর তিনটি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে দুটি পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।

আর একটিতে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী।

রাজশাহীর যে তিনটি পৌরসভায় নির্বাচন হয়েছে সেগুলো হলো- বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ, গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট ও বাঘা উপজেলার আড়ানী। এরমধ্যে ভবানীগঞ্জে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে ব্যালট পেপারে। অন্য দুটিতে নির্বাচন হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।

বাঘার আড়ানী পৌরসভায় নির্বাচিত হয়েছেন মুক্তার আলী। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তিনি আড়ানী পৌরসভার বর্তমান মেয়রও। এবারও নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন।

নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় তাকে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।

গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পৌরসভায় মেয়র হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম আতাউর রহমান খান। বাগমারার ভবানীগঞ্জে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী আবদুল মালেক। তিনি পৌরসভার বর্তমান মেয়র। আর আতাউর রহমান খান গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আড়ানী পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহিন রেজা সন্ধ্যায় ফল ঘোষণা করেন।  

তিনি জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুক্তার আলী নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে পাঁচ হাজার ৯০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহিদুজ্জামান শাহিদ নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন চার হাজার ৩০০ ভোট।

আর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তোজাম্মেল হক ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন এক হাজার ২৭৬ ভোট। এছাড়া রুবন হোসেন বাপ্পী নামের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬৯ ভোট। অবশ্য পৌর ছাত্রলীগের নেতা বাপ্পী আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। আড়ানীতে মোট ভোটার ছিলেন ১৩ হাজার ৯৮৪ জন। নয়টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়।

এদিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, কাঁকনহাটে বিজয়ী নৌকার প্রার্থী এ কে এম আতাউর রহমান খান পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন পাঁচ হাজার ১২৮ ভোট।

অপর প্রার্থী জাতীয় পার্টি মনোনীত মোল্লা রুবন হোসেন লাঙল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৮৪ ভোট। কাঁকনহাটে মোট ভোটার ছিলেন ১৩ হাজার ২৩৫ জন। ভোটকেন্দ্র ছিল ১১টি।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ভবানীগঞ্জে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল মালেক পেয়েছেন সাত হাজার ৩১৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মামুনুর রশীদ মামুন জগ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন দুই হাজার ৭৫৭ ভোট। স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী কামাল হোসেন নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭ ভোট। এখানে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক পেয়েছেন এক হাজার ৮২ ভোট।

ভবানীগঞ্জে মোট ভোটার ছিলেন ১৪ হাজার ৪০৫ জন। ভোটকেন্দ্র ছিল নয়টি। এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ করা হয়।

নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোটকেন্দ্রে সব সময়ই ছিল ভোটারদের দীর্ঘ সারি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভবানীগঞ্জের বিএনপি প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

তার অভিযোগ, শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিনি নিজের ভোট দিতে গেলে নৌকার সমর্থকরা তাকে লাঞ্ছিত করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি নিজের ভোট দিতে পারেননি। এছাড়া কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে।

এর বাইরে ভোটগ্রহণকালে কোথাও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অন্য দুটি পৌরসভায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ভোট বর্জন করলেও ভবানীগঞ্জেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। কাঁকনহাটেও ভোটারদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২১
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।