ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

‘রাজনৈতিক বিষয় ইসির কাছে সমাধানের প্রত্যাশা সমীচীন নয়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
‘রাজনৈতিক বিষয় ইসির কাছে সমাধানের প্রত্যাশা সমীচীন নয়’

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়া জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে সমাধানযোগ্য কোনো বিষয় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে প্রত্যাশা করাও সমীচীন নয়। সাংবিধানিকভাবে আমাদের দায়িত্ব যতটুকু তার শতভাগ আমরা পালন করে যাব।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের কাছে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরে নিজেদের কাজের ফিরিস্তিও তুলে ধরেন এই নির্বাচন কমিশনার।

আহসান হাবিব বলেন, ‘কত সময় পার হলো, প্রথম বছর গেল কিংবা শেষ বছর এলো—এটি আমার কাছে মুখ্য নয়। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছি; এটা করেই যাব। প্রতিটি কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গেই করব। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যত নির্বাচন করেছি সবগুলোই আমরা সততার সাথে আন্তরিকভাবে করেছি এবং প্রত্যাশিত সফলতা অর্জন করেছি। আমাদের কাজের মূল্যায়ন সময়ই বলবে। ’

তিনি বলেন, ‘আলাদা কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, প্রতিটি নির্বাচন যেভাবে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করেছি; একইভাবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনও করব ইনশাল্লাহ। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও ইতোমধ্যে বলেছেন, দেশে-বিদেশে সবার কাছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধপরিকর। ’

‘আমরা কঠোর বার্তা দিতে পেরেছি নির্বাচন ব্যবস্থাপনায়; গাইবান্ধা উপনির্বাচন অনিয়মের কারণে বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সিটি নির্বাচনগুলো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। ভোটারদের আস্থা ফিরছে। সামনেও নির্বাচন রয়েছে। সংসদ নির্বাচনেও আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে সুন্দর নির্বাচনের। ’

এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয় আসনের উপনির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না হওয়ায় ও উপনির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম থাকায় ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হয়েছে। এটা সব নির্বাচনের দৃষ্টান্ত নয়। প্রতিটি নির্বাচনে আমাদের কঠোর মনোভাব, স্বচ্ছতা ও সদিচ্ছার কোনো ঘাটতি ছিল না, আগামীতেও থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠুভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে আমরা কর্মপরিকল্পনা ধরে এগিয়ে যাচ্ছি। সব অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করেছি, তা অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যা করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে সমাধানযোগ্য কোনো বিষয় কমিশনের কাছে প্রত্যাশা করাও সমীচীন নয়। সাংবিধানিকভাবে আমাদের দায়িত্ব যতটুকু তার শতভাগ আমরা পালন করে যাবো।

এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমি বরারবই বলেছি, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক বিভেদ আর প্রশ্নের মোকাবিলা করতে হয়েছে। সব দলের প্রতি আহ্বান অব্যাহত থাকবে, ভোটে অংশ নিন। কমিশনের একার পক্ষে সব সম্ভব হবে না; সকলের সহযোগিতাও দরকার। আমাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে প্রমাণ দিয়েছি, আস্থা অর্জনে এগিয়ে গেছি। উদ্দেশ্য একটাই—অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের কোনো সময় নষ্ট হয়নি; বরং জনসচেতনতা বেড়েছে। ইভিএমে সবগুলো নির্বাচন করেছি আমরা। সারা দেশেই ইভিএম নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ ও সচেতনা তৈরি করতে পেরেছি। অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সবার প্রত্যাশা বিবেচনা করে বড় পরিসরে ইভিএমে ভোট হচ্ছে না। তবে বিদ্যমান সচল ও কার্যক্ষম ইভিএমের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। এ নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলে মনে করি। এমন পরিস্থিতিতে সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে এবং কমিশনকে সহায়তা করবে বলেই প্রত্যাশা আমাদের।

আহসান হাবিব আরও বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন গনতন্ত্রের মৌলিক বৈশিষ্ট্য এবং ভোট সকল নাগরিকের অধিকার। বর্তমান কমিশন এ লক্ষ্যেই কাজ করছে। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব।

বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এই কর্তব্য পালনে সর্বদা সচেষ্ট। দেশ ও জাতিকে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য কমিশন বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলসমূহকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক আহ্বান জানিয়ে আসছে। কারণ কমিশন বিশ্বাস করে, মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমই আসন্ন দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনকে অর্থবহভাবে গ্রহণযোগ্য করা সম্ভব। কমিশন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক আহ্বান জানাতে থাকবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, কাজ করলে কিছু না কিছু অনিচ্ছাকৃত ভুল বা আলোচনা/সমালোচনা হতেই পারে। তবে যেসব বিতর্কের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। দু’একটি ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি থেকে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এসবে ইসির কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।