ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

১০ বছরে তাজুল ইসলামের সম্পদ বেড়েছে সাতগুণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
১০ বছরে তাজুল ইসলামের সম্পদ বেড়েছে সাতগুণ

কুমিল্লা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৯ (লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গত ১০ বছরে তার স্থাবর সম্পদ বেড়েছে সাতগুণ।

১০ বছর আগে মন্ত্রীর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি টাকার কিছু বেশি। মন্ত্রী হওয়ার আগে ২০১৮ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে তা ১১৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। হলফনামায় স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের নামে কোনো সম্পত্তি থাকার কথা উল্লেখ করেননি মন্ত্রী। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মন্ত্রীর দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।  

মন্ত্রী বছরে আয় করেন চার কোটি ১৭ লাখ টাকা। ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও তার আয় ছিল চার কোটি টাকার কিছু বেশি।

২০২৩ সালে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে আয় কমেছে তাজুল ইসলামের। এই খাতে তিনি আয় করেছেন এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা, যা ২০১৮ সালে ছিল দুই কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ২০১৪ সালে ছিল দেড় কোটি টাকা।

মন্ত্রীর কৃষি খাত থেকে আয় বেড়েছে। এবার এই খাতে তার বার্ষিক আয় তিন লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে ছিল দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ বছর বাড়িভাড়া বাবদ আয় হয়েছে এক কোটি ৬৯ লাখ ৯৩৯ টাকা। ২০১৮ সালে ছিল মাত্র ২২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা এবং ২০১৪ সালে ছিল সাত লাখ ৪০ হাজার টাকা।

২০১৮ সালের হলফনামায় মন্ত্রী ৭ দশমিক ৬৭ একর কৃষিজমি থাকার কথা বলেছিলেন, যার মূল্য ছিল (অর্জনকালীন) ২০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এবার তিনি জানিয়েছেন, তার এক কোটি ৫১ লাখ টাকা মূল্যের কৃষিজমি আছে। তবে এবার তিনি জমির পরিমাণ উল্লেখ করেননি।

মন্ত্রীর দালান, বাড়ি, চা–বাগান, রাবার বাগান ও মৎস্য খামারের আর্থিক মূল্য ২০ কোটি ৪ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে যার পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং ২০১৪ সালে ছিল দুই কোটি ৬৭ লাখ। তিনি ২০১৮ সালে ৮ দশমিক ৬৭ একর অকৃষিজমি থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন। এবার তা নেই।

তাজুল ইসলাম এবার সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী দেখিয়েছেন ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে উল্লেখ করেছিলেন ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফিশিং ও পোলট্রি (মাছ ও মুরগি) খাতে আয় বেড়ে ৪৩ লাখ থেকে ৫১ লাখে দাঁড়িয়েছে। ২০১৪ সালে এ খাতে তার আয় ছিল না।

অস্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে তাজুল ইসলাম বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন বন্ডে, যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকা। পাঁচ বছর আগে যা ছিল ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগেও বড় লাফ দেখা গেছে। ২০১৮ সালে যেখানে ৬১ লাখ টাকার বিনিয়োগ ছিল, এখন তা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৭৩ লাখে। ২০১৪ সালে ছিল ৩৩ লাখ। তবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কমিয়ে পাঁচ বছরে ১৬ কোটি ৬৬ লাখ থেকে পাঁচ কোটি ২৩ লাখ কমেছে। মন্ত্রীর হাতে নগদ টাকাও কমেছে। ২০১৮ সালে যেখানে তার হাতে এক কোটি ৩১ লাখ টাকা ছিল, এখন তা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ৫২ হাজারে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমা টাকা আছে এক কোটি ২৩ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে ছিল তিন কোটি ৮৯ লাখ টাকা। তাজুল ইসলামের থাকা গাড়ির মোট মূল্য তিন কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ২০১৪ সালে তার এক কোটি ৮৯ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ ও একটি কার ছিল, যা তিনি ২০১৮ সালেও উল্লেখ করেছিলেন।
তাজুল ইসলাম কুমিল্লা-৯ (লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ) আসন থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী হন। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।