ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ফরিদপুর-৩: স্থানীয় বিরোধে নৌকার ক্যাম্পে তৃতীয় পক্ষের আগুন

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
ফরিদপুর-৩: স্থানীয় বিরোধে নৌকার ক্যাম্পে তৃতীয় পক্ষের আগুন

ফরিদপুর: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচেনে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের দয়ারামপুরে নৌকার ক্যাম্প পোড়ানোকে কেন্দ্র করে ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে বলে সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

যদিও ঘটনার পর এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদের (এ কে আজাদ) সমর্থকরা অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।  

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা সদরের মাচ্চর ইউনিয়নের দয়ারামপুরে নৌকার সেই ক্যাম্পটিতে গিয়ে পাওয়া যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সোহরাব আলী খান ও কেরাম খানসহ বেশ কয়েকজনকে। বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব আলী ওই ক্যাম্পের আহ্বায়ক।  

বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব আলী জানান, ২৮ ডিসেম্বর রাতের কোনো এক সময় নৌকার ক্যাম্পটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। কে বা কারা এ অগ্নিসংযোগ করেছেন তা আমরা কেউ দেখিনি। স্থানীয় দয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে একটি মহলের সঙ্গে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলীর পরিবারের বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে।  

তিনি বলেন, এটা কোনোভাবেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের কাজ না। বরং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নৌকার প্রার্থীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতেই তৃতীয় পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।  

নৌকার ওই ক্যাম্পে উপস্থিত কেরাম খান জানান, তার ভাই প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলীর নামে সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন দয়ারামপুর বাজারের নামকরণ করে। এতে ক্ষুব্ধ হন বিএনপি নেতা হায়দার আলী ও শান মল্লিকের ছেলে শফিকুল।  

তিনি বলেন, আমার ধারণা ঈগল সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটায়নি। ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে বিএনপি নেতা হায়দার আলী ও শান মল্লিকের ছেলে শফিকুল। ২৮ ডিসেম্বর রাতে তার ভাইয়ের নামে লাগানো নামফলকটিও উপড়ে ফেলা হয় এবং ফলকটি নৌকার ক্যাম্পে নিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঈগল এবং নৌকার সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনী বিরোধ সৃষ্টি করতে তৃতীয় পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তার ধারণা।

তবে বিএনপি নেতা হায়দার আলী শেখ বলেন, এর সঙ্গে আমি বা বিএনপির কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তদন্ত করতে পারেন। আমি ওইদিন (২৮ ডিসেম্বর) ফরিদপুর শহরে ছিলাম। কোনোভাবেই আমি এবং বিএনপির লোকজন এই অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত নই।  

ঘটনার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী খানের ছেলে বকুল খান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। বকুল খান জানান, এ ঘটনা ঈগল সমর্থকরা ঘটায়নি। স্থানীয় বিরোধের জের ধরে নৌকার ক্যাম্পে এ অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে ধারণা করছি।  

এ ব্যাপারে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, কে বা কারা অগ্নিসংযোগ করেছেন তার কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আবার কী কারণে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তা নিশ্চিত নই। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।  

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নৌকার প্রার্থী শামীম হকের মোবাইলফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এছাড়া তার নির্বাচনী প্রধান সমন্বায়ক ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোসের সঙ্গেও কয়েক দফা কল দেওয়া হয়, তিনিও কল ধরেননি। তবে তিনি ঘটনার দিন গণমাধ্যমকে ঈগল সমর্থকদের বিরুদ্ধে নৌকার ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলেছিলেন।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনী ব্যস্ততায় পক্ষ-বিপক্ষে অনেকগুলো ঘটনাই ঘটছে। তাই এই মুহূর্তে বিষয়টি মনে পড়ছে না।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল আহসান তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্তে নির্বাচনী ইনকোয়ারি কমিটি আছে, তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা এখনও রিপোর্ট জমা দেননি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।