ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

রাজশাহীতে এবার সরব সংরক্ষিত আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা 

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৯
রাজশাহীতে এবার সরব সংরক্ষিত আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা 

রাজশাহী: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এতে নির্বাচিতদের (এমপি) বেশিরভাগেরই শপথ হয়ে গেছে। নতুন মন্ত্রিসভাও শপথ নিয়ে ফেলেছে সোমবার (৭ জানুয়ারি)। এরমধ্যে শুরু হয়েছে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি। সরকার গঠনের ডামাডোলে সরব হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।  

আইন অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আগামী ১ এপ্রিলের মধ্যে এ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

তাই এবার সংসদের সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এদিকে, সংরক্ষিত আসনে রাজশাহী থেকে কে হচ্ছেন নারী সংসদ সদস্য তা নিয়ে এখনই কুঁড়ি থেকে শাখা-প্রশাখায় মেলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পরপরই সম্ভাব্য নারী সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নজর এখন সেদিকেই। বিষয়টি নিয়ে দেন-দরবারের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় অস্থান করছেন অনেকে।
   
রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়নের জন্য এবার চারজন দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা হলেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী ও একই কমিটির সহ-সভাপাতি নিঘাত পারভীন, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেছা তালুকদার এবং বর্তমান নারী সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহান।   

সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে এবার নতুন মুখ হচ্ছেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী। তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সহধর্মিনী। স্বামীর সঙ্গে সমানতালে দলের হাল ধরায় এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে সংগঠনে নারী অবস্থান নিশ্চিতকরণ ও নারীদের সংগঠিত করার পেছনে তার অবদান রয়েছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরাও।

গত সিটি ও সংসদ নির্বাচনে নারীদের নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শাহীন আক্তার রেনী। এছাড়া দলীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি সব সময় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রাখার কারণে ইতোমধ্যে বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন। এজন্য তাকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করতে ইতোমধ্যেই জোরালো দাবি উঠেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের তরফ থেকে।

তারপরই রয়েছে জিনাতুন নেছা তালুকদারের নাম। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জিনাতুন নেছা তালুকদার। পরে তিনি সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হন।  

এরপর ২০০৮ সালে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য হন জিনাতুন নেছা। তবে ২০১৪ সালে তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় বাদ পড়েনে তিনি। রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সেবার নতুন মুখ হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বেগম আখতার জাহান। এবারও তাই দলীয় মনোনয়ন চাইবেন রাজশাহীর এই নারী নেত্রী।

অপর সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নিঘাত পারভীন। আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম হারানের সহধর্মিনী তিনি। সক্রিয় রাজনীতির পাশাপাশি তিনিও বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত।  

জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, মনোনয়ন অনেকেই চাইবেন। তবে এর মধ্যে যিনি সৎ, যোগ্য ও সাংগঠনিক, তার জন্য হাইকমান্ডের কাছে সুপারিশ করা হবে।  

এক্ষেত্রে শাহীন আক্তার রেনীকেই এবার তারা এগিয়ে রাখছেন বলে জানান বাদশা।

সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে ৫০টি। একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসন পেয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি ২২ আসন নিয়ে বিরোধী দলে থাকছে। এতে সংসদে ১৪ দলীয় জোটের সংসদ সদস্য দাঁড়িয়েছে ২৬৬টি। এক্ষেত্রে এই জোট পাবে ৪৪টি সংরক্ষিত নারী আসন।  

এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৭ আসনে জয়লাভ করায় দলটি পাবে ৪২টি আসন এবং ১৪ দলের বাকি শরিকরা পাবে ২টি। আর জাতীয় পার্টি পাবে ৩টি সংরক্ষিত আসন। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত বিজয়ী প্রার্থী অধিবেশন শুরুর নব্বই দিন পর্যন্ত শপথ নেওয়া সুযোগ পাবেন। তারপরও শপথ না নিলে সে আসনগুলোতে পুনরায় নির্বাচন হবে।  

এক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের জন্য দুইটি আসন থাকবে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোনো জোটে যোগ না দিলে তাদের জন্য থাকবে একটি আসন।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
এসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।