ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নতুন ভোটাররা অচিরেই স্মার্টকার্ড পাচ্ছেন না

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
নতুন ভোটাররা অচিরেই স্মার্টকার্ড পাচ্ছেন না

ঢাকা: দেশজুড়ে চলছে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ। প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের পর বর্তমানে সম্পন্ন করা হচ্ছে নিবন্ধন প্রক্রিয়া। আর এ কাজ সম্পন্ন হলেই দেওয়া হবে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন ভোটারদের এখন স্মার্টকার্ড দেওয়া হবে না। তারা কাগজে লেমিনেটিং করা এনআইডি পাবেন।

স্মার্টকার্ড না দেওয়ার কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১১ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য যে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল বা যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল, সেখানে তখনকার ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড দেওয়ার কথা ছিল।

ওই সময়ের ৯ কোটি ভোটারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন চার কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড ছাপিয়ে বিতরণ কার্যক্রম চলমান রেখেছে। আরও ৩ কোটি ৭০ লাখ ফাঁকা স্মার্টকার্ডে নাগরিকের তথ্য ইনপুট দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে ইসি। অবশিষ্ট ১ কোটি ৩০ লাখ ফাঁকা স্মার্টকার্ড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এখনো হস্তান্তর করেনি।

সেই ৯ কোটি ভোটারের স্মার্টকার্ড সরবরাহের বিষয়টিই এখনো মীমাসিংত নয়। এছাড়া নতুন ভোটারের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য কোনো অর্থও নেই ইসির কাছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সরকারের তহবিল থেকে নতুন একটি প্রকল্প নিচ্ছে। যেখান থেকেই নতুনদের কার্ড সরবরাহ করা হবে।
 
বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি ৪৮ লাখ। অর্থাৎ ওই নয় কোটির বাইরে দেড় কোটি ভোটার ইতোমধ্যে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তারাও স্মার্টকার্ড পাননি। মাঝে তাদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তা থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন।
 
বর্তমানে যারা ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন তাদেরও পরবর্তীতে ই কার্ড সরবরাহ করা হবে।
 
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ সংক্রান্ত কমিটির সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে- হালনাগাদসহ নিয়মিত অফিসে নিবন্ধিত সব নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র বায়োমেট্রিক (আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি নেওয়া) সম্পন্ন হলেই জেলা অফিস থেকেই মুদ্রণ করতে হবে। এরপর তা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা কার্যালয় থেকে বিতরণ করা হবে।
 
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে জেলা পর্যায়ে নতুন ভোটারদের কার্ড ছাপানোর জন্য প্রিন্টারসহ অন্যান্য উপকরণ পাঠানো হয়েছে।
 
নতুন ভোটারদের স্মার্টকার্ড সরবরাহের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, দেশের সব নাগরিকদের স্মার্টকার্ড সরবরাহের জন্য আমরা সরকারের তহবিল থেকে নতুন একটি প্রকল্প নিচ্ছি। সেখান থেকেই ভবিষ্যতে স্মার্টকার্ড সরবরাহের বিষয়টি চলমান রাখা হবে।
 
এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেন। পরবর্তীতে সে তালিকার ভিত্তিতেই সে সময়কার নয় কোটি ভোটারকে লেমিনেটিং করা কাগজে এনআইডি সরবরাহ করা হয়।
 
শামসুল হুদা কমিশন ২০১১ সালে নাগরিকদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় একটি প্রকল্প হাতে নেন। আইডিইএ নামের সে প্রকল্পের অধীনেই বর্তমানে স্মার্টকার্ড দেওয়া হচ্ছে।
 
এ বছরই প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর সরকারি তহবিল থেকে নতুন প্রকল্প নিয়ে সব নাগরিকের স্মার্টকার্ড সরবরাহের কার্যক্রম ধারাবাহিক রাখবে ইসি।
 
এবারের হালনাগাদ কার্যক্রমে মোট চার বছরের তথ্য নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ হবে, তারা তালিকাভুক্ত হবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
ইইউডি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।